ঢাকা, শুক্রবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

পরিবহন ধর্মঘটে অচল খুলনা বিভাগের ১০ জেলা

ব্যুরো এডিটর | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৪১৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০১৭
পরিবহন ধর্মঘটে অচল খুলনা বিভাগের ১০ জেলা পরিবহন ধর্মঘটে অচল খুলনার ১০ জেলা

খুলনা: পরিবহন ধর্মঘটে অচল হয়ে পড়েছে খুলনা বিভাগের ১০ জেলার সড়ক যোগাযোগ।  

মানিকগঞ্জে সড়ক দুর্ঘটনায় মিশুক মুনীর ও তারেক মাসুদসহ ৫ জন নিহতের মামলায় বাসচালকের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশের প্রতিবাদে রোববার (২৬ ফেব্রুয়ারি) ভোর থেকে খুলনা বিভাগের কোনো রুটে পরিবহন চলাচল করছে না।

টার্মিনাল ও স্টপেজগুলোতে বাস-ট্রাকসহ অন্য যানবাহন ঠায় দাঁড়িয়ে রয়েছে।

ফলে থমকে গেছে জনজীবন। সীমাহীন দুর্ভোগে পড়েছেন সাধারণ মানুষ।

ধর্মঘটের দ্বিতীয় দিন সোমবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) খুলনার সোনাডাঙ্গা বাস টার্মিনাল থেকে কোন বাস ছাড়েনি। এছাড়া ট্রাক টার্মিনালসহ সকল ব্যবসায়ী এলাকার মালামাল পরিবহনও বন্ধ রয়েছে। মংলা, বেনাপোল ও ভোমরা বন্দর অচল হয়ে পড়েছে। সরবরাহ না থাকায় কাঁচাবাজার, জ্বালানি তেল, গ্যাস, নিত্যপণ্যসহ অন্যান্য জিনিসপত্রে বাড়তে শুরু করেছে দাম।   ট্রাকে আটকরা পরা কাঁচামালে পচন ধরায় মাথায় হাত পড়েছে কৃষকসহ সহ শ্রেণীর ব্যবসায়ীদের।
 
মহানগরীর খালিশপুর তেল ডিপো থেকে জ্বালানি তেল সংগ্রহ করতে আসা সব ট্যাঙ্কলরি এই ধর্মঘটে অংশ নিয়েছে। যে কারণে বিভাগে জ্বালানি তেল সংকট দেখা দিয়েছে।
 
এদিকে সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন খুলনা বিভাগীয় আঞ্চলিক কমিটির ডাকা অনির্দিষ্টকালের এ ধর্মঘটের বিরুদ্ধে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেছেন সাধারণ মানুষ।
ধর্মঘটে ট্রেনে যাত্রীদের ভিড়

তারা বলছেন, আদালত রায় দিয়েছে তার খেসারত জনগণকে কেন ভোগ করতে হবে। তারা দ্রুত পরিবহন ধর্মঘটের অবসান চান।
 
পরিবহন ধর্মঘটে ফলে অসহায় অনেক যাত্রী ভিড় করছেন ট্রেন  কিন্তু সেখানেও ছিল প্রচণ্ড ভিড় হওয়ায় অনেকের ভাগ্যে মিলছে না টিকিট। চ্যাপ্টা হয়ে দাঁড়িয়ে অনেকেই ঢাকাসহ বিভিন্ন জায়গায় যাচ্ছেন আবার আসছেন। টিকিট কিনতে কেউ কেউ পড়ছেন কালো বাজারির হাতে।

সোমবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) সকালে ট্রেনে ঢাকা থেকে খুলনায় আসা ওয়েজুল হক বাংলানিউজকে জানান, ধর্মঘটের কারনে ট্রেনের টিকিটি সংগ্রহে মানুষ ছুটছে রেলওয়ে স্টেশনে কালোবাজারিদের কাছে। এ সুযোগটাই লুফে নিচ্ছে দালাল সহ বিভিন্ন কুচক্রী মহল। কালোবাজারে টিকিট বিক্রি সহ বিনা টিকিটে যাত্রীদের উঠিয়ে দিচ্ছে তারা।
 
খাবার ও টয়লেটের জায়গায় যাওয়া উপায় ছিলো না।   সিট প্রাপ্ত যাত্রী দু ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকেও তার নির্দিষ্ট বগিতে যেতে পারছিলেন না বলে জানান তিনি।

চিত্রা ট্রেনে ভ্রমনে দুর্ভোগের কথা জানাচ্ছেন ওয়েজুলের সাথে থাকা অনেক যাত্রী। ঢাকা থেকে খুলনা গামী চিত্রা এক্সপ্রেস সিট বহির্ভুত এমন সংখ্যক যাত্রী তুলেছে যেন একচুল নড়ার জায়গা ছিল না। যে কারণে অনেকেই দীর্ঘ ১০ ঘণ্টার ভ্রমনে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন।

খুলনা জেলা বাস মিনিবাস কোচ মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. আনোয়ার হোসেন সোনা  বাংলানিউজকে বলেন, জামির হোসেনকে অন্যায়ভাবে সাজা দেওয়া হয়েছে। এর প্রতিবাদে আমরা অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট পালন করছি।

দাবি না মানা পর্যন্ত ধর্মঘট চলবে বলে জানান তিনি।

এদিকে, পরিবহন ধর্মঘট চলাকালে দফায় দফায় প্রতিবাদ সমাবেশ করেছেন পরিবহন শ্রমিক নেতারা।
 
তারা বাস চালক জামির হোসেনের সাজা ফের বিবেচনা করা না হলে আন্দোলন অব্যাহত রাখা হবে বলে হুঁশিয়ারি দিচ্ছেন।

২০১১ সালের ১৩ আগস্ট ঢাকা-মানিকগঞ্জ সড়কের জোকা এলাকায় চুয়াডাঙ্গা ডিলাক্সের একটি বাসের সঙ্গে মাইক্রোবাসের সংঘর্ষে চলচ্চিত্রকার তারেক মাসুদ ও সাংবাদিক মিশুক মুনীরসহ ৫ জন নিহত হন। এ ঘটনায় দায়ের করা মামলায় গত বুধবার মানিকগঞ্জ অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত চালক জামির হোসেনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ প্রদান করেন। যার প্রতিবাদে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন খুলনা বিভাগীয় কমিটি অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট পালন করছে।

বাংলাদেশ সময়:  ১০১৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০১৬
এমআরএম/বিএস

 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।