ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

এক মিনিটের জন্য সব কাজ বন্ধ থাকবে

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১২১ ঘণ্টা, মার্চ ২৫, ২০১৭
এক মিনিটের জন্য সব কাজ বন্ধ থাকবে বক্তব্যে রাখছেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী আকম মোজাম্মেল হক। ছবি: কাশেম হারুন-বাংলানিউজ

ঢাকা: ২৫ মার্চ গণহত্যা দিবস। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে এ বিষয়ে স্বীকৃতি আদায়ের জন্য নানা উদ্যোগ হাতে নিয়েছে সরকার। এজন্য রাষ্ট্রীয়ভাবে দিবসটি পালন করা ছাড়াও সর্বস্তরে পালন করা হবে বেশ কিছু কর্মসূচি।

এসবের একটি হচ্ছে এক মিনিটের জন্য গোটা বাংলাদেশ থমকে যাবে। অর্থাৎ প্রতি বছর ২৫ মার্চ বিকাল ৪টা ৩০ মিনিট থেকে ৪টা ৩১ মিনিট পর্যন্ত সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে এক মিনিটের জন্য সকল কাজ বন্ধ রাখা হবে।

বাজানো হবে বিউগল।

মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী আকম মোজাম্মেল হক শনিবার (২৫ মার্চ) সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের স্বাধীনতা-জাদুঘর প্রাঙ্গণে আয়োজিত এক আলোচনাসভা ও প্রদর্শনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে একথা বলেন। ‘রক্তাক্ত ২৫ মার্চ, গণহত্যার ইতিবৃত্ত’ শীর্ষক অনুষ্ঠানটি স্কুলের শিক্ষার্থীদের নিয়ে আয়োজন করে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়।
 
মন্ত্রী বলেন, এবছর গণহত্যা দিবস প্রথমবারের মতো পালন করা হচ্ছে। তবে আগামী বছর থেকে বেশ কিছু কর্মসূচি পালন করা হবে। এক্ষেত্রে প্রথম শ্রেণী থেকে দশম শ্রেণী পর্যন্ত শ্রেণিকক্ষে শিক্ষকরা গণতহত্যা বিষয়ক তথ্যগুলো ব্ল্যাক বোর্ডে লিখে রাখবেন।
 
১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ পূর্ব পাকিস্তান ছিল পাকিস্তানের ভেতর। সেই রাতে হত্যাযজ্ঞ মানে হলো নিজ দেশের জনগণের হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে পাকিস্তান। নিরস্ত্র, নিরীহ, ঘুমন্ত বাঙ্গালিকে নির্বিচারে হত্যা করেছে। পৃথিবীর ইতিহাসে নজিরবিহীন এই হত্যাযজ্ঞ। তাই ২৫ মার্চকে জাতিসংঘের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক গণহত্যা দিবস হিসেবে ঘোষণা করানোর উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। বর্তমানে ৯ ডিসেম্বরকে আন্তর্জাতিক গণহত্যা দিবস পালন করা হয়। কিন্তু ৯ ডিসেম্বর কোনো হত্যাযজ্ঞের ইতিহাস খুঁজে পাওয়া যায় না। তাই ২৫ মার্চ গণহত্যা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি পাবে বলে বিশ্বাস রয়েছে।
 
তিনি বলেন, আন্তর্জাতিকভাবে এই স্বীকৃতি আদায়ে বেশ কিছু কর্মসূচি পালন করা হবে আগামী বছর থেকে। এসবের অন্যতম হচ্ছে বিকাল ৪টা ৩০ মিনিট থেকে ৪টা ৩১ মিনিট পর্যন্ত ১ মিনিট দেশের সকল স্তরে সকল কাজ বন্ধ থাকবে। বাজানো হবে বিউগল। ওইদিন সকাল ১১টার দিকে সরকারি-বেসরকারি সকল প্রতিষ্ঠানে এক ঘণ্টার জন্য কর্মবিরতি দিয়ে চলবে গণহত্যার আলোচনা। এসবের পাশাপাশি সকল কূটনীতিকের হাতে গণহত্যার ভিডিওচিত্র এবং প্রমাণ তুলে দেওয়া হবে। অন্যদিকে প্রবাসীদের মাধ্যমেও নানামুখি প্রচেষ্টা হাতে নেওয়া হবে।
 
গণহত্যার ইতিবৃত্ত শীর্ষক এ অনুষ্ঠানটি দু’দিনব্যাপী। এক্ষেত্রে স্বাধীনতা-জাদঘরে এবং ভেতরের গ্যালারিগুলোতে দুষ্প্রাপ্য আলোকচিত্রপ্রদর্শনী চলবে। থাকবে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক বিভিন্ন সিনেমার প্রদর্শন।
 
অনুষ্ঠানে রাজারবাগ পুলিশ লাইনে সংঘটিত সেই কালরাতের ভয়াবহতা তুলে ধরেন ঢাকা মেট্রোপলিট্রন পুলিশের কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া। ইস্ট পাকিস্তান রাইফেলস-এর বাঙ্গালী জোয়ানদের অবদান তুলে ধরেন বর্তমান বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড-এর অতিরিক্ত মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আনিসুর রহমান। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে চালানো তাণ্ডব তুলে ধরেন উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক।

মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মাহমুদ রেজা খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আব্দুল মান্নান, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ক্যাপ্টেন অব. এবিএম তাজুল ইসলাম, সংসদ সদস্য শাহজাহান কামাল ও  একে আব্দুল মোমিন প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৭১৮ ঘণ্টা, মার্চ ২৫, ২০১৭
ইইউডি/জেএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।