ঢাকা, শুক্রবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

সাংবাদিক আফতাব হত্যার দায়ে ৫ জনের ফাঁসি

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৫৪৭ ঘণ্টা, মার্চ ২৮, ২০১৭
সাংবাদিক আফতাব হত্যার দায়ে ৫ জনের ফাঁসি

ঢাকা: একুশে পদকপ্রাপ্ত দৈনিক ইত্তেফাকের প্রবীণ ফটো সাংবাদিক আফতাব আহমদকে হত্যার দায়ে ৫ জনকে মৃত্যুদণ্ড ও ১ জনকে ৭ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হচ্ছেন- আফতাবের গাড়িচালক মো. হুমায়ুন কবির মোল্লা, মো. বেলাল হোসেন কিসলু, মো. রাজু মুন্সি, মো. রাসেল ও হাবিব হাওলাদার। অপর আসামি মো. সবুজ খানকে ৭ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও দশ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

আসামিদের মধ্যে রাজু ও রাসেল পলাতক। তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন ট্রাইব্যুনাল।

বাকিরা গ্রেফতার হয়ে কারাগারে রয়েছেন। তাদেরকে আদালতে হাজির করা হয়। রায়ের পর সাজা পরোয়ানা দিয়ে ফের কারাগারে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার (২৮ মার্চ) ঢাকার ৪ নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক আব্দুর রহমান সরদার আফতাব হত্যা মামলার এ রায় ঘোষণা করেন।

রায়ে নিজাম (পলাতক) নামে আরও একজনের বিরুদ্ধে অভিযোগের অপরাধ সুনির্দিষ্টভাবে প্রমাণিত হওয়ায় পুলিশকে নাম-ঠিকানা উদ্‌ঘাটন করে তার বিরুদ্ধে সম্পূরক অভিযোগপত্র দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল।

রায়ের পর্যবেক্ষণে ট্রাইব্যুনাল উল্লেখ করেন, ‘৭৯ বছর বয়স্ক সাংবাদিক আফতাব আহমদ দৈনিক ইত্তেফাকের প্রবীন ফটো সাংবাদিক ছিলেন। তিনি স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় ও পরবর্তীতে অসংখ্য দুর্লভ ছবি ধারণ করেন। ফটোগ্রাফিতে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতি স্বরুপ ২০০৬ সালে তিনি রাষ্ট্রীয় একুশে পদক পেয়ে বিরল সম্মানে ভূষিত হন। এ ধরনের একজন খ্যাতিমান প্রবীণ সাংবাদিককে ডাকাতির সময় নির্মম ও নিষ্ঠুরভাবে হত্যার বিষয়টি আদৌ মেনে নেওয়া যায় না। দেশে আইনের শাসন ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য এ ধরনের ডাকাতিসহ খুনের মামলায় আসামিদের উপযুক্ত শাস্তি হওয়া একান্ত আবশ্যক। এক্ষেত্রে তারা ট্রাইব্যুনাল থেকে আইনত বা ন্যায়ত কোনো সুযোগ, দয়া বা অনুকম্পা পেতে পারেন না’।

গত ২০ মার্চ উভয়পক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের (আর্গুমেন্ট) মধ্য দিয়ে মামলার বিচারিক কার্যক্রম শেষে ২৮ মার্চ রায়ের দিন ধার্য করেন ট্রাইব্যুনাল।

২০১৪ সালের ১৫ জুলাই মামলার ৬ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ (চার্জ) গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরু করেন ট্রাইব্যুনাল। আসামিদের মধ্যে হুমায়ুন, বিল্লাল ওরফে কিসলু ও হাবিব আদালতে খুনের দায় স্বীকার করে জবানবন্দি প্রদান করেন।

২০১৩ সালের ২৪ ডিসেম্বর রাতে সাংবাদিক আফতাবকে তার রামপুরার নিজ বাসায় শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়। ২৫ ডিসেম্বর সকালে আফতাবের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

আফতাব আহমদের ছেলে মনোয়ার আহমদ মামলায় উল্লেখ করেন, ‘২০১৩ সালের  ২৫ ডিসেম্বর সকালে বাসার গৃহকর্মী নাছিমা আফতাব আহমদের তৃতীয় তলার বাসার লোহার গেট বন্ধ পেয়ে পাশের ফ্ল্যাটের ভাড়াটিয়া একরামুল হককে ডাকেন। তারা কোনো সাড়া-শব্দ না পেয়ে পকেট গেট দিয়ে দেখেন, শয়নকক্ষের বিছানা এলোমেলো ও ভিকটিম আফতাব মেঝেতে পড়ে আছেন। তাৎক্ষণিকভাবে আফতাব আহমদের মেয়ের জামাই ও পুলিশকে বিষয়টি জানানো হলে পুলিশ এসে আফতাব আহমদের মরদেহ উদ্ধার করে’।

তদন্ত করে ২০১৪ সালের ২৫ মার্চ ৬ আসামির বিরুদ্ধে মামলার অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দেয় র‌্যাব।

বাংলাদেশ সময়: ১১৪৫ ঘণ্টা, মার্চ ২৮, ২০১৭/আপডেট ১১৫৩
এমআই/বিএস/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।