ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

একুশে ফেব্রুয়ারিতে নাশকতার উদ্দেশ্য ছিলো তাদের

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯৪৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২০, ২০১৭
একুশে ফেব্রুয়ারিতে নাশকতার উদ্দেশ্য ছিলো তাদের নারায়ণগঞ্জ থেকে আটক তিন জেএমবি সদস্য-ছবি:সংগৃহীত

নারায়ণগঞ্জ: নারায়ণগঞ্জে আটক তিন জেএমবি সদস্যের একুশে ফেব্রুয়ারির দিনে নাশকতার উদ্দেশ্য ছিলে বলে প্রাথমিক ভাবে ধারণা করেছেন র‌্যাব সদস্যরা।  

সোমবার (২০ ফেব্রুয়ারি)  দুপুর ২টায় র‌্যাব-১১ সদর দফতরে সংবাদ সম্মেলনে প্রাথমিক ধারণার কথা জানান র‌্যাব-১১ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল কামরুল হাসান।


এর আগে সোমবার সকালে নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন এলাকা থেকে জেএমবির তিন সদস্যকে আটক করে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব) সদস্যরা।


এসময় তাদের কাছ থেকে সাতটি জিহাদি বই, ৪৬টি লিফলেট, পাঁচটি চাকু ও চাপাতি, পাঁচটি ককটেল ও বোমা তৈরির সরঞ্জাম ও দু’টি স্কচটেপ জব্দ করা হয়।

 
আটক জেএমবি সদস্যরা হলেন- ময়মনসিংহ জেলার মুক্তগাছা থানার মোস্তফা (২৫), একই জেলার ফুলবাড়িয়া থানার আবু রায়হান ওরফে হিমেল (২৪) ও ঢাকার ধামরাইয়ের শরিফুল ইসলাম ওরফে শাহীন (২১)।

সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাব-১১ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল কামরুল হাসান বলেন, আমাদের প্রাথমিক ধারণা একুশে ফেব্রুয়ারির দিকে কোনো নাশকতার উদ্দেশ্য ছিল তাদের। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনজনই জেমএবিতে সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেছে। তারা আরও জানিয়েছে, জেএমবির প্রতিষ্ঠাতা ও প্রাক্তন আমির ও মৃত্যুদণ্ড সাজা কার্যকর হওয়া শায়েখ আব্দুর রহমানের পথ অনুসরণকারী। তিনজন তাদের নিজ এলাকায় আসল নাম ব্যবহার করলেও এলাকার বাইরে ছদ্ম নাম ব্যবহার করে সংগঠনের কার্যকলাপ চালিয়ে আসছিলো।


র‌্যাব জানায়, আটক শাহীন ধামরাইয়েল শরীফ বাগ ইসলামিয়া কামেল মাদ্রাসা থেকে নবম শ্রেণি পাশ করেন। তিনি ২০১৫ সালের প্রথম দিকে কাঠ মিস্ত্রির কাজ করার জন্য ঘাটাইলে একটি দোকানে কাজ করতেন।
এরপর ২০১৫ সালে মোস্তফা ও সাকিবের মাধ্যমে জেএমবি সংগঠনে যোগদান করেন এবং সংগঠনের সিদ্ধান্তে তিনি আটক মোস্তফার শালিকাকে বিয়ে করেন। পরে অস্ত্র প্রশিক্ষণের জন্য তিনি প্রস্তুত হয়ে উঠেন। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর জঙ্গি বিরোধী অভিযানের কারণে তিনি নভেম্বর মাসে বাড়ি থেকে পালিয়ে যান।


আটকদের মধ্যে আবু রায়হান বর্তমানে আড়াইহাজারে সরকারি সফর আলী কলেজে সমাজকর্ম বিষয়ে অনার্স তৃতীয় বর্ষে অধ্যায়নরত। ২০১৪ সালের শেষের দিকে তিনি জনৈক তৌহিদের মাধ্যমে জেএমবিতে যোগদান করেন। তৌহিদের মাধ্যমে তার জেএমবির অপর সদস্য সাকিবের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। সাকিবের মাধ্যমে অন্য জেএমবির সদস্য আকাশ, রোকন ও আমিনদের পরিচয় হয়।


২০১৫ সালের শেষের দিকে তিনি চট্টগ্রামে অস্ত্র প্রশিক্ষণ নেন। এরপর ২০১৬ সালের মার্চ মাস থেকে টাঙ্গাইল ও ময়মনসিংহ জেলায় সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচলনা করেন।


অপরজন মোস্তফা পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ালেখা করে তার এলাকার মাদ্রাসায় ভর্তি হয় ও সংসারের অভাব অনটনের কারণে পড়ালেখা বন্ধ হয়ে যায়। এরপর ২০১৩ সালের শেষের দিকে সে নব্য মুসলিম হাসমত নামক একটি অপরিচিত ব্যক্তির মাধ্যমে ধর্মীয় বিষয়ে দীক্ষিত হয়।   তখন থেকে নিয়মিত এলাকায় বিভিন্ন ওয়াজ মাহফিলে যোগ ও জিহাদে উদ্বুদ্ধ হয়।

এরপর ২০১৪ সালের শেষের দিকে তার নিজ গ্রামের সাকিবের মাধ্যমে জেএমবিতে যোগদান করেন। ২০১৫ সালের প্রথম দিকে সাকিবের মাধ্যমে গাজীপুর শালবাড়ী ও শালনা এলাকায় একটি ভাড়া বাসায় তিনিসহ মোট ছয়জন মিলে ২৫ দিনের জিহাদি প্রশিক্ষণ নেন। সাকিবর মাধ্যমে তিনি মোবাইলে ধর্মীয় উগ্রবাদিতার ভিডিও ও লেকচার পেতেন।


তিনি ২০১৫ সালের শেষের দিকে চট্টগ্রামে অস্ত্র প্রশিক্ষণ নেন। এরপর ২০১৬ সালের অক্টোবর মাসে তিনি হিজরতের উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে পালিয়ে যান।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৪৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২০, ২০১৭
এএটি/বিএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
welcome-ad
welcome-ad