ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৭ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

কালনী কি এখন খেলনা ট্রেন? 

সাব্বির আহমেদ, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৩২৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২০, ২০১৭
কালনী কি এখন খেলনা ট্রেন? 

ঢাকা: ঢাকা-সিলেট রেলরুটে শিগগিরই জয়ন্তিকা ও উপবন এক্সপ্রেসের কোচসংখ্যা বাড়ানো হচ্ছে। আর গত বছরের শেষদিক থেকে নতুন কোচে চলছে পারাবত এক্সপ্রেস। কিন্তু রেলওয়ের কোনো নজর নেই এ রুটের জনপ্রিয় ট্রেন হিসেবে পরিচিতি পাওয়া কালনী এক্সপ্রেসের দিকে। 

উল্টো ট্রেনটি থেকে একের পর এক কোচ খুলে নেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এয়ারকন্ডিশন ও খাবার কোচহীন ট্রেনটি এখন ‘খেলনা ট্রেন’ রুপে চলছে।

সিলেটগামী যাত্রীদের অভিযোগ, আন্তঃনগর এ ট্রেনে কোনো খাবার গাড়ি নেই। যেখানে সব আন্তঃনগর ট্রেনেই সামনে পেছনে দু’টি খাবার গাড়ি থাকে। আর এই ট্রেন থেকে খুলে নেওয়া হয়েছে এসি আসন। কোচ খুলে নিতে নিতে এখন মাত্র ৮ কোচের ট্রেনে পরিণত হয়েছে রেলের ‘ক’ শ্রেণীর অন্তর্ভুক্ত আন্তঃনগর কালনী এক্সপ্রেস।  

ট্রেনটি চট্টগ্রামগামী বিরতিহীন সুবর্ণ এক্সপ্রেসের মতো সাজিয়ে লাভজনক করার প্রস্তাব উঠেছিলো। কিন্তু এর পরিবর্তে আজমপুর, ভৈরব আর শমসেরনগরে স্টপেজ দিয়ে এখন যাত্রীবিমুখ করে তোলা হয়েছে।

সদ্য প্রয়াত সাবেক রেলমন্ত্রী সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত চালু করেছিলেন কালনী এক্সপ্রেস। তখন কোচসংখ্যা ছিলো ১২টি। এখন কোচ সংখ্যা কমে মাত্র ৮টি কোচ দিয়ে কোনোরকম জিইয়ে রাখা হয়েছে ট্রেনটিকে। আবার কখনও কোচ ড্যামেজ হলে মাত্র ৭টি কোচ নিয়ে চলাচল করে।  

রেলওয়ে সূত্র জানায়, স্টপেজ কম থাকায় শুরু থেকেই জনপ্রিয় ছিলো কালনী এক্সপ্রেস। এখন স্টপেজ বেড়েছে, কমেছে কোচ। এ অবস্থায় ট্রেনটিতে কোচ সংযোজনের দাবি গেছে রেল মন্ত্রণালয়ে। তবে আপাতত ট্রেনটির ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত নেই রেল ভবনের।

তবে রেলভবন জানায়, চট্টগ্রাম রুটের তুর্ণা-প্রভাতীর অবমুক্ত কোচ দিয়ে সোমবার ঢাকা-রংপুর-ঢাকা রুটে চলাচলকারী ‘রংপুর এক্সপ্রেস’ ট্রেনের উদ্বোধন হয়েছে। আর ঢাকা-চট্টগ্রাম-ঢাকা রুটে চলাচলকারী ‘মহানগর এক্সপ্রেস’ও অবমুক্ত কোচ দিয়ে একইদিন উদ্বোধন করা হবে।  

তবে অবমুক্ত করা কোচ দিয়ে সিলেট রুটের ট্রেনগুলোর সাজানোর জন্য দীর্ঘদিন থেকে রেল ভবনে দাবি থাকলেও উপেক্ষিত থাকছে বিষয়টি।  

বাংলাদেশ রেলওয়ের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন) হাবিবুর রহমান বাংলানিউজকে জানান, ‘কোচ পর্যাপ্ত পাওয়া গেলে পর্যায়ক্রমে ট্রেনগুলোতে নতুন কোচ লাগিয়ে দেওয়া হবে। আর ২৩ ফেব্রুয়ারি জয়ন্তিকা ও উপবন ট্রেনে রংপুর এক্সপ্রেস থেকে অবমুক্ত করা কোচ সংযোজন করে সংখ্যা বাড়ানো হবে।  

রেলওয়ে সূত্র জানায়, কালনী এক্সপ্রেস সকাল ৬টা ৪০ মিনিটে সিলেট ছেড়ে নির্ধারিত সময় দুপুর ১টায় ঢাকায় উপস্থিত হতো। বেশিরভাগ সময়ই দেখা যেতো ১০ মিনিট আগে ১২টা ৫০ মিনিটে ঢুকে পড়তো ট্রেনটি।  

আর ঢাকা থেকে বিকেল ৩টায় ছেড়ে রাত সোয়া ৯টায় সিলেটে প্রবেশের নির্ধারিত সময় থাকলেও ১৫ মিনিট আগেই পৌঁছে যেতো। তখন ২টি গার্ড ব্রেক শোভন শ্রেণীর, ১ এসি চেয়ার, ১টি প্রথম শ্রেণীর কেবিন, ১টি পাওয়ার কার, ৩ টি শোভন চেয়ার ও ৩টি শোভন এবং ১টি খাবার গাড়ি ছিলো।  

এরপর ২০১২ সালের সেপ্টেম্বরে রেক পালটে ইরানি রেক দেওয়া হয় কালনীতে। যেখানে কোচ সংখ্যা ছিলো ১১টি, পরে তা নেমে আসে ১০টিতে। এর মধ্যে ১টি এসি চেয়ার এবং বাকি ৯টি কোচ শোভন চেয়ার গার্ড ব্রেক ও পাওয়ার কার, খাবার গাড়ি ও শোভন চেয়ার শ্রেণী ছিল।

বাংলাদেশ সময়: ০৯৩০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০১৭
এসএ/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।