ঢাকা, শনিবার, ৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

জলবায়ু ও পরিবেশ

জাবিতে আগুন দিয়ে ধ্বংস করা হচ্ছে জীববৈচিত্র্য!

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩২৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৯, ২০১৭
জাবিতে আগুন দিয়ে ধ্বংস করা হচ্ছে জীববৈচিত্র্য! জাবিতে আগুন দিয়ে ধ্বংস করা হচ্ছে জীববৈচিত্র্য!/ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) ঝোপ-ঝাড়ে আগুন লাগিয়ে প্রাকৃতিক পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য নষ্ট করা হচ্ছে। প্রায় সাতশো একর জমির ওপর প্রতিষ্ঠিত এই উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানটিতে বছর কয়েক আগেও রাস্তায় চলাচলের সময় দেখা যেতো অসংখ্য গুঁইসাপ, বেজি, গিরগিটি, কাঠ-বিড়ালিসহ নানা ক্ষুদ্র প্রাণীর আনাগোনা। রাতের বেলা বিভিন্ন বন্যপ্রাণির হাঁক-ডাক আর চলাচলের শব্দে ক্যাম্পাসবাসীর মনে অন্যরকম আনন্দ সৃষ্টি হতো।

তবে পরিষ্কারের নামে আগুনে পুