এতে চলতি মৌসুমে এই জেলায় আমের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।
প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষয়ক্ষতি না হলে জেলায় এ বছর বিভিন্ন জাতের ৫০ হাজার মেট্টিক টন আম উৎপাদন হবে বলে আশা করছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে জেলার তিন হাজার ৯৫০ হেক্টর জমিতে আমের আবাদ হয়েছে। আর আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৫০ হাজার মেট্রিক টন। যা গেলোবারের তুলনায় ১৫ মেট্রিক টন বেশি।
সবকিছু ঠিক থাকলে উৎপাদিত আম এ বছরও রপ্তানি হবে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে। এজন্যও নেয়া হচ্ছে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি। এরই মধ্যে রপ্তানির লক্ষ্যে জেলার কলারোয়া উপজেলার ১০০টি, দেবহাটা উপজেলার ৪০টি, তালা উপজেলার ৮৭টি ও সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ১৫০টিসহ মোট ৩৭৭টি বাগান নির্বাচন করা হয়েছে। সূত্র মতে, গেলো মৌসুমে সাতক্ষীরা থেকে ২৩ মেট্রিক টন আম ইউরোপের বাজারে রপ্তানি হয়েছিল। আর চলতি মৌসুমে রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ২০০ মেট্রিক টন।
রপ্তানিযোগ্য আম উৎপাদনের জন্য নির্ধারিত বাগানের সাড়ে ১৪ হাজার হিমসাগর, ল্যাংড়া ও আম্রপালি জাতের আম গাছ রয়েছে নিবিড় পরিচর্চায়। কৃষি বিভাগের তত্ত্বাবধানে চলছে বিষমুক্ত আম উৎপাদন কার্যক্রম।
ইতোমধ্যে নির্ধারিত বাগানগুলো পরিদর্শন করেছেন কোয়ারেন্টাইন বিভাগ, বাংলাদেশ ফ্রুট অ্যান্ড ভেজিটেবল এক্সপোর্টার অ্যাসোসিয়েশন, রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান ইসলাম এন্টারপ্রাইজ ও দীপ ইন্টারন্যাশনাল, হর্টেক্স ফাউন্ডেশন ও এফএও’র ফুড সেলের প্রতিনিধিরা।
এদিকে, আম বাগান কিনতে ঢাকা, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন জেলার ব্যবসায়ীরা আসছেন সাতক্ষীরায়। মুকুলের ওপর ভিত্তি করেই চলছে বাগান বেচাকেনা।
সাতক্ষীরা পৌরসভার রাজার বাগান এলাকার বাগান মালিক গাজী মিন্টু বাংলানিউজকে জানান, তার এক বিঘার একটি আম বাগান রয়েছে। মুকুলে মুকুলে ভরে গেছে তার বাগানের হিমসাগর, আম্রপালি ও মল্লিকা জাতের আম গাছ। বাগান কেনার জন্য অনেকেই যোগাযোগ করছেন তার সঙ্গে। সাতক্ষীরা সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আমজাদ হোসেন বাংলানিউজকে জানান, সাতক্ষীরায় উৎপাদিত হিমসাগর, ল্যাংড়া, গোবিন্দভোগ, আম্রপালি, মল্লিকা, সিঁদুররাঙা, ফজলি, কাঁচামিঠা, বোম্বাই, লতাবোম্বাই আম অত্যন্ত সুস্বাদু। এছাড়া মাটি, আবহাওয়া ও পরিবেশগত কারণে এখানকার বাগানের আম অন্যান্য জেলার তুলনায় আগে পাকে। তাই এর কদরও বেশি।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কাজী আব্দুল মান্নান বাংলানিউজকে বলেন, সাতক্ষীরা এখন আমের ব্রান্ড। বিদেশে রপ্তানিসহ রাজধানীর বড় বড় শপিং মলে ব্রান্ডিং করে সাতক্ষীরার আম বিক্রি হয়।
তিনি বলেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষয়ক্ষতি না হলে গতবারের চেয়ে দশ গুণ বেশি আম এ বছর রপ্তানি করা সম্ভব হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৫২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৬, ২০১৭
এসআই