ঢাকা, শুক্রবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

দুই বছরেও তৈরি হয়নি ব্লগার অভিজিৎ হত্যা মামলার চার্জশিট 

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮১৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২০, ২০১৭
দুই বছরেও তৈরি হয়নি ব্লগার অভিজিৎ হত্যা মামলার চার্জশিট 

ঢাকা: বিজ্ঞানমনস্ক লেখক ও মুক্তমনা ব্লগের প্রতিষ্ঠাতা অভিজিৎ রায় হত্যা মামলার তদন্ত প্রায় দুই বছরেও শেষ হয়নি। দীর্ঘ এই সময়ে মামলার তদন্ত শেষ করে আদালতে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দাখিল করতে পারেনি ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। 

অভিজিৎ হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সহকারী পুলিশ কমিশনার (ডিবি) ফজলুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, এই হত্যা মামলার রহস্য আমাদের কাছে পরিষ্কার। হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতরা সাংগঠনিক নাম ব্যবহার করেছিল।

তাদেরকে আমরা চিহ্নিত করেছি। তবে, এখনও তাদের প্রকৃত নাম জানতে পারিনি। তাদের প্রকৃত নাম-ঠিকানা পেলেই মামলার চার্জশিট জমা দেওয়া হবে।

এদিকে, গত ৩১ জানুয়ারি বাংলা একাডেমি ও বইমেলা প্রাঙ্গণ পরিদর্শনকালে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ডিএমপি কমিশনার মো. আছাদুজ্জামান মিয়া বলেন, ‘খুব শিগগিরই অভিজিৎ হত্যা মামলার চার্জশিট জমা দেওয়া হবে। ’

তিনি বলেন, এ মামলায় আটজনকে গ্রেফতার করা ছাড়াও কয়েকজনকে শনাক্ত করা হয়েছে। বাকিদের গ্রেফতার করার চেষ্টা চলছে। মূল আসামি মুকুল রানা গত বছরের ১৯ জুন ভোরে খিলগাঁওয়ের মেরাদিয়া বাঁশপট্টি এলাকায় পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে  নিহত হয়েছেন।

এই ঘটনার পরে পুলিশ সংবাদমাধ্যমে একটি ভিডিও ফুটেজ প্রকাশ করে। সেখানে অভিজিৎ ও তার স্ত্রী রাফিদা আহমেদ বন্যাকে অনুসরণকারী হিসেবে এক যুবককে চিহ্নিত করে বলা হয়, এই যুবকই নিহত মুকুল। এই মুকুলসহ ছয়জনকে ধরিয়ে দিতে এর ঠিক একমাস আগে পুরস্কার ঘোষণা করে ডিবি।

২০১৫ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি রাত সোয়া ৯টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি এলাকায় অভিজিৎকে কুপিয়ে হত্যা করে দ‍ুর্বৃত্তরা। এসময় অভিজিতের স্ত্রী বন্যাও গুরুতর আহত হন।  

এ ঘটনায় অভিজিতের বাবা অধ্যাপক অজয় রায় বাদী হয়ে ২৭ ফেব্রুয়ারি সকালে শাহবাগ থানায় মামলা দায়ের করেন। হত্যাকাণ্ডের তদন্তে পুলিশকে সহায়তা করতে ঢাকায় আসে যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা ফেডারেল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (এফবিআই)।

এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহে আটজনকে গ্রেফতার করা হয়। তারা সবাই আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের সদস্য বলে দাবি করে পুলিশ।

আবার চট্টগ্রাম থেকে আটক ব্লগার শফিউর রহমান ফারাবী এবং অনন্ত বিজয় দাস খুনের আসামি মান্নান ইয়াহিয়া ওরফে মান্নান রাহীর বিরুদ্ধে অভিজিৎ হত্যায় প্ররোচণার অভিযোগ আনা হয়েছে।

গ্রেফতার অন্য ছয়জন হলেন- ব্রিটিশ নাগরিক তৌহিদুর রহমান, সাদেক আলী, আমিনুল মল্লিক, জুলহাস বিশ্বাস, আবুল বাশার ও জাফরান হাসান। এদের মধ্যে কেউ সরাসরি অভিজিৎ হত্যাকাণ্ডে অংশ নিতে পারে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

সন্দেহভাজন এসব আসামির ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য এফবিআই ল্যাবে পাঠানো হয়েছে।  

সেখানে ইতোমধ্যে ‘ক্রসম্যাচ’ প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে। তবে, এখন পর্যন্ত এই ক্রসম্যাচ প্রতিবেদন ডিবির হাতে এসে পৌঁছায়নি। আগের আলামতের ডিএনএ রিপোর্টের সঙ্গে সন্দেহভাজন আট আসামির মধ্যে যার ডিএনএ নমুনা মিলে যাবে তিনিই অভিজিৎ হত্যাকাণ্ডের আসামি হবেন বলে ধারণা করছে পুলিশ।

তবে কবে নাগাদ এই হত্যার চার্জশিট আদালতে জমা দেওয়া হবে, এই বিষয়ে স্পষ্ট কোনো ধারণা দিতে পারেনি ডিবি।

বাংলাদেশ সময়: ১৪১৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২০, ২০১৭
এসটি/আরআর/পিসি
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।