ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

এবার জাফলং পাথর কোয়ারি ধসে দুই শ্রমিক নিহত

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩১৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০১৭
এবার জাফলং পাথর কোয়ারি ধসে দুই শ্রমিক নিহত

সিলেট: মাত্র আট দিনের মাথায় এবার সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার জাফলং পাথর কোয়ারি ধসে দুই শ্রমিক নিহত হয়েছেন। রোববার (১৯ ফেব্রুয়ারি) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে সংগ্রামপুঞ্জি নামক স্থানে এ ঘটনা ঘটে। 

নিহতরা হলেন- কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার তেলিখাল গ্রামের মদরিস আলীর ছেলে কামরুজ্জামান ও একই এলাকার জিয়াদুর রহমানের ছেলে তাজউদ্দিন। এ ঘটনায় পুলিশ কোয়ারি মালিকসহ ৬ জনকে আটক করেছে।

 

স্থানীয়রা জানান, বিজিবির সংগ্রামপুঞ্জি ডালু এলাকায় দুলাল ও হান্নানের কোয়ারিতে পাথর উত্তোলনের কাজ করছিলেন কিছু শ্রমিক। এমন সময় হঠাৎ কোয়ারির পাড় ধসে কামরুজ্জামান ও তাজউদ্দিন পাথর চাপায় নিহত হন। আহত হন আরও কয়েকজন। আহতদের উদ্ধার করে স্থানীয় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।  

গোয়াইনঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দেলোয়ার হোসেন বাংলানিউজকে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, এ ঘটনায় পাথর কোয়ারি মালিকসহ ৬ জনকে আটক করা হয়েছে। নিহতদের সুরতহাল প্রতিবেদন প্রস্তুতের পর মরদেহ  ময়না তদন্তের জন্য ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে।  

এর আগে গত ১১ ফেব্রুয়ারি বিকেল সাড়ে ৪টায় শাহ আরেফিন টিলার উত্তরটিলায় পাথর কোয়ারি ধসে আনিছ (৪৫) নামে এক শ্রমিক নিহত হন। আহত হন আরও তিনজন। নিহত আনিছ কোম্পানীগঞ্জের পূর্ব ইসলামপুর ইউনিয়নের শাহ আরেফিন টিলার পাশ্ববর্তী চিকাডহর গ্রামের মৃত জোয়াত আলীর ছেলে।

এ ঘটনায় ৫ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। কর্তব্য অবহেলার দায়ে কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বায়েছ আলমকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। বদলি করা হয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে।  

এছাড়া গত ৯ ফেব্রুয়ারি সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার বিছানাকান্দিতে পাথর উত্তোলনের সময় কোয়ারি ধসে তিন শ্রমিক নিহত হন। তারা হলেন-সুনামগঞ্জ সদরের গুলেরগাঁওয়ের জাকির হোসেন (২০), তোলা মিয়া (২৫) ও নেত্রকোনার খালিয়াজুড়ি এলাকার পরিমল (৩২)। যদিও তাদের মরদেহ গুম করার চেষ্টা করেন পাথর কোয়ারি মালিকরা।

তারও আগে গত ২৩ জানুয়ারি সকালে কোম্পানিগঞ্জের আরফিন টিলার আঞ্জু মিয়ার কোয়ারিতে পাথর উত্তোলনে গর্তে নামেন ১৩ শ্রমিক। এদের মধ্যে মাটি চাপায় ৬ জনের মরদেহ উদ্ধারের দাবি করেন স্থানীয়রা। তবে শেষ পর্যন্ত ৫ জনের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ প্রশাসন। এ ঘটনায় কোয়ারি মালিক আঞ্জুসহ ২০ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হলেও এখনো কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি।

এ ঘটনায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে পৃথক তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। উভয় তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে ৫ শ্রমিকের মরদেহ গুমের চেষ্টার ১৫ লাখ টাকায় ওসির দফারফার বিষয়টি উঠে আসে। এর পরিপ্রেক্ষিতে জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের তদন্ত প্রতিবেদনে ওসি বায়েস আলমকে প্রত্যাহারের সুপারিশ করা হয়।  

বাংলাদেশ সময়: ১৯১৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০১৭
এনইউ/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।