ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৭ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

পুলিশ মানা করেছিল, শুনলে এ অবস্থা হতো না

মাজেদুল নয়ন, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭২৩ ঘণ্টা, মার্চ ২৭, ২০১৭
পুলিশ মানা করেছিল, শুনলে এ অবস্থা হতো না শিববাড়ি এলাকায় উৎসুক মানুষ-ছবি-মাজেদুল নয়ন

শিববাড়ি, সিলেট থেকে: গত শুক্রবার (২৪ মার্চ) থেকে সিলেটের দক্ষিণ সুরমা উপজেলার শিববাড়ি এলাকা ঘিরে রেখেছে পুলিশ। কদমতলী পর্যন্ত ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। এর আশপাশের সড়কগুলোতেও মানুষকে জড়ো হতে দিচ্ছেন না আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিন‍ীর সদস্যরা। 

এরপরও উৎসুক মানুষ কোনো কাজ ছাড়াই ভিড় করছে বিভিন্ন পয়েন্টে। অজ্ঞাতনামা জঙ্গির বোমায় বেড়েছে নিহত ও আহতের সংখ্যা।

ধীরে ধীরে কমে এসেছে অতি উৎসুক মানুষের সংখ্যা, তবে একেবারে কম নয়।  

ফেঞ্চুগঞ্জ রোড দক্ষিণ-পশ্চিম দিক থেকে চলে গেছে শিববাড়ি। এর পূর্ব দিকে বন্দরঘাট গ্রাম। সড়ক ধরে আরও ২শ মিটার গেলেই সেনাবাহিনীর প্রহরা। চারিদিক থেকে শিববাড়িকে ঘিরে রাখা হয়েছে। সড়ক ধরে কিছুক্ষণ পর পর আসা যাওয়া করছে সেনাবাহিনীর গাড়ি। সড়কের ধারের গাছপালার ভেতর থেকে উঁকি দিয়ে দেখছে গ্রামবাসী, যাতে রয়েছে বিপদের আশঙ্কা।  

শিববাড়ি এলাকায় উৎসুক মানুষ-ছবি-মাজেদুল নয়নরোববার (২৬ মার্চ) সন্ধ্যায় এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে বোমার স্প্লিন্টারে আহত রোগীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বেশিরভাগ মানুষই সেখানে কী হচ্ছে তা দেখতে গিয়েছিলেন।

দিরাইয়ের ভানুদাস ভ্যান চালিয়ে যাচ্ছিলেন সেই পথে। আগ্রহ নিয়ে দেখতে গিয়ে বোমা বিস্ফোরণে আহত হন তিনি।

চাঁদনীঘাটের নুরুল আলমও ব্যবসা বন্ধ করে দেখতে গিয়েছিলেন। এখন পায়ে বোমার স্প্লিন্টার নিয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।  

তিনি বলেন, পুলিশ মানা করেছিলো রাস্তায় দাঁড়াতে। কিন্তু দেখার লোভ সামলাতে পারিনি। পুলিশ লাঠিচার্জের পরে আবারও গিয়ে দাঁড়িয়েছিলাম।  

কদমতলীর ‘ড্রাইভার রেস্টুরেন্ট’র শিরীন মিয়া বিকেলে কাজ শেষে চলে যান শিববাড়ি।  

বাংলানিউজকে তিনি বলেন, কী ঘটছে দেখতে গিয়েছিলাম। পুলিশের বাধা না মেনে দাঁড়িয়ে ছিলাম। মনে হচ্ছিল, অনেক ভেতরের ঘটনা এখানে কিছুই হবে না। কে জানতো যে পাবলিকের মধ্যেই জঙ্গি আছে!

একইভাবে কাপড়ের ব্যবসায়ী ২২ বছরের রাসেল ঘুরতে যান সেখানে।  

তিনি বলেন, দোকান শেষ করে দেখতে গিয়েছিলাম। কিন্তু ভাগ্য খারাপ ছিলো। দুই পায়ে এখন তিনটি স্প্লিন্টার ঢুকেছে। পুলিশ মানা করেছিল, তখন শুনলে এ অবস্থা হতো না।

বন্দরঘাট গ্রাম থেকে ইতোমধ্যেই বাড়ি ছেড়ে আত্মীয়ের বাসায় চলে গিয়েছেন অনেকে।  

সোমবার (২৭ মার্চ) সকালে দোকানদার আব্দুল মোমেন বলেন, মানুষ বের হতে পারছে না। তাই বিক্রিও কম। অনেকেই চলে গেছেন। আর যারা ‍আছেন, তারা বাড়ি পাহারা দেওয়ার জন্যই আছেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৩২৩ ঘণ্টা, মার্চ ২৭, ২০১৭
এমএন/আরআর/এসএনএস
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।