ঢাকা, শুক্রবার, ৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

‘আমার পোলাডারে ভালা কইরা দেন’

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪২২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২০, ২০১৭
‘আমার পোলাডারে ভালা কইরা দেন’ দুর্ঘটনায় পা হারানো মো. রাজু

ঢাকা: ‘পোলাডা ছাড়া খাওন দাওন চালানোর আর কেউ আছিল না। সংসারে এর বড় অবদান আছিল। হেই পুলা আজ পইড়া আছে। ভালা হইতাছে না। গ্রামে ছোট পুলা মাইয়া রাইখ্যা আইছি। একমাস হইছে তারা কি করতাছে, কি খাইতাছে কইতে পারি না। আপনেরা আমার পুলাডারে ভালা কইরা দেন।’

এভাবেই কান্না বিজড়িত কন্ঠে  বাংলানিউজকে বলছিলেন আট সদস্যের পরিবারের উপার্জনক্ষম হাসপাতালের বেডে শয্যাশায়ী মো. রাজুর ম‍া।  মো. রাজুর বয়স ২১।

তিন ভাই ও তিন বোনের মধ্যে সবার বড়। গ্রামের বাড়ি খাগড়াছড়ি জেলার রামগড় থানার তৈচালাপাড়া গ্রামে। বাবা কামালউদ্দিন দীর্ঘদিন অসুস্থ হয়ে বিছানায় পড়ে আছে। সহায় সম্পদ বলতে ভিটাবাড়ি ছাড়া আর কিছুই নেই। বাবা মা ও ভাইবোনদের মুখে খাবার তুলে দিতে অল্প বয়সেই সংসারের হাল ধরেছিল রাজু।

১৮ জানুয়ারি ভোর বেলায় ঢাকা চিটাগাং রোডে পাটওয়ারী অটো মোবাইলের একটি কাভার্ডভ্যান চালানোর সময় ইউনিক পরিবহনের সাথে ধাক্কা লাগে। ভ্যানটি উল্টে ঘটনাস্থলেই শরীর থেকে তার পা বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। সেখান থেকে স্থানীয় থানার পুলিশ তাকে উদ্ধার  করে ঢাকা মেডিকেল কলেজে ভর্তি করে দেয়। পায়ের সাথে ক্ষতিগ্রস্ত হয় তার গোপনাঙ্গ। ৩০ টির বেশি সেলাই দিয়ে তার বিশেষ অঙ্গকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনা হয়েছে। কেটে ফেলা হয়েছে তার পায়ের পচা অংশ। এখন তার শরীরে প্রতিস্থাপন করা হবে বিশেষ পা।

ঢাকা মেডিকেলের কর্তব্যরত চিকিৎসক ড. আলী আকবার বাংলানিউজকে বলেন, রাজুর পা এমনিতেই কেটে পড়ে গিয়েছিল। ওখান থেকে  বাকি যে অংশ নষ্ট হয়ে গিয়েছিল সেটা ফেলে দিয়ে কাজ করেছি। সেখান থেকে আবার ইনফেকশন হয়েছে। এরপর আবার কিছু অংশ চলে গেছে। তার শরীরের অন্য অংশ থেকে চামড়া এনে তার কাটা অংশে লাগানো হবে। তারপর কৃত্রিম পা ব্যবহার করে রাজু আবার স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যেতে পারবে। ভারী কোন কাজ করতে পারবে না। তবে হালকা ও ছোট খাটো কাজ করতে পারবে।   

তার চিকিৎসার খরচ কিভাবে যোগানো হচ্ছে জানতে চাইলে তার মা নুরুন্নাহার বলেন, ‘আত্মীয় স্বজনেরা কিছু টাকা দিছে। স্টার লাইনের কাউন্টারে বসে ১০ হাজার টাকা উডাইছি। এলাকার বাজারের লোকজন ৭ হাজার টাকা উডাই দিছে। পুলাডার জন্য দ্বারে দ্বারে গেছি। যে যা দিতাছে তাই নিয়া ৭০ হাজার টাকা উডাইছি। এহন অনেক টাকা লাগবো ‍সুস্থ করে বাড়িত নিতে। ’

রাজু এখন ঢাকা মেডিকেলের ১০২ নাম্বার ওয়ার্ডের ৩ নাম্বার বেডে অবস্থান করছে। তার  চিকিৎসা সহায়তার জন্য সমাজের বিত্তবানদের সহযোগিতা  চেয়েছেন মা নুরুন্নাহার।

সহযোগিতার জন্য রাজুর ব্যক্তিগত মোবাইল নাম্বার ও বিকাশ নাম্বার ০১৮২২০০০০৪২.

বাংলাদেশ সময়: ২০১৩ ঘণ্টা, ২০ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭
এএম/ আরআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।