ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

এটাও সরকারি কার্যালয়!

টিটু দাস, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৫৩১ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২০, ২০১৭
এটাও সরকারি কার্যালয়! কিশোরগঞ্জে হাওর ও জলাভূমি উন্নয়ন অফিসে কাপড় শুকানোর দৃশ্য। ছবি: টিটু দাস

কিশোরগঞ্জ: রোববার। সকাল সাড়ে ১১টা। মূল গেট দিয়ে চৌহদ্দিতে ঢুকতেই শুকাতে দেওয়া কাপড়-চোপড়ের দঙ্গল। এ যেনো হাওর ও জলাভূমি উন্নয়ন অধিদপ্তর আঞ্চলিক অফিস নয়, কারো বসত বাড়ির উঠোন। একপাশে মাছ ধরার জালও টানিয়ে রাখা বারান্দার গ্রিলে।

পেছনে অফিস ভবনে তালা। পাশেই স্টাফ কোয়ার্টার।

অফিসের মতোই প্রতিটি কোয়ার্টারে তালা। অনেক খোঁজাখুঁজি ‍আর হাঁকডাকের পর কোথা থেকে যেনো উদয় হলেন এক ডাটা এন্ট্রি অপারেটর। নাম তার মো. ইকবাল হোসেন মিয়া। পরিবার না থাকায় রান্নার কাজে ব্যস্ত ছিলেন বলে জানালেন তিনি।

বেলা ১২টা ‍নাগাদ মূল অফিসের তালা খুললেন ইকবাল হোসেন মিয়া। বিভিন্ন কক্ষ ঘুরে দেখা গেলো- ময়লার আস্তর পড়েছে ‘ওয়ার্কিং টেবিল’চেয়ারগুলোতে। মোট ৮ কক্ষের একটিতে টেবিল-চেয়ারে তো রীতিমতো বালুর স্তুপ। হাট করে খোলা আছে গোটা দুই কক্ষের জানালা।

দুপুর ১টা পর্যন্ত অপেক্ষা করার পর ইকবাল মিয়া জানালেন, এ অফিসের দায়িত্বে নিয়োজিত উপ-পরিচালক ড. মো. নুরুল ইসলাম ঢাকায় আছেন। মাঝে মাঝে এখানে এসে ঘুরে যান তিনি। কিশোরগঞ্জে হাওর ও জলাভূমি উন্নয়নক অফিসে ধুলার আস্তর।  ছবি: টিটু দাস

কিন্তু পরে আসা অফিস সহকারী উমায়ের হোসেন বললেন, স্যার (উপ-পরিচালক) সারা মাসেও অফিসে আসেন না। আর আমাদের অফিসে কোন কাজকর্ম নেই। স্যার সব সময় ঢাকায় থাকেন।

তাহলে এ অফিসে আপনারা কি করেন এমন প্রশ্নের উত্তরে অফিস সহকারী বলেন, আমরা শুধু সারাদিন অফিস দেখাশোনা করি।

অফিসে না পেয়ে কল করা হয় উপ-পরিচালক নুরুল ইসলামের মোবাইলে। ঢাকায় আছেন জানিয়ে তিনি বললেন, ওখানে (আঞ্চলিক কার্যালয়) উপ-পরিচালক পদের অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছি। মাঝেমধ্যে তো ওখানে যাই।  

গোটা অফিস ঘুরে দেখা গেলো ডাটা এন্ট্রি অপারেটর থাকলেও কোন কম্পিউটারই নেই হাওর ও জলাভূমি উন্নয়ন আঞ্চলিক অফিসে। ২০১৫ সালের ১০ অক্টোবর এ কার্যালয়ে ডাটা এন্ট্রি অপারেটর পদে যোগ দেন ইকবাল মিয়া। কম্পিউটার তো বটেই, হাওর সম্পর্কিত কোন তথ্যও তার কাছে নেই বলে অবলীলায় জানান তিনি। কিশোরগঞ্জে  তালাবদ্ধ হাওর ও জলাভূমি উন্নয়ন  অফিস।  ছবি: টিটু দাস

কিশোরগঞ্জ জেলা শহরের পূর্ব তারাপাশায় প্রায় ৫০ শতাংশ জায়গার উপর হাওর উন্নয়ন বোর্ড অফিস নির্মাণ করা হয় ২০০০ সালে। ২০১৬ সালে সেটাকে বাংলাদেশ হাওর ও জলাভূমি উন্নয়ন অধিদপ্তরের আঞ্চলিক অফিস হিসেবে ঘোষণা করা হয়। এরপর থেকে অফিস স্টাফদের বেতন নিয়মিত হলেও এ অফিস হাওরের উন্নয়নে কোনো কাজেই লাগছে না।

বাংলাদেশ সময়: ১১৩০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২০, ২০১৬
জেডএম/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।