ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

পৌরসভায় দায়সারা টিউবওয়েল-টয়লেট নির্মাণ

মফিজুল সাদিক, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০৩৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৬, ২০১৭
পৌরসভায় দায়সারা টিউবওয়েল-টয়লেট নির্মাণ  ছবি: টিউবওয়েল-টয়লেট

ঢাকা: ২৯টি জেলার পৌরসভাগুলোতে দায়সারাভাবে টিউবওয়েল-টয়লেট নির্মাণ করা হয়েছে। টিউবওয়েল নির্মাণ করা হলেও অধিকাংশ স্থানে আর্সেনিক পরীক্ষা করা হয়নি। অধিকাংশ টয়লেটের লোহার তৈরি প্রবেশ গেটেও মরিচা পড়েছে। কিছু কিছু টয়লেটের সিঁড়িতে ব্যবহৃত টাইলসও উঠে গেছে।

পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে এসেছে।
 
চলমান ‘থানা সদর ও গ্রোথ সেন্টারে অবস্থিত পৌরসভাগুলোতে পাইপলাইনের মাধ্যমে পানি সরবরাহ ও এনভায়রনমেন্টাল স্যানিটেশন নির্মাণ’ প্রকল্পের বিষয়ে প্রতিবেদন তৈরি করেছে আইএমইডি।


 
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলমান প্রকল্পের আওতায় পৌরসভাগুলোতে গত বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত ১৮০টি টেস্ট টিউবওয়েল, ১৪৭টি পাবলিক টয়লেট ও ১০৫টি প্রোডাকশন ওয়েল স্থাপন করা হয়েছে। অনেক টিউবওয়েলে পানির আর্সেনিকসহ গুরুত্বপূর্ণ উপাদান পরীক্ষা করা হয়নি। দায়সারাভাবে নির্মাণ করা টয়লেটগুলোও।
 
বরিশাল, বরগুনা, ভোলা, ঝালকাঠি, পটুয়াখালী, চাদপুর, চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, লক্ষীপুর, জামালপুর, কিশোরগঞ্জ, ময়মনসিংহ, নেত্রকোনা, টাঙ্গাইল, মাদারীপুর, রাজবাড়ী, চুয়াডাঙ্গা, যশোর, ঝিনাইদহ, কুষ্টিয়া, সাতক্ষীরা, নওগা, পাবনা, দিনাজপুর, নীলফামারি, হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজার, সুনামগঞ্জ ও সিলেট জেলার ৪৬টি পৌরসভায় প্রকল্প বাস্তবায়নে গড়িমসি করা হয়েছে।
 
২০১২ সালের জুলাই থেকে ২০১৫ সালের জুন মেয়াদে প্রকল্প বাস্তবায়নের সময় বেধে দেওয়া হয়েছিলো। দ্বিতীয় ধাপে ২০১৬ সালের জুন ও তৃতীয় ধাপে ২০১৮ সালের জুন পর্যন্ত সময় বাড়ানো হচ্ছে। মোট ব্যয় বেড়ে দাঁড়াচ্ছে ৩১৫  কোটি ৫৬ লাখ টাকা। এরপরও বহু কাজ বাকি।
 
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রকল্পের অগ্রগতি ৬৫ কোটি ৯৪ লাখ টাকা। ফলে আর্থিক অগ্রগতি মাত্র ২০ দশমিক ৯০ শতাংশ। মাত্র দেড় বছর মেয়াদ বাকি থাকলেও বাকি ২৪৯ কোটি ৬১ লাখ ৫৪ হাজার টাকা খরচ হয়নি। এভাবে কাজ চলতে থাকলে ৭৯ শতাংশ টাকা খরচ হবে না বলে জানিয়েছে আইএমইডি।
 
আইএমইডি’র প্রতিবেদনে দেখা গেছে, চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ পৌরসভায় একটি প্রোডাকশন টিউবওয়েল, ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট, ২৩ কিলোমিটার পাইপলাইন, পাঁচটি পাবলিট টয়লেট নির্মাণ করা হয়েছে। এসব টয়লেটে লোহার তৈরি গেটে ধরেছে মরিচা। টয়লেটে প্রবেশের সিঁড়িতে স্থাপিত টাইলস নড়বড়ে হয়ে উঠে গেছে। এমনকি টয়লেটেগুলোতে ছিটকিনি দেয়া যায় না। বেসিনেও ধুলা-বালি পড়ে সব সময় ময়লা হয়ে থাকে। রক্ষণাবেক্ষণেও অবহেলা দেখেছে আইএমইডি।
 
টয়লেটের পানি ব্যবহারে পাইপগুলো পরিকল্পনা অনুসারে স্থাপিত হয়নি। পাম্পের সাহায্যে টয়লেটের ওপরের ট্যাংকিতে পানি তুলতে মাটির ওপর দিয়ে পাইপ দেয়া হয়েছে। ফলে টয়লেট ব্যবহার করতে গিয়ে পাইপগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা করছে আইএমইডি।
প্রকল্পের আওতায় অনেক স্থানে জমি না পাওয়ায় টেস্ট টিউবওয়েল স্থাপন করা সম্ভব হয়নি। কিছু স্থানে মাত্রাতিরিক্ত স্যালাইনিটি উপস্থিত থাকার কারণেও প্রোডাকশন ওয়েল স্থাপন করা হয়নি।

আইএমইডি’র প্রতিবেদন প্রসঙ্গে প্রকল্প পরিচালক শামছুল হক ভূঁইয়া বাংলানিউজকে বলেন, ‘চলমান প্রকল্পে কিছু অসঙ্গতি দেখা দিয়েছে। আশা করি, ঠিকাদারকে দিয়ে কাজগুলো অতিরিক্ত সময়ের মধ্যে সম্পূর্ণ করতে পারবো। আমরা সমস্ত কাজ একসঙ্গে হাত দিচ্ছি। কাজের কোনো অসঙ্গতি আর থাকবে না’।
 
তিনি বলেন, ‘মনে হয় না বর্ধিত মেয়াদ ২০১৮ সালের জুনের মধ্যে প্রকল্পের সমস্ত কাজ সম্পন্ন করতে পারবো। তবে টাকা না বাড়িয়ে আরও একবার সময় বাড়ানো হতে পারে’।
 
বাংলাদেশ সময়: ০৬৩৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৬, ২০১৭
এমআইএস/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
welcome-ad