ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

এই নারী কি সেই নারী?

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১১৬ ঘণ্টা, মার্চ ২৭, ২০১৭
এই নারী কি সেই নারী? শিববাড়ি এলাকায় তৎপর আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। ছবি: আবু বকর

সিলেট: সিলেটের দক্ষিণ সুরমায় জঙ্গি আস্তানা ‘আতিয়া মহলে’ সেনাবাহিনীর অভিযানে নিহত চারজনের মধ্যে থাকা নারীকে নিয়ে রহস্য রয়ে গেছে। জঙ্গিরা আতিয়া মহলে বাড়ি ভাড়া নেওয়ার সময় ‘মর্জিনা’ নামটিকে কেবল কোড হিসেবে ব্যবহার করেছিল? নাকি তিনি জঙ্গি কাওসার আলীর স্ত্রী মর্জিনা বেগমই? এ কৌতুহলে এখন ‘মর্জিনা’ শব্দটি সবার মুখে মুখে।  

দক্ষিণ সুরমার শিববাড়ি এলাকার উস্তার মিয়ার মালিকানাধীন বাড়ি ‘আতিয়া মহল’র নিচতলার একটি ফ্ল্যাটে ‘মর্জিনা’ নামে এক নারীসহ কয়েকজন জঙ্গি অবস্থান করছে, এমন তথ্যে শুক্রবার (২৪ মার্চ) বাড়িটি ঘেরাও করে পুলিশ। সেসময় খবর মেলে ‘মর্জিনা’কে কোড হিসেবে ব্যবহার করে সিলেটে অবস্থান করছে জঙ্গিরা।

ফলে অভিযানকালে এ বিষয়টিও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী মাথায় রাখে। শনিবার (২৫ মার্চ) সকাল থেকে পুলিশ ও সোয়াটের সঙ্গে সমন্বয় করে ‘আতিয়া মহলে’ জঙ্গিবিরোধী অভিযানে নামে সেনাবাহিনীর প্যারা-কম‍ান্ডো দল।

তাদের পরিচালিত এ ‘অপারেশন টোয়ালাইট’ নিয়ে সোমবার (২৭ মার্চ) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় প্রেস ব্রিফিং করে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়, জঙ্গি আস্তানা ‘আতিয়া মহল’ এখন সম্পূর্ণভাবে প্যারা কমান্ডোদের নিয়ন্ত্রণে। ইতোমধ্যেই আতিয়া মহল থেকে চার জঙ্গির মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে তিনজন পুরুষ একজন নারী। এর মধ্যে দু’টি মরদেহ পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।  

রাতেই সিলেট মহানগর পুলিশের (এসএমপি) অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (গণমাধ্যম) জেদান আল মুসা বাংলানিউজকে জানান, ওই দু’টি মরদেহের পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার জন্য ডিএনএ’র নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। দু’টি মরদেহের মধ্যে একটি নারীর ও একটি পুরুষের।  

কৌতুহল আরও বাড়ে এই তথ্যেই। এই কৌতুহলটা এমন যে, ওই পুরুষ কি জঙ্গি কাওসার, আর নারী কি তার স্ত্রী মর্জিনা? নাকি অন্য কেউ, নাকি ‘মর্জিনা’ স্রেফ কোড হিসেবে ব্যবহার করেছে জঙ্গিরা।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে জেদান আল মুসা বাংলানিউজকে বলেন, ডিএনএ নমুনা পরীক্ষার পর বোঝা যাবে সব কিছু। এই নারী, সেই নারী ‘মর্জিনা’ কিনা তাও জানা যাবে।  

জঙ্গি আস্তানার খবর পেয়ে ২৪ মার্চ ভোর থেকে ‘আতিয়া মহল’ ঘেরাও করে রাখে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। ২৫ মার্চ সকাল থেকে সেখানে ‘অপারেশন টোয়ালাইট’ শুরু করে সেনাবাহিনীর প্যারা-কমান্ডো। সোমবার ছিলো অভিযানের চতুর্থ এবং ‘অপারেশন টোয়ালাইট’ এর তৃতীয় দিন।  

অভিযানকালে ২৫ দুপুর নাগাদ ওই বাড়িতে জিম্মি হয়ে থাকা ২৮ পরিবারের ৭৮ জনকে উদ্ধার করতে সক্ষম হয় সেনাবাহিনী। তবে রাতে অভিযানস্থলের বাইরে ৩০০ গজ উত্তরের রাস্তায় দু’দফা বোমা বিস্ফোরণে নিহত হন দুই পুলিশ কর্মকর্তাসহ ৬ জন, আহত হন ৩২ জন।

এ ঘটনায় এসএমপির মোগলাবাজার থানায় পুলিশ বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে একটি মামলা (নং-০৭(০৩)’১৭) দায়ের করেছে।   

সোমবার সেনাবাহিনীর ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, জঙ্গি আস্তানা ‘আতিয়া মহল’ এখন পুরোপুরি প্যারা-কমান্ডোদের নিয়ন্ত্রণে। অভিযানে সেনা কমান্ডোদের তরফে কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। অভিযানের পুরোটা সময় জুড়েই পরিস্থিতি প্যারা-কমান্ডোদের নিয়ন্ত্রণে ছিলো। তবে এখনও অভিযান পুরোপুরি শেষ হয়নি। বর্তমানে সেখানে তল্লাশি চলছে। তল্লাশি শেষ হলে ঘটনাস্থলে সিআইডির ক্রাইম সিন ইউনিট আসবে।

বাংলাদেশ সময়: ০৩০৪ ঘণ্টা, মার্চ ২৮, ২০১৭
এনইউ/এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
welcome-ad