ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

আইপিইউ সম্মেলন 

‘বাংলাদেশ শো-কেস’ বলবে ‘ঘুরে দাঁড়ানোর গল্প’  

রহমান মাসুদ, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৪৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০১৭
‘বাংলাদেশ শো-কেস’ বলবে ‘ঘুরে দাঁড়ানোর গল্প’  

ঢাকা: বিশ্ববাসীকে বাংলাদেশের উজ্জ্বল বর্তমান জানাতে ইন্টারপার্লামেন্টারি ইউনিয়ন সম্মেলনকে (আইপিও) কাজে লাগাবে সরকার। দেশের ক্রমবর্ধমান অগ্রগতি, শিল্পায়ন, কৃষি প্রযুক্তির ব্যবহার, নারী শিক্ষার অগ্রগতি ও ক্ষমতায়ন, গ্রামীণ অর্থনীতির বিকাশ, কমিউনিটি ক্লিনিক ও ইউনিয়ন তথ্য সেবাসহ বদলে যাওয়া দেশের চিত্র আইপিও সম্মেলনে তুলে ধরবে বাংলাদেশ।

বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ ও ইন্টার পার্লামেন্টারি ইউনিয়নের যৌথ উদ্যোগে আগামী ২৯ মার্চ থেকে ৫ এপ্রিল ঢাকায় এ বৈশ্বিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।
 
বিশ্বের সকল জাতীয় সংসদের দেড় হাজার সংসদ সদস্য, স্পিকার ও প্রতিনিধির এ সম্মেলনে দেশের ইতিবাচক সকল দিক প্রকাশের  এ প্রচেষ্টার নাম দেওয়া হয়েছে ‘বাংলাদেশ শো-কেস’।

এর মাধ্যমে দেশের ইতিহাস-ঐতিহ্যের পাশাপাশি ‘বাংলাদেশের ঘুরে দাঁড়ানোর গল্প’ তুলে ধরার পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার।
 
বৃহস্পতিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) ওই সম্মেলনকে সামনে রেখে আন্তঃমন্ত্রণালয় সভার আয়োজন করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিসহ কয়েকজন সংসদ সদস্য সভায় উপস্থিত ছিলেন।  

সভায় বাংলাদেশ শো-কেসের মূল প্রতিপাদ্য নিয়েও আলোচনা হয়।
 
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় জানায়, বাংলাদেশ শো-কেসে দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের ধারাবাহিকতা তুলে ধরতে ঐতিহ্যবাহী পাটপণ্য, বস্ত্র, এসএমই ফাউন্ডেশেন কার্যক্রম, সোলার প্যানেল, আইসিটি অগ্রগতি, কমউনিটি ক্লিনিক মডেল, মা ও শিশু স্বাস্থ্যের অগ্রগতি, কুটির শিল্প প্রতিষ্ঠান আড়ং, জামদানি, মসলিন, তাঁত পণ্য, সিল্ক, সিরামিক, আসবাবপত্র, তৈজসপত্র, মেলামাইন, গামেন্টস ওয়্যার, লেদার প্রোডাক্ট, পার্ল, ডায়মন্ড, রেশমী চুড়ি, মেটাল অর্নামেন্ট, হাতে বানানো পুতুল, আদিবাসী কুটির শিল্প, প্লাস্টিক পণ্যসহ বিভিন্ন ঐতিহ্যবাহী বাংলাদেশি পণ্যের প্রদর্শনী করা হবে।
 
সম্মেলনে আসা দেড় হাজার অতিথির সামনে বাংলাদেশের উৎপাদিত পণ্য সামগ্রীর পাশাপাশি বিভিন্ন ক্ষেত্রে সরকারের সফলতা, দেশের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য তুলে ধরা হবে। এতে বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের প্রচলিত ও অপ্রচলিত পণ্যের বাজার যেমন সম্প্রসারিত হবে, তেমনি দেশের ভাবমূর্তিও উজ্জ্বল হবে বলে মনে করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
 
বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেন, প্রথমে দুই লাখ ৪০ হাজার বর্গফুট এলাকা জুড়ে বাংলাদেশ শো-কেস আয়োজনের কথা ভাবা হলেও নিরাপদ ও জাকজমকপূর্ণ করতে এক থেকে দেড় লাখ বর্গফুটের মধ্যেই এ আয়োজনের সিদ্ধান্ত হয়েছে। বিভিন্ন ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানির কাছ থেকে ধারণা নিয়ে একটি নকশা চূড়ান্ত করা হবে। সরকারি অর্থায়নে সম্ভব না হলে প্রধানমন্ত্রীর ইচ্ছা পূরণে প্রয়োজনে ব্যবসায়ীদের সহায়তা নেওয়া হবে।
 
তিনি জানান, আগারগাঁওয়ের বঙ্গবন্ধু সম্মেলন কেন্দ্রের পাশের বাণিজ্য মেলার মাঠে বাংলাদেশ শো-কেস আয়োজনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ সম্মেলন সফল ভাবে সম্পন্ন করতে পারলে বাংলাদেশের গণতন্ত্র চর্চা ও অগ্রযাত্রায় এটি একটি মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হবে। উদার, গণতান্ত্রিক ও আদর্শ রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশের ভাবমূর্তিও উজ্জ্বল হবে।
 
বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘কোনো দেশে আন্তর্জাতিক সম্মেলন হলে সে দেশকে তুলে ধরার সুযোগ থাকে। ১৯৯৬ সালে আমরা যখন ক্ষমতায় এসেছিলাম, তখন এখানে ন্যাম কনফারেন্স হওয়ার কথা ছিল। যদিও সেটা শেষ পর্যন্ত হয়নি। তবে এবার আইপিউ সম্মেলন হতে যাচ্ছে’।
 
মন্ত্রী বলেন, ‘প্রথমবারের মতো আমাদের দেশে এ সম্মেলন হচ্ছে। সম্মেলনে আমরা বিশ্বের কাছে ইতিবাচক বাংলাদেশকে দেখাতে চাই, আমাদের ইতিহাস-ঐতিহ্য দেখাতে চাই’।
 
তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘সারা বিশ্ব আজ আমাদের উন্নয়নের প্রশংসা করছে। আমরা তাদেরকে বাংলাদেশের এ বিস্ময়কর উত্থানের চিত্র দেখাতে চাই। পৃথিবীর কেউ ভাবেনি যে, এতো অল্প সময়ের মধ্যে মুক্তিযুদ্ধের ক্ষত সারিয়ে বাংলাদেশ ঘুরে দাঁড়াতে পারবে। সেই ক্ষত পূরণ করে আমরা আন্তর্জাতিক বিশ্বে এই অবস্থানে দাঁড়াবো’।
 
তিনি বলেন, ‘পৃথিবীর যেখানেই যাই, সকলে বাংলাদেশের উত্থানের গল্প শুনতে চায়। আমাদেরকে বলে, বাংলাদেশের উত্থান একটি মিরাকল। যারা একদিন আমাদের শোষণ করেছিল, আমাদেরকে রিক্ত-নিঃস্ব করেছিল, সেই পাকিস্তানের চেয়ে আমরা অনেক এগিয়ে আছি। আমাদের এগিয়ে যাওয়ার এ চিত্রই তুলে ধরা হবে বাংলাদেশ শো-কেসে’।
 
বাংলাদেশ সময়: ০০৪৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৪, ২০১৭ 
আরএম/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।