ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

গণহত্যার স্বীকৃতি পেতে যেতে হবে বন্ধুরাষ্ট্রের কাছে

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৪২৫ ঘণ্টা, মার্চ ২৫, ২০১৭
গণহত্যার স্বীকৃতি পেতে যেতে হবে বন্ধুরাষ্ট্রের কাছে একাত্তরে গণহত্যার চিত্র (সংগৃহীত)

১৯৭১ সালে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর দ্বারা সংঘটিত গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেতে হলে সবার আগে ভারত ও রাশিয়ার মতো বন্ধু রাষ্ট্রগুলোর সমর্থন আদায় করতে হবে। গণহত্যার নিন্দা তো তারা আগেই জানিয়েছে। এখন দরকার তাদের আনুষ্ঠানিক সমর্থন ও  স্বীকৃতি।

এ সম্পর্কে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বাংলানিউজকে বলেন, ‘স্বাধীনতাযুদ্ধে যেসব বন্ধু দেশ আমাদের সহায়তা করেছে, তাদেরকেসহ সবাইকে এ বিষয়ে সমর্থন দেওয়ার জন্য অনুরোধ করা হবে। যাতে  ওইসব দেশের সংসদে এ বিষয়ে আলোচনার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়।

তিনি  বলেন, ‘১ এপ্রিল থেকে ইন্টার পার্লামেন্টারি ইউনিয়নের (আইপিইউ) ১৩৬তম অ্যাসেম্বলি ঢাকায় অনুষ্ঠিত হবে। অ্যাসেম্বলিতে গণহত্যা বিষয়ক বেশকিছু তথ্য উপস্থাপন করা হবে।

সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আবুল হাসান চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, প্রথমত জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি মারফত প্রস্তাবটি উত্থাপন করতে হবে। ৭১ এ যারা বন্ধুপ্রতিম রাষ্ট্র ছিলো সেসব দেশে অবস্থানরত বাংলাদেশের রাষ্টদূত এই বিষয়টি তুলে ধরবেন তারা যেন আমাদের প্রস্তাবটি সমর্থন করে।

সাবেক এ প্রতিমন্ত্রী বলেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী বা দায়িত্বশীল কোনো মন্ত্রী বেশ কিছু দেশ সফর করতে পারেন প্রধানমন্ত্রীর অনুমতি নিয়ে। শুধু বন্ধুরাষ্ট্র নয়, অনুরোধ করতে হবে সবাইকেই। তবে শুরু করতে হবে বন্ধুদের দিয়েই।

তিনি বলেন, এছাড়াও জাতিসংঘ সম্মেলনে যখন সকল রাষ্ট্র একত্রিত হবে তখনও কূটনীতি জারি রাখতে হবে।

আবুল হাসান চৌধুরী বলেন, আমরা এ বিষয়ে স্বীকৃতি পাবই। কারণ তখনকার পত্রপত্রিকায় একে বারবার  জেনোসাইড বলা হয়েছে। এছাড়াও অনেক বিখ্যাত সাংবাদিকও এটাকে জেনোসাইড বলে আখ্যায়িত করেছেন বারংবার।

ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবির বাংলানিউজকে বলেন, আর্মেনিয়া যে গণহত্যার স্বীকৃতি পেয়েছে সেজন্য তাদের ৩০/৩৫ বছর লবিং করতে হয়েছে। সরকার ও নাগরিক সমাজকে যৌথভাবে এটা করতে হবে। এখন যেহেতু সরকার ঘোষণা করেছে ২৫ মার্চ গণহত্যা দিবস, তাই সরকারের ওপর বাধ্যবাধকতা এসে যায় ৭১ এ নয় মাসব্যাপী গণহত্যার স্বীকৃতি পেতে বাইরের সরকারগুলোর কাছে আবেদন করা।

তিনি বলেন, ’৭১ এ ভারত, নেপাল, ভুটান, সোভিয়েত ইউনিয়ন ও পূর্ব ইউরোপের তৎকালীন সমাজতান্ত্রিক দেশগুলো বাংলাদেশের গণহত্যার নিন্দা করেছে। এদেরকে অ্যাপ্রোচ করতে হবে। কারণ, সবার আগে এরাই এটার নিন্দা জানায়। তাদের রেকর্ড আছে। এখন শুধু তাদের পার্লামেন্টে একটি প্রস্তাব নিতে হবে যে, ৭১ সালে বাংলাদেশে গণহত্যা হয়েছে, এ মর্মে- এটার নিন্দা করি। গণহত্যার চলমান বিচারকার্যককে আমরা সমর্থন জানাই। আমরা চাই এ ধরনের গণহত্যার যেন পুনরাবৃত্তি না হয়। এ নিয়ে একটি প্রস্তাব তাদের পার্লামেন্টগুলোকে নিতে হবে।

শাহরিয়ার কবির আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্র আর্মেনিয়ার গণহত্যাকে স্বীকৃতি দিতে পারেনি তুরস্কের বিরোধিতার কারণে। কিন্তু জাতিসংঘ দিয়েছে। সুতরাং যুক্তরাষ্ট্রকে বাদ দিয়েও জাতিসংঘ অনেক কিছু করতে পারে তার নজির আছে।

বাংলাদেশ সময়: ১০০০ ঘণ্টা, মার্চ ২৫, ২০১৭
কেজেড/এমজেএফ/জেএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।