ঢাকা, শনিবার, ৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

ধ্বংসের দোরগোড়ায় রাঙ্গামাটি হাঁস প্রজনন খামার

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২৫০ ঘণ্টা, মার্চ ২৪, ২০১৭
ধ্বংসের দোরগোড়ায় রাঙ্গামাটি হাঁস প্রজনন খামার ধ্বংসের দোরগোড়ায় রাঙ্গামাটি হাঁস প্রজনন খামার- ছবি: বাংলানিউজ

রাঙ্গামাটি: রাঙ্গামাটি হাঁস প্রজনন খামারটি বর্তমানে ধ্বংসের দোরগোড়ায় এসে দাঁড়িয়েছে। অবকাঠামো থেকে শুরু করে ব্যবস্থাপনা--এখানে সবই চলছে খুঁড়িয়ে।

২০০১ সালে সরকার হাঁস প্রজনন প্রকল্পের আওতায় জেলা শহরের আসাম-বস্তি এলাকায় হাঁস প্রজনন খামার স্থাপন করে। এ প্রকল্পটি ২০০১ সালে শুরু হয়।

২০০৯ পর্যন্ত প্রকল্পের কার্যক্রম সচল ছিল। কিন্তু ২০০৯ সালে  প্রকল্প বন্ধ হওয়ার পরও প্রতিষ্ঠানটি কয়েক বছর ধরে কোনোমতে খুঁড়িয়ে চলছিল। কিন্তু এখন এটি ধ্বংসের পথে। কর্মচারীরা বিনা বেতনে কয়েক বছর চাকরি করে চলে গেছেন। সরকারের সম্ভাবনাময় এ প্রতিষ্ঠানটি বর্তমানে অলাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে।
ধ্বংসের দোরগোড়ায় রাঙ্গামাটি হাঁস প্রজনন খামার- ছবি: বাংলানিউজ
সরেজমিনে ওই প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সাথে কথা হয় বাংলানিউজের। তারা হতাশ কন্ঠে বলেন তার সারকথা হচ্ছে: একটা সময় প্রতিষ্ঠানটি লাভজনক হলেও বর্তমানে এটি ধ্বংসের পথে। হাঁসের খামারের জন্য বর্তমানে দুইটি বড় শেড এবং ছয়টি মাঝারি শেড রয়েছে। মাঝারি চারটি শেডের  মধ্যে খাকী ক্যাম্বেল, ইন্ডিয়ান রানার, পিকিং এবং জিনডিংসহ চার প্রজাতির এক হাজার দুশো হাঁস রয়েছে। আর এ হাঁসগুলো প্রতিদিন গড়ে ৬০০টি ডিম দেয়। বাদবাকি শেডগুলো অর্থের অভাবে সংস্কার না করায় পুরো খামারটিরই অস্তিত্ব বিলীন হবার পথে।

তারা আরও কিছু সমস্যার কথা জানালেন। প্রতিষ্ঠানটির সীমানাপ্রাচীর ভেঙে সাধারণ মানুষ অবাধে চলাচল করছে এর ভেতর দিয়ে। এ কারণে হাঁসগুলো ডিম পাড়া কমিয়ে দিয়েছে। এছাড়া বর্তমানে নিরাপত্তার সমস্যাও প্রকট হয়ে দেখা দিয়েছে।
ধ্বংসের দোরগোড়ায় রাঙ্গামাটি হাঁস প্রজনন খামার- ছবি: বাংলানিউজ
ওই প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপক কুসুম চাকমা বাংলানিউজকে একরাশ হতাশার কথাই জানালেন: আমি ২০০৮ সালে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে বাচ্চা উৎপাদনের মেশিনটি (ইনকিউবেটর মেশিন)নষ্ট অবস্থায় দেখে আসছি। মেশিন মেরামত এবং অবকাঠামো সংস্কার করার জন্য ২০০৮ সাল থেকে এ প্রতিষ্ঠানের তরফ থেকে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে একাধিকবার আবেদন  করা হয়েছে। কিন্তু সরকারের পক্ষ থেকে মেলেনি কোনো সাড়া, মেলেনি কোনো সহযোগিতা। ফলে প্রতিষ্ঠানটির অবকাঠামো ও  ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তার মুখে।

তিনি বলেন, তিন পার্বত্য জেলাসহ চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, নোয়াখালী, ফেনী সিলেট থেকে খামারিরা আসে বাচ্চা ক্রয়ের জন্য। হাঁসের বাচ্চার বিপুল চাহিদা থাকার পরও স্রেফ ইনকিউবেটরটি নষ্ট থাকায় আমরা বাচ্চা উৎপাদন করতে পারছি না। এতে করে সরকারও রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। দিনকে দিন প্রতিষ্ঠানটির কার্যক্রমও সংকুচিত হচ্ছে।
ধ্বংসের দোরগোড়ায় রাঙ্গামাটি হাঁস প্রজনন খামার- ছবি: বাংলানিউজ
তিনি আরো বলেন, এ প্রতিষ্ঠানটির অধীনে বর্তমানে এক হাজার দুশো ডিম দেওয়া হাঁসও রয়েছে। এসব হাঁস প্রতিদিন গড়ে ৬০০ ডিম দেয়। কিন্তু বাচ্চা ফোটানোর মেশিন না থাকায় ডিমগুলো বিক্রি করে ফেলতে হয়।

তিনি জানান, সরকার যথাযথ উদ্যোগ নিলে এ প্রতিষ্ঠানটি আবার প্রাণ ফিরে পাবে। সরকারের রাজস্ব খাতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে। পাশাপাশি অনেক বেকারের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে।

স্থানীয়দের দাবি, সম্ভাবনাময় এ প্রতিষ্ঠানটিকে যদি জেলা পরিষদের অধীনে হস্তান্তর করা যায়, তাহলে এটি ধ্বংসের মুখ থেকে রক্ষা পা। হাঁস প্রজননের ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে।

বাংলাদেশ সময়: ০৮৫০ ঘণ্টা, মার্চ ২৪, ২০১৭
জেএম/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।