ঢাকা, শনিবার, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

বাড়তি টাকার চুক্তি ছাড়া মেলে না সিএনজি

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯২৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০১৭
বাড়তি টাকার চুক্তি ছাড়া মেলে না সিএনজি বাড়তি টাকার চুক্তি ছাড়া মেলে না সিএনজি

ঢাকা: রাজধানীতে মিটারের নির্ধারিত ভাড়ায় মেলে না সিএনজি অটোরিকশা। যাত্রীদের কাছ থেকে সিএনজি চালকরা বেশি ভাড়া আদায় করছেন। অনেক সিএনজিতে আবার মিটারই নেই। তাই যাত্রীরা মিটারের চেয়ে বেশি ভাড়ায় বা চুক্তি করে গন্তব্যে যেতে বাধ্য হচ্ছেন। আবার গন্তব্যস্থল চালকের পছন্দ হলো কি না তার ওপর নির্ভর করে ঘুরছে সিএনজির চাকা।

রোববার (১৯ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে এমন চিত্র দেখা যায়।
 
মিটার থেকে অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে খিলক্ষেত ফুটওভার ব্রিজ এলাকা থেকে গুলিস্তান যাচ্ছেন ব্যবসায়ী লিটন দেওয়ান।

তিনি বাংলানিউজকে বলেন, তাড়াতাড়ির জন্য আমাকে সিএনজিতে যেতে হচ্ছে। মিটারে যাবে না তাই কি আর করা, মিটার থেকে ৫০ টাকা বাড়তি ভাড়া দিয়ে যাচ্ছি।
 
সিএনজিতে বেশি ভাড়া আদায় করার অভিযোগ করেন খিলগাঁও থেকে কলাবাগান ‍আসা নিপা ‍জাহান। তিনি বলেন, আমার দ্রুত আসার প্রয়োজন ছিলো। কিন্তু সিএনজি চালকেরা মিটারে আসবে না। কি আর করা ৩০০ টাকা ভাড়া ঠিক করে এখানে আসলাম। অথচ মিটারে উঠেছে মাত্র ১৬০ টাকা। এ বিষয়ে আমি আর কোনো কথা বলতে চাচ্ছি না।

খামারবাড়ি এলাকায় অবস্থিত ইস্পাহানী ইসলামিয়া আই ইনস্টিটিউট অ্যান্ড হাসপাতালের সামনে দেখা যায় সিএনজি চালকদের দৌড়াত্ম আরও বেশি। সেখানে মিটারের কোনো কথাই নেই। সেখানে গোপিবাগ থেকে মাকে নিয়ে হাসপাতালে এসেছিলেন জাহিদ হাসান। তিনি বলেন, সকালে মাকে নিয়ে আসলাম ১৮০ টাকা সিএনজি ভাড়া দিয়ে। তখন মিটারে উঠছিল ১৫০ টাকা। এখন চাচ্ছে ২৫০ টাকা, ৩০০ টাকা। আমরা ২০০ টাকা পর্যন্ত বলছি তাও যেতে রাজি হচ্ছে না।

মিটারে না গিয়ে চুক্তি করছেন কেনো জানতে চাইলে তিনি বলেন, মিটারেতো আগেই বলেছি। কিন্তু যাবে না। কি করবো বলেন। মা’র শরীরের যে অবস্থা তাতে বাসে উঠতে পারবে না। তাই বাধ্য হচ্ছি।

পাশে আরেকজন রওশনারা বেগম যাবেন পুরান ঢাকার বাদামতলী। তিনি বলেন, এখান থেকে বাদামতলী যেতে মিটারে সর্বোচ্চ ১৫০ টাকা উঠবে। কিন্তু আমার কাছে চাওয়া হচ্ছে ৩০০ টাকা, ৩৫০ টাকা। ২৫০ টাকা বলছি তাতেও রাজি হচ্ছে না।  

বেশি ভাড়া নেওয়া প্রসঙ্গে সেখ‍ানে কথা হয় সিএনজি চালক সুজন মিয়ার সঙ্গে। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের কি দোষ কন। রাস্তায় জ্যাম থাকলে যাত্রীরাই মিটারে যাইতে চায় না। তারপর মনে করেন যাত্রী নামানোর পরেই আবার যাত্রী পাইনা। অনেকক্ষণ ঘুরতে হয়। তাই মিটারে চালাইলে পুষায় না।
 
পাশেই দাঁড়িয়ে থাকা নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন সিএনজি চালক বলেন, আমাদের কাছ থেকে মালিকরা সরকারের নির্ধারিত ভাড়ার থেকে বেশি টাকা নেয়। কিন্তু মালিকের সঙ্গে যোগাযোগ করার জন্য মোবাইল নম্বর চাইলে তারা তা জানাতে অস্বীকৃতি জানান।

কি কি সমস্যার কারণে যাত্রীদের কাছে মিটারের চেয়ে বেশি ভাড়া আদায় করতে হচ্ছে জানতে চাইলে নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক সিএনজি চালক বলেন, ভাই আমারটায় মিটার নাই। ত‍াই আগে থেকে ভাড়া ঠিক করতে হয়। মিটার না থাকার কারণ জানতে চাইলে এ বিষয়ে কোনো কথা বলতে রাজি হননি ওই সিএনজি চালক।
 বাড়তি টাকার চুক্তি ছাড়া মেলে না সিএনজি
এ বিষয়ে কথা হলে উত্তরা জোনের ট্রাফিক সার্জেন্ট মেহেদি হাসান বাংলানিউজকে বলেন, মিটারের নির্ধারিত ভাড়ায় সিএনজি চলবে এটাই স্বাভাবিক। যাত্রীদের কাছ থেকে বেশি ভাড়া নেওয়াটা দুঃখজনক ব্যাপার। আমরা যাত্রীদের অনুরোধ করবো যদি কোনো সিএনজি চালক মিটার থেকে বেশি ভাড়া চায় তাহলে যেনো আশপাশে ‍ট্রাফিকের দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তাদের অবগত করেন।
 
তিনি বলেন, কেউ এ বিষয়ে অভিযোগ করলে আমরা অবশ্যই ব্যবস্থা নেই। তবে আমাদের এমনও অভিজ্ঞতা আছে যে, যাত্রীরা বেশি টাকা ভ‍াড়া দিয়ে সিএনজিতে যাচ্ছেন, কিন্তু আমরা রাস্তায় চেক করার সময় জিজ্ঞেস করলে বলে মিটারে যাচ্ছি। আমরা কিন্তু প্রকৃত সহযোগিতাটা সব যাত্রীদের কাছ থেকে পাই না। তারা ভাবেন গাড়িটিকে মামলা করলে বা আটকালে তার গন্তব্যে যেতে দেরি হবে। তাই নগরবাসীদের অনুরোধ করবো ট্রাফিক বিভাগকে যেনো প্রয়োজনীয় সঠিক তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করেন। যাতে আমরা এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে পারি।

বাংলাদেশ সময়: ০১২৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২০, ২০১৭
এমএইচকে/এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

জাতীয় এর সর্বশেষ