ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

মাদকের দ্বন্দ্বে খুন হয় খোকন

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৬১৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০১৭
মাদকের দ্বন্দ্বে খুন হয় খোকন মাদকের দ্বন্দ্বে খুন হয় খোকন

ঢাকা: শাহবুদ্দিন, সোহেল ও হানিফ চাঁদনী চক মার্কেটের ছাদে বসে ইয়াবা সেবন করছিল। তাদের আরেক সহকর্মী বাবুল মার্কেটের ছাদে নেশা করতে নিষেধ করলে শুরু হয় তাদের মধ্যে দ্বন্দ্ব।

সেই দ্বন্দ্ব থেকে শাহবুদ্দিন বাবুলকে ছুরিকাঘাত করে। এ সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত খোকনকেও ছুরিকাঘাত করে সে।

শাহবুদ্দিনের ছুরিকাঘাতে আহত বাবুল ব্যাপারী (৩৮) প্রাণে বেঁচে গেলেও নিহত হন খোকন মোল্লা (৩০)।

বুধবার (২২ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে রাজধানীর চাঁদনী চক মার্কেটের তৃতীয় তলায় সিজান রেস্টুরেন্টের সামনে বাবুল ও খোকনকে ছুরিকাঘাত করে শাহবুদ্দিন।

শাহবুদ্দিন, সোহেল, হানিফ, খোকন, বাবুল প্রত্যেকেই গাউসিয়া মার্কেট এলাকার হকার ব্যবসায়ী। তারা একসঙ্গেই চলাফেরা করতেন।

গাউসিয়া এলাকার ফুটপাতের ব্যবসায়ীরা জানান, সোমবার (২০ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে চাঁদনী চক মার্কেটের ছাদে বসে শাহবুদ্দিন, সোহেল, হানিফসহ কয়েকজন মিলে ইয়াবা সেবন করছিলো।

এই খবর পেয়ে হকার বাবুল ছাদে গিয়ে তাদেরকে এসব না করার জন্য বলেন। পরে কথা না শুনলে শাহবুদ্দিনকে একটি চড় মারেন বাবুল এবং সেখান থেকে তাদেরকে বের করে দেন।

কসমেটিকস আইটেমের হকার ব্যবসায়ী জনি বাংলানিউজকে জানান, সোমবারের ঝগড়ার বিষয়টি বাবুল জানিয়েছিলেন। বাবুল বলেছিলেন,‘এই জায়গাটি আমাদের রুটি-রুজির জায়গা। এই জায়গায় বসে এমন মাদক সেবন করলে আমাদেরই বদনাম হবে। তাই আমি ওদেরকে নেশা করতে নিষেধ করেছি। ’

জনি আরো জানান, এরপর বুধবার সিজান হোটেলে খেতে যান বাবুল ও খোকন। শাহবুদ্দিন তখন তাদের সঙ্গে হোটেলে কথা বলতে যায়। কথার মধ্যেই শাহবুদ্দিন সঙ্গে আনা ছুরি দিয়ে প্রথমে খোকন ও বাবুলকে আঘাত করেন। সাথে সাথেই তাদের উদ্ধার করে ঢামেকে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসক খোকনকে মৃত ঘোষণা করেন। বাবুল বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

এদিকে, নিহত খোকনের স্ত্রী মনিরা ঢামেকে বাংলানিউজকে জানান, তাদের পিয়া (১২), আছিয়া (৮) ও আনিকা (২) নামে তিন মেয়ে রয়েছে। খোকন তাদের নিয়ে কামরাঙ্গীরচর এলাকায় থাকতেন।

কাঁদতে কাঁদতে তিনি বলেন, ‘তিন সন্তানকে নিয়ে আমি কী করবো? কই যাবো? আমি আমার স্বামীর খুনের বিচার চাই। ’

বুধবার (২২ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে ঘটনাস্থল সিজান হোটেলে গিয়ে মারামারির কোন আলামত দেখা যায়নি। ছুরিকাঘাত করলেও হোটেলের ভেতর ও সামনে কোথাও রক্তের দাগ দেখা যায়নি।

এদিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হোটেলের আট কর্মচারীকে নিয়ে যায় পুলিশ। হোটেলের সামনে অন্যান্য দোকানিরাও এ সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু জানাতে পারেননি।

গাউসিয়ার সামনে শাহবুদ্দিনের ফুটপাতের দোকানে গিয়ে দেখা গেছে, পলিথিন দিয়ে মোড়ানো অবস্থায় দোকানটি পড়ে আছে। ঘটনার পর থেকেই শাহবুদ্দিন পলাতক রয়েছেন।

এই এলাকার অন্য হকার ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শাহবুদ্দিনের গ্রামের বাড়ি বরিশাল। রাজধানীর কামরাঙ্গীরচরে তার বাসা।

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ( ডিএমপি) রমনা বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মারুফ হোসেন সরদার ঘটনাস্থলে বাংলানিউজকে বলেন, দোকানের কর্মচারীদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সাক্ষী হিসেবে তাদের জবানবন্দি রেকর্ড করা হবে। অভিযুক্ত শাহবুদ্দিনকে আটকের চেষ্টা চলছে বলেও জানান তিনি।

**রাজধানীতে ছুরিকাঘাতে ব্যবসায়ীর মৃত্যু

বাংলাদেশ সময়: ১২১৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০১৭
পিএম/এএটি/আরআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।