ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

লোকবল সংকট নিরসনে শিগগিরই ব্যবস্থা নেওয়া হবে

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫২২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৬, ২০১৭
লোকবল সংকট নিরসনে শিগগিরই ব্যবস্থা নেওয়া হবে কারা সপ্তাহ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

কাশিমপুর কারাগার থেকে: কারাগারে বিভিন্ন ধরনের বন্দি থাকে। তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত ও নিয়ন্ত্রণ অনেকটা কষ্টসাধ্য বিষয়। সে তুলনায় জনবলও সংকট রয়েছে। কারাগারে থাকা বন্দিদের সুরক্ষায় এবং তাদের সংশোধন ও পুনর্বাসন কাজের সুবিধার্থে লোকবল সংকট নিরসনের ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

শিগগিরই কারাগারের লোকবল বৃদ্ধির জন্য ৩ হাজার ১০৭ জন নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হবে বলেও জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল।

রোববার (২৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে গাজীপুরের কাশিমপুর কারা কমপ্লেক্স প্রাঙ্গণে ‘কারা সপ্তাহ-২০১৭’ উপলক্ষে কারা কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের এক দরবারে তিনি এ কথা বলেন।

 

এর আগে ফজরের নামাজের পর সব কারা মসজিদে মিলাদ ও দোয়া মাহফিলের মাধ্যমে কারা সপ্তাহ-২০১৭ এর সূচনা করা হয়। এরপর বেলা ১১টায় গাজীপুরের কাশিমপুর কারা কমপ্লেক্স প্রাঙ্গণে এবারের কারা সপ্তাহের উদ্বোধন ঘোষণা করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বন্দিদের সংশোধন করে সমাজে পুনর্বাসনের মাধ্যমে তাদের নতুন জীবনের আশ্বাস দিতে পারি, সেই লক্ষ্যে আমরা কাজ করছি। কারাগারে বিভিন্ন ধরনের আসামি থাকে, তারা যেনো সংশোধন হয়ে সমাজের জন্য যেনো ভালো কিছু করতে পারে সেজন্য কারা কর্তৃপক্ষও কাজ করছে।  

এ সময় কারা দরবারে কারা কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা তাদের বিভিন্ন দাবি উত্থাপন করেন। প্রতিটি কারাগারে অন্তত ২টি অ্যাম্বুলেন্স ও ২টি পিকআপ ভ্যান বরাদ্দ, নিরাপত্তা নিশ্চিতে বডি স্ক্যানার স্থাপন, কর্মরত কারা কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের জন্য আবাসন নির্মাণ, অন্যান্য বাহিনীর মতো সমহারে ভাতা সুবিধা প্রদান, চাকরির গ্রেড সমতা আনা, ফ্রেস মানি (রসদ) ভাতা প্রদান, শিক্ষা নিশ্চিতে উন্নতমানের স্কুল স্থাপনের দাবি জানানো হয়।  

কারা মহাপরিদর্শক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ ইফতেখার উদ্দীন বলেন, বন্দিদের চিকিৎসার সুবিধা নিশ্চিতে ও প্রয়োজনে হাসপাতালে পাঠানো জন্য প্রতিটি কারাগারেই অ্যাম্বুলেন্স থাকা প্রয়োজন।  

এজন্য প্রতিটি কারাগারে অন্তত ২টি করে অ্যাম্বুলেন্স এবং কারাগারের কাজের সুবিধার্থে ২ পিকআপ বরাদ্দ দিতে সুপারিশ করেন মহাপরিদর্শক।  

কারাগারের নিরাপত্তা: যেসব কারাগারে জঙ্গি ও দুর্ধষ সন্ত্রাসীদের রাখা হয়, সেসব কারাগারে নিরাপত্তা শতভাগ নিশ্চিত করতে বডি স্ক্যানার স্থাপনের জন্য সুপারিশ করা হয়।
 
কারা কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা ১৭তম গ্রেডের চাকরিতে যোগদান করেন এবং ১৩তম গ্রেড পর্যন্ত শেষ সময় অবসর গ্রহণ করেন। এই সময়সীমা ৯ম গ্রেডে উন্নিত করার সুপারিশ জানান মহাপরিদর্শক।  

আবাসন সুবিধা: কারাগারে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বসবাসের জন্য পর্যাপ্ত আবাসন নেই। অনেকেই কারাগারের আশেপাশের এলাকায় ভাড়াবাড়িতে থাকেন। এতে তাদের সঠিক সময় দায়িত্ব পালনে ব্যাঘাত ঘটে। এছাড়াও কারারক্ষীদের জন্য মানসম্মত ব্যারাক নির্মাণ প্রয়োজন।  

পাশপাশি কর্মরত কারা কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সন্তানদের ভবিষ্যতের বিবেচনা করে মানসম্মত স্কুল নির্মাণের সুপারিশও করা হয়।  

সরকারের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর অন্যান্য ইউনিট বিভিন্ন ভাতার সুবিধা পেয়ে থাকেন। কিন্তু তাদের মতো এসব সুযোগ সুবিধা ভাতা না পেয়ে এসবের সুপারিশ জানান কারারক্ষী রব্বেল মিয়।  

উত্থাপিত দাবিগুলো একেবারেই যৌক্তিক উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেন, আপনাদের সব দাবিগুলো যৌক্তিক। অন্যান্য বাহিনীর মতো আপনাদেরও সুবিধা দেওয়া হবে।

কারা মহাপরিদর্শককে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, আপনারা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা বিভাগের সচিবের সঙ্গে আলোচনা করুন। আপনাদের দাবি এবং সমস্যাগুলো বের করে একটি প্রতিবেদন দেন। দাবিগুলো পূরণ এবং সমস্যাগুলো সমাধানের জন্য আলোচনা করা হবে।  

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এও বলেন, জেল কোড অনুযায়ী আপনাদের সুযোগ সুবিধা বরাদ্দ হয়েছে। যদি প্রয়োজন হয় তবে আমরা জেল কোড সংশোধন করে আপনাদের যৌক্তিক দাবিগুলো পূরণ করবো।  

বাংলাদেশ সময়: ২১২০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৬, ২০১৭
এসজেএ/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
welcome-ad