ঢাকা, বুধবার, ৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

বাবার মতো বড় অফিসার হতে চায় সাদাকাত

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯৫১ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০১৭
বাবার মতো বড় অফিসার হতে চায় সাদাকাত সাদাকাত সাবরি বিন মোমিন

ঢাকা: আট বছরের শিশু সাদাকাত সাবরি বিন মোমিন। মায়ের হাত ধরে এসেছে বিডিআর হত্যাযজ্ঞের শহীদ বাবার কবরে শ্রদ্ধা জানাতে। পৃথিবীর মুখ দেখার ১১ দিন আগেই ছোট্ট সাদাকাত হারায় তার বাবাকে।
 

শৈশবের চঞ্চলতায় এখনো বাবাকে হারানোর শোক ছুঁতে পারেনি তাকে। তবে এতোদিনে বুঝতে শিখেছে, বাবার কী হয়েছিল?
 
বাবার আদর-স্নেহ, ভালোবাসা বঞ্চিত শিশুটি ভাগ্যের নির্মম পরিহাসও বুঝে ওঠেনি।

তবে খেলার ছলে হলেও ধারণ করে চলেছে বাবার আদর্শ। তাইতো তার সরল স্বীকারোক্তি, ‘বাবার মতো বড় অফিসার হতে চাই’।
 
২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি পিলখানা সদর দফতরে তৎকালীন বিডিআরের (বর্তমান বিজিবি) পথভ্রষ্ট কিছু সদস্যের হামলায় ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তাসহ নিহত হন ৭৪ জন। শহীদ সেনা সদস্যদের একজন সাদাকাত সাবরি বিন মোমিনের বাবা মেজর মো. মমিনুল ইসলাম সরকার।
 
শনিবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর বনানীতে সামরিক কবরস্থানে শহীদ মমিনুল ইসলামের কবরে শ্রদ্ধা জানাতে আসেন স্ত্রী সানজানা সোনিয়া ও সন্তান সাদাকাত।
 
বাংলানিউজকে সোনিয়া বলেন, ‘ওর বাবা মারা যাওয়ার ১১ দিন পর ০৯ মার্চ সাবরির জন্ম হয়। ওর বাবার লিখে যাওয়া নামেই তার নাম রাখা হয়েছে’।
 
তিনি বলেন, তার বাবা জানতেন না যে, আমাদের ছেলে হবে, নাকি মেয়ে হবে। তিনি ছেলে ও মেয়েদের অনেকগুলো নাম লিখে রেখেছিলেন। সেখান থেকেই ছেলের নাম রাখা হয়’।
 
সাদাকাত বর্তমানে স্যার জন উইলসন স্কুলে ১ম শ্রেণিতে পড়ছে। সে বলে, ‘বাবাকে দেখতে ইচ্ছে করে। বাবার মতো বড় অফিসার হতে চাই’।
 
সাদাকাতের মা সোনিয়া বলেন, ‘বাচ্চা মানুষ সাবরি, তাকে সব সময়ই বিষয়গুলো পজিটিভলি বুঝানোর চেষ্টা করি। কিন্তু কোথা থেকে কিভাবে যেন সে ইদানিং বলে, আমি বাবার মতো বড় অফিসার হবো। তারপর যারা বাবাকে মেরেছে, তাদেরকে আমি গুলি করে মারবো’।
 
এ ঘটনার বিচার প্রক্রিয়া সম্পর্কে সোনিয়া বলেন, ‘বিচার যা হবার তা হয়েছে। কিন্তু দ্রুত এই রায় কার্যকর চাই’।
 
নারকীয় এ হত্যাকাণ্ডের পর ওই বছরের ২৮ ফেব্রুয়ারি লালবাগ থানায় হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে দু’টি মামলা হয়। পরে মামলা দু’টি নিউমার্কেট থানায় স্থানান্তরিত হয়। ঢাকা মহানগর তৃতীয় বিশেষ আদালতের বিচারক মো. আখতারুজ্জামান ২০১৩ সালের ৫ নভেম্বর মামলার রায় ঘোষণা করেন।
 
রায়ে বিডিআরের সাবেক ডিএডি তৌহিদসহ ১৫২ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। এ ছাড়া ১৬০ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং ২৫৬ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেওয়া হয়। অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় ২৭৭ জনকে খালাস দেওয়া হয়।
 
বিচারিক আদালতের রায়ের পর ডেথ রেফারেন্স হাইকোর্টে আসে। বিভিন্ন সময়ে আসামিরা দণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে আপিল ও জেল আপিল করেন। এর মধ্যে ৬৯ জনকে খালাসের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন রাষ্ট্রপক্ষ। বর্তমানে আসামির ডেথ রেফারেন্স (মৃত্যুদণ্ড অনুমোদন) ও আপিলের ওপর শুনানি হাইকোর্টে চলমান রয়েছে।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৫৪৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০১৭
পিএম/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।