ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৭ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

মুফতি হান্নান-বিপুলের মৃত্যু পরোয়ানা যাচ্ছে কাশিমপুরে

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৫১ ঘণ্টা, মার্চ ২২, ২০১৭
মুফতি হান্নান-বিপুলের মৃত্যু পরোয়ানা যাচ্ছে কাশিমপুরে তিন জঙ্গির মধ্যে দু’জনের মৃত্যু পরোয়ানা গেছে কাশিমপুরে

সিলেট: সাবেক ব্রিটিশ হাইকমিশনার আনোয়ার চৌধুরীর ওপর গ্রেনেড হামলা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন হরকাতুল জিহাদের শীর্ষনেতা মুফতি আব্দুল হান্নান ও শরীফ শাহেদুল আলম বিপুলের মৃত্যু পরোয়ানা পাঠানো হয়েছে গাজীপুরের কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারে।  

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত অন্য জঙ্গি দেলোয়ার হোসেন রিপন সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারে থাকায় তার মৃত্যু পরোয়ানাটি রেখে দিয়েছেন ওই কারা কর্তৃপক্ষ।

সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার ছগির মিয়া বুধবার (২১ মার্চ) সন্ধ্যায় বিচারিক আদালত সিলেটের দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল থেকে মৃত্যু পরোয়ানাগুলো গ্রহণ করেন।

তিনি সন্ধ্যা ৬টা ১৮ মিনিটে পরোয়ানাসহ কারাগারের ভেতরে ঢোকেন।

এরপর যাচাই-বাছাই শেষে রিপনেরটা রেখে বাকি দু’জনের মৃত্যু পরোয়ানা কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়েছে বলে জানান সিনিয়র জেল সুপার। ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার ও আইজি (প্রিজন) বরাবরে পরোয়ানার অনুলিপি গেছে বলেও বাংলানিউজকে জানান তিনি।

ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত তিনজনের মধ্যে রিপনকে সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারে আর মুফতি হান্নান ও বিপুলকে গাজীপুরের কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারে রাখা হয়েছে। তবে তিনজনেরই প্রিজনার্স হিসেবে আইন অনুসারে সিলেটের সিনিয়র জেল সুপার তাদের মৃত্যু পরোয়ানা নিয়েছেন বলে জানান সিলেটের দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের স্টেনোগ্রাফার মহিউদ্দিন।    

তিনি বাংলানিউজকে জানান, ফাঁসির রায়ের বিরুদ্ধে আসামিদের রিভিউ খারিজের রায় ট্রাইব্যুনালে এসে পৌঁছে বিকেলে। রিভিউ খারিজ ও ফাঁসির চূড়ান্ত রায় প্রদানকারী সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ কুরিয়ারযোগে বিচারিক আদালত হিসেবে রায়ের অনুলিপি ট্রাইব্যুনালে পাঠান। ফ্যাক্সেও এর অনুলিপি আসে।

এরপর আইন অনুসারে ফাঁসি বহাল রাখা সর্বশেষ এ রায়ের ভিত্তিতে দণ্ডপ্রাপ্তদের মৃত্যু পরোয়ানা তৈরি হলে তাতে স্বাক্ষর করেন ট্রাইব্যুনালের বর্তমান বিচারক মকবুল আহসান।    

সিনিয়র জেল সুপার ছগির মিয়া বাংলানিউজকে জানান, ওই ট্রাইব্যুনালের তৎকালীন বিচারক বিপ্লব গোস্বামী যেহেতু প্রথমে মামলায় ফাঁসির রায় দিয়েছিলেন, সেহেতু বর্তমান বিচারক মকবুল আহসান তিনজনের মৃত্যু পরোয়ানায় স্বাক্ষর করেন। তিনি নিজে আদালতে উপস্থিত হয়ে মৃত্যু পরোয়ানার কাগজ নিয়ে এসেছেন।

এর আগে বিকেলে আইনজীবীর মাধ্যমে রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা চাইবেন বলে কারা কর্তৃপক্ষকে জনিয়েছেন এ কারাগারে থাকা দেলোয়ার হোসেন রিপন। যদিও দুপুরে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানাতে সময় চেয়েছিলেন তিনি। কারা কর্তৃপক্ষকে বলেছিলেন, আইনজীবীর সঙ্গে পরামর্শ করে সিদ্ধান্ত জানাবেন।

ছগির মিয়া বাংলানিউজকে বলেন, ‘বুধবার বেলা বারটার দিকে ফাঁসির রায়ের বিরুদ্ধে জঙ্গিদের রিভিউ খারিজের রায় ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে পৌঁছানোর পর তা পড়ে শোনানো হয় রিপনকে। এরপর তার কাছে রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা চাইবেন কি-না, তা জানতে চেয়েছিলাম আমরা। জবাবে রিপন বলেছিলেন, তার আইনজীবীর সঙ্গে পরামর্শ করে জানাবেন। বিকেল পৌনে পাঁচটার দিকে আইনজীবীর মাধ্যমে প্রাণভিক্ষা চাওয়ার সিদ্ধান্ত জানিয়েছেন তিনি’।         

রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা চাইবেন বলে কারা কর্তৃপক্ষকে সকালেই জানিয়েছেন কাশিমপুরে থাকা মুফতি হান্নান ও বিপুল। তাদেরকেও রিভিউ খারিজের রায় পড়ে শোনানোর পর রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা চাইবেন কি-না, তা জানতে চান কারা কর্মকর্তারা। হঁ্যা সূচক জবাব দিয়ে প্রাণভিক্ষার আবেদন জানানোর কথা জানান মুফতি হান্নান ও বিপুল।

জঙ্গিরা প্রাণভিক্ষার আবেদন জানালে আইন অনুসারে তা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় হয়ে রাষ্ট্রপতির কাছে যাবে বলে জানিয়েছে কারা কর্তৃপক্ষ।

এ আবেদন প্রত্যাখ্যাত হলে সরকারের সিদ্ধান্ত ও জেলকোড অনুসারে ২১ থেকে ২৮ দিনের মধ্যে (২১ দিনের আগে নয়, তবে ২৮ দিনের মধ্যে) তিন জঙ্গির ফাঁসি কার্যকর করবে কারা কর্তৃপক্ষ।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৫০ ঘণ্টা, মার্চ ২২, ২০১৭
এনইউ/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।