ঢাকা, বুধবার, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা পাচ্ছেন ১১৪৮টি ফ্ল্যাট

মাহফুজুল ইসলাম, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১৩৮ ঘণ্টা, মার্চ ২১, ২০১৭
পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা পাচ্ছেন ১১৪৮টি ফ্ল্যাট পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা পাচ্ছেন ফ্ল্যাট, ছবি: দীপু মালাকার

ঢাকা: এবার ফ্ল্যাটে বসবাসের সুযোগ পেতে যাচ্ছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) ১ হাজার ১৪৮টি পরিচ্ছন্নতাকর্মী পরিবার। তাদের আবাসনে ১০তলা বিশিষ্ট ১৩টি ভবন নির্মাণ করছে ডিএসসিসি।

‘ডিএসসিসি’র পরিচ্ছন্নতাকর্মী নিবাস নির্মাণ’ প্রকল্পের আওতায় নির্মাণাধীন ভবনগুলোর প্রতিটি ইউনিটে একটি করে ফ্ল্যাট পাবেন পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা। প্রত্যেক ফ্ল্যাটে দু’টি বেডরুম, একটি কিচেন, একটি টয়লেট ও একটি বারান্দা থাকছে।

ইউনিট এরিয়া, বারান্দা, লবি, সিঁড়ি ও লিফটে থাকছে খোলামেলা পরিবেশ।

এসব আবাসন প্রকল্পে  স্কুল, উন্নতমানের ডে কেয়ার, উপাসনালয়, বিনোদন কেন্দ্র, শরীরচর্চা কেন্দ্র, কমিউনিটি সেন্টার, সীমানা প্রাচীর, অভ্যন্তরীণ রাস্তা, বৈদ্যুতিক সাব-স্টেশন এবং নিজস্ব পানির সুব্যবস্থাও থাকবে।
ডিএসসিসি’র সূত্র জানায়, দয়াগঞ্জ, সূত্রাপুর ও ধলপুর ক্লিনার্স কলোনিতে ওই ১৩টি অত্যাধুনিক ভবন করা হচ্ছে। সব মিলিয়ে দু’টি ক্যাটাগরির মোট ১ হাজার ১৪৮টি ফ্ল্যাট নির্মিত হবে। এর মধ্যে ধলপুরে ৫টি ভবনে ৪৮০টি, দয়াগঞ্জে ৫টিতে ৪৯০টি এবং সূত্রাপুরে ৩টিতে ১৭৮টি ফ্ল্যাট তৈরি করা হচ্ছে।

পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের পেশাগত দক্ষতা ও অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে ফ্ল্যাটগুলো বরাদ্দ দেওয়া হবে। প্রতিটি ফ্ল্যাটের আয়তন হবে ৪৭২ বর্গফুট। এর মধ্যে থাকবে ১টি করে কমন বাথরুম, কিচেন এবং ২টি করে বেডরুম ও বারান্দা।

 ‘এ’ ক্যাটাগরির ২টি ভবনের নিচতলায় ৪টি করে কমিউনিটি সেন্টার, ২টি করে নামাজ ও স্টোররুম রাখা হচ্ছে। ‘বি’ ক্যাটাগরির ভবনের নিচতলায় থাকছে ৩টি করে কমিউনিটি সেন্টার, স্টোররুম ও ২টি করে নামাজের রুম।
 ভবনগুলোতে থাকছে ২টি করে সিঁড়ি, লিফট, ফায়ার ফাইটিং ব্যবস্থাসহ বিদ্যুতের জন্য আলাদা জেনারেটর ও সাব-স্টেশন এবং সার্বক্ষণিক পানির সুবিধা পেতে আন্ডারগ্রাউন্ড পানির ট্যাংক ও ওভারহেড পানির ট্যাংকসহ পাম্প হাউজ।

