ঢাকা, শনিবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

ভবন ভাঙা বিলম্বিত করতে বিজিএমইএ’র দৌড়ঝাপ

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪১৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০১৭
ভবন ভাঙা বিলম্বিত করতে বিজিএমইএ’র দৌড়ঝাপ

ঢাকা: ‘হাতিরঝিলের ক্যান্সার’ নামে পরিচিত বিজিএমইএ ভবন ভাঙতে আপিল বিভাগের চূড়ান্ত রায়ের রিভিউ আবেদনের শুনানির দিন ধার্য রয়েছে আগামী বৃহস্পতিবার (০২ মার্চ)। রিভিউযের রায়ে সর্বোচ্চ আদালত কোনো নতুন আদেশ দেবেন, না ভাঙার নির্দেশনাই বহাল রাখবেন, তা নিয়ে চিন্তিত সংগঠনটির নেতাকর্মীরা।

কেউ বলছেন, ভবন ভাঙতে হয়তো আরও কিছুদিন সময় বাড়িয়ে দেবেন আদালত। আবার কেউ বলছেন, নিজের ভাঙার রায়ই বহাল রাখবেন আপিল বিভাগ।

তবে রিভিউ আবেদনের রায় নিয়ে এখনও আশাবাদী বিজিএমইএ’র কর্মকর্তারা। ভবন ভাঙা বিলম্বিত করতে আরও কিছুটা সময় পেতেই মূলত দৌড়ঝাপ করছেন তারা।

সংগঠনটির সহ সভাপতি মোহাম্মদ নাসির বাংলানিউজকে বলেন, ‘দেশের রফতানি আয়ের ৮২ শতাংশ আসে এ খাত থেকে। নারীদের একটি বড় অংশ কাজ করছেন এ শিল্প। আদালত সবদিক বিবেচনা করবেন বলে আশা করছি। আবার আমাদের অন্যত্র স্থানান্তরিত হতেওতো কিছুটা সময় দরকার’।

‘আশা করছি, আদালত অন্তত আমাদের অন্যত্র সরে যাওয়ার জন্য কিছুটা সময় দেবেন’।

কিন্তু যে আপিল বেঞ্চ হাইকোর্টের রায় বহাল রেখেছিলেন, সেই একই বেঞ্চে শুনানি হবে বলে বিজিএমইএ’র আবেদন মঞ্জুর অথবা সময় বাড়ানোর সম্ভাবনা ক্ষীণ বলে মন্তব্য করেছেন হাইকোর্টে এ মামলার অ্যামিকাস কিউরি অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ।

তিনি বাংলানিউজকে বলেন, ‘বিজিএমইএ ভবন ভাঙার কোনো বিকল্প নেই। তবে সর্বোচ্চ আদালতের কাছে ভবন ভাঙতে কিছুটা সময় চেয়েছে বিজিএমইএ। আদালত বিষয়টি কিভাবে দেখবেন, সেটি এখন দেখার বিষয়’।

‘তবে হাইকোর্টের রায়ের পর বিজিএমইএ’র আপিলের রায় দিয়েছিলেন আপিল বিভাগের যে বেঞ্চ, সেই বেঞ্চই রিভিউ আবেদনের শুনানি নেবেন। তখনও বিজিএমইএ সময় চেয়েছিলো, কিন্তু বিচারপতিদের বেঞ্চটি সময় দেননি। সেই একই বেঞ্চ নতুন করে সময় দেবেন বলে আমার মনে হচ্ছে না। সময় দিলে তাদের আগেই দেওয়া হতো’।

বিজিএমইএ সূত্রে জানা গেছে, ‘রিভিউ আবেদনে আদালতের কাছে সময় চাওয়ার পাশাপাশি ভবন ভাঙা বিলম্বিত করতে সরকারের সর্বোচ্চ মহলেও দৌড়ঝাপ ও লবিঙে ব্যস্ত নেতারা। কিভাবে আরো কিছুটা সময় ক্ষেপণ করা যায়, সে বিষয়ে অন্য বিকল্পগুলো নিয়েও ভাবছে বিজিএমইএ।

২০১১ সালের ০৩ এপ্রিল বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চ তার রায়ে বিজিএমইএ’র ভবন ভেঙে ফেলার নির্দেশ দেন। বিজিএমইএ’কে নিজস্ব অর্থায়নে ভবনটি ভাঙতে বলা হয়। ভবনটি নির্মাণের আগে ওই স্থানের ভূমি যে অবস্থায় ছিলো, সে অবস্থায় ফিরিয়ে আনতেও নির্দেশ দেওয়া হয়।

একই বছরের ০৫ এপ্রিল বিজিএমইএ’র আবেদনে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ হাইকোর্টের রায় ছয়মাসের জন্য স্থগিত করেন। পরবর্তী সময়ে স্থগিতাদেশের মেয়াদ আরো বাড়ান সর্বোচ্চ আদালত। এর দুই বছর পর ২০১৩ সালের ১৯ মার্চ হাইকোর্টের ৬৯ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়।

রায়ে ভবনটি ৯০ দিনের মধ্যে ভেঙে ফেলে ওই জমি জনকল্যাণে ব্যবহারের নির্দেশ দিয়ে বলা হয়, ‘হাতিরঝিল প্রকল্প একটি জনকল্যাণমূলক প্রকল্প’। আদালত বিজিএমইএ যাদের কাছে ওই ভবনের ফ্ল্যাট বা অংশ বিক্রি করেছে, তাদের টাকাও দাবি পাওয়ার এক বছরের মধ্যে ফেরৎ দিতে বলেন। হাইকোর্টের রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশের পর লিভ টু আপিল করে বিজিএমইএ কর্তৃপক্ষ। গত বছরের ০২ জুন ওই আপিল খারিজ হয়ে যায়। এরপর আপিল বিভাগের চূড়ান্ত রায়ের পুনর্বিবেচনা চেয়ে রিভিউ আবেদন করে বিজিএমইএ।

বাংলাদেশ সময়: ২০১৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০১৭
ইউএম/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।