ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

আটকরা ডাকাতি ছাড়াও বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩০৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০১৭
আটকরা ডাকাতি ছাড়াও বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখছেন মো. মুফতি মাহমুদ খান

ঢাকা: গাজীপুরের কালিয়াকৈরে গার্মেন্টসের ভল্ট ভেঙে ডাকাতির ঘটনায় আটক ডাকাতরা ডাকাতি ছাড়াও বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত বলে জানিয়েছেন ৠাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক মো. মুফতি মাহমুদ খান। 

সোমবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) বেলা সাড়ে ১১টায় কারওয়ানবাজারে ৠাবের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান তিনি।

গাজীপুরের কালিয়াকৈর নিট প্লাস গার্মেন্টেসের ভল্ট ভেঙে প্রায় তিন কোটি ৪১ লাখ টাকা ডাকাতির ঘটনার মূল হোতাসহ ৬ জনকে রোববার (২৬ ফেব্রুয়ারি) দিনগত রাতে অভিযান চালিয়ে আটক করে র‌্যাব।

আটক ডাকাতরা হলো- মাহবুবুর রহমান ওরফে ফিরোজ মোল্লা ওরফে খালেক (৫১), খলিলুর রহমান রানা ওরফে রানা সরদার ওরফে ফিরোজ (৪০), বেলায়েত হোসেন আখন্দ ওরফে বেলায়াত (৪২), ইকবাল হোসেন রুবেল (৩৭), ফারুক হোসেন ওরফে বাবুল ওরফে আলম শিকদার (৫০) ও উজ্জ্বল বিশ্বাস (৩৪)।

সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাব কর্মকর্তা বলেন, তদন্ত শেষে রোববার ভোর থেকে খুলনা, রাজশাহী, কুমিল্লা, বরিশাল, ঢাকা ও গোপালগঞ্জে অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়। এসময় তাদের কাছ থেকে ডাকাতি হওয়া এক কোটি ১৭ লাখ টাকা ও ১১শ’ মার্কিন ডলার উদ্ধার করা হয়। উদ্ধার করা হয়েছে লুটের টাকায় কেনা একটি ট্রাক ও গার্মেন্টস মেশিনারিজ যন্ত্রাংশ।

এছাড়াও ডাকাতির সময় ভল্ট ভাঙ্গার কাজে ব্যবহৃত ২টি শাবল, পরিহিত জ্যাকেট, ১টি পিস্তল, ২টি ম্যাগজিন, ৫ রাউন্ড গুলি, ২টি ছোরা ও ১টি চাপাতিসহ অন্যান্য সামগ্রী উদ্ধার করা হয়েছে।

মুফতি মাহমুদ খান বলেন, গ্রেফতারকৃতরা এ ডাকাটির ঘটনার আগেও বিভিন্ন অপরাধে লিপ্ত ছিল। ডাকাতির ঘটনার পরিকল্পনাকারী মাহবুবুর, রানা ও ফারুক তিনজন মিলে ২০১৫ সালে সমশের গার্মেন্টে ডাকাতি করেছিল। বেলায়েত হোসেন ঝিনাইদহের কালিগঞ্জে একটি ব্যাংক ডাকাতি করেছিল। তার নামে ঝিনাইদহ থানায় মামলাও আছে। অপরদিকে আসামি রুবেল বরিশালে একটি খুনের আসামি।  

আগে তারা সবাই বিভিন্ন ধরনের অপরাধের সঙ্গে জড়িত ছিল।  

তিনি বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানিয়েছে, মাহবুবুর রহমান এবং খলিলুর রহমান রানা এ ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী। পূর্ব পরিকল্পনার ভিত্তিতে মাহবুব ও ফারুক ভুয়া নাম ও ঠিকানা ব্যবহার করে Institute of Safety, Security and Information Technology (ISSIT) তে ২০১৬ সালের ২ ডিসেম্বরে নিরাপত্তাকর্র্মী হিসেবে চাকরি নিয়ে উক্ত গার্মেন্টসে নিরাপত্তারক্ষীর নিয়োগ পান।  

মাহবুব বরিশাল জেলার একটি ঠিকানা এবং ফারুক পটুয়াখালীর একটি ঠিকানা ব্যবহার করেছিল। রুবেল তাদের এ সংক্রান্ত বিবিধ ভুয়া সনদ সরবরাহ করেছিল বলেও স্বীকার করেছে।  

ঘটনার তিনদিন আগে থেকেই অন্যান্য সহযোগীরা (রানা, রুবেল ও বেলায়েত) বিভিন্ন সময়ে ওই গার্মেন্টস এলাকায় পর্যবেক্ষণ করে। ঘটনার দিন (৭ জানুয়ারি, ২০১৭) রাতে নিরাপত্তারক্ষী আসামি মাহবুব এবং ফারুকসহ মোট ৪ জন ডিউটিতে ছিলেন।  

পূর্ব-পরিকল্পনা অনুযায়ী মাহবুব ও ফারুক বিস্কুট ও পানীয়ের সঙ্গে নেশাজাতীয় দ্রব্য মিশিয়ে অন্য ৪ জনকে খাইয়ে অচেতন করে। এরপর মাহবুব এবং ফারুক গভীর রাতে গার্মেন্টসের বাইরে অপেক্ষমাণ অন্যান্য ডাকাত রানা, রুবেল ও বেলায়েতদের ভেতরে প্রবেশ করিয়ে ভল্ট ভেঙ্গে লুণ্ঠন কার্যক্রম শুরু করে।  

তিনি বলেন, ডাকাতরা সিসি টিভিতে ধরা না পড়ার জন্য ভুল একটি সার্ভার অপসারণ ও লুণ্ঠন করে। ঐ স্থানেই তারা টাকা ভাগাভাগি করে একাধিক ব্যাগে ভরে নিয়ে যায়।

আসামিদের দেওয়া প্রাথমিক তথ্য মতে, ১টি ট্রাক ক্রয় (উদ্ধার), গার্মেন্টস মেশিন ক্রয় (উদ্ধার), বেনামে জমি ক্রয়, ব্যবসায় বিনিয়োগ, পোস্ট অফিস ও ব্যাংকে নামে-বেনামে সঞ্চয়, কর্জ দেওয়া এবং আসবাবপত্র ও ইলেকট্রনিক সামগ্রী ইত্যাদি কাজে টাকা খরচ করেছে বলে জানিয়েছে।

তাদের আরও জিজ্ঞাসাবাদ করা গেলে অনেক তথ্য পাওয়া যাবে বলেও জানান মুফতি মাহমুদ খান।

বাংলাদেশ সময়: ১৯০২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০১৭
এসজেএ/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।