 অন্যদিকে প্রত্যেকটি ফ্ল্যাটের বাসিন্দাদের জন্য থাকছে ইন্টারকম সুবিধা। ঘরের মেঝের পাশাপাশি রান্নাঘর ও বাথরুমের দেওয়ালে টাইলস ছাড়াও রান্নাঘর-কিচেন সেলফে নানা ধরনের শৈল্পিক নকশা। বাথরুমে ওয়াশ বেসিন, শাওয়ার, তোয়ালে রাখার বিশেষ স্থানসহ আয়না রাখারও সুবিধা রয়েছে। ভবনগুলোর মাঝে প্রশস্ত রাস্তাও থাকছে।

এক কথায় একটি আধুনিক আবাসন প্রকল্পে যে সকল সুযোগ-সুবিধা থাকার দরকার, সবই থাকছে এখানে।

 নির্মাণ শেষে কোনো টাকা-পয়সা ছাড়াই পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা ফ্ল্যাটে বসবাস করতে পারবেন। পদ অনুসারে পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের ফ্ল্যাট বরাদ্দ দেওয়া হবে। যতোদিন চাকরি থাকবে, ততোদিন তারা বসবাস করতে পারবেন এসব অত্যাধুনিক ফ্ল্যাটে।

পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা পাচ্ছেন ফ্ল্যাট, ছবি: দীপু মালাকার এসব ভবন নির্মাণে মোট ব্যয় ১৯০ কোটি টাকার সবটাই মেটানো হচ্ছে সরকারি তহবিল থেকে। ২০১৩ থেকে ২০১৭ সাল মেয়াদে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের অধীনে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর।

 ডিএসসিসি’র প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (অতিরিক্ত সচিব) খান মোহাম্মদ বেলাল বাংলানিউজকে বলেন, সুইপার-মেথর, ঝাড়ুদারসহ পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের জন্য নির্মাণাধীন ভবনগুলোর সকল ফ্ল্যাটই হচ্ছে অত্যাধুনিক মানের।

সূত্র জানায়, ধলপুরের ৫টি ভবনের মধ্যে দু’টির নির্মাণ কাজ শেষের পথে। এ জায়গায় থাকা ঝুঁকিপূর্ণ পুরনো ভবনটি রোববার (১৯ মার্চ) থেকে ভাঙার কাজ শুরু হয়েছে। দ্রুত অপসারণের পর এখানে আরো ৩টি ভবন করা হবে। ধলপুরের প্রকল্পটিতে ব্যয় ধরা হয়েছে সাড়ে ৮৪ কোটি টাকা।

ওই ৫টি ভবনের ৪৮০টি ফ্ল্যাটের মধ্যে ‘এ’ ক্যাটাগরি বা প্রথম শ্রেণীর ২টি ভবনে ১৯০টি ফ্ল্যাট এবং বি ক্যাটাগরি বা দ্বিতীয় শ্রেণীর ৩টি ভবনে ২৯০টি ফ্ল্যাট থাকছে।
রাজধানী ঢাকার পরিচ্ছন্নতায় দুই সিটি কর্পোরেশনের অধীনে কর্মরত মোট ৭ হাজার ১৫৬ জন পরিচ্ছন্নতাকর্মী। তাদের মধ্যে এখন পর্যন্ত মাত্র ২ হাজার ৯৮০ জনের আবাসনের ব্যবস্থা করতে সক্ষম হয়েছে সিটি কর্পোরেশন। বাকি ৪ হাজার ১৭৬ জনকে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে ১৪টি কলোনিতে অপরিচ্ছন্ন পরিবেশে জীবন-যাপন করতে হচ্ছে।

এ সমস্যা নিরসনে ২০০৫ সালে অবিভক্ত ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের অধীনে ‘দয়াগঞ্জ, ধলপুর ও সূত্রাপুর ক্লিনার্স কলোনি নির্মাণ’ প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়। প্রকল্পের আওতায় ২০ কোটি ৯৩ লাখ টাকা ব্যয়ে ১২টি ৪তলা ভবন নির্মাণের কথা থাকলেও কাজ শুরু হয় ৯টির। এর ওপর ২০০৭ সালের মে মাসে একটি ভবন ধ্বসে পড়লে পুরো প্রকল্পের কাজই স্থগিত হয়ে যায়।

বাংলাদেশ সময়: ০৭৩৬ ঘণ্টা, মার্চ ২১, ২০১৭
এমএফআই/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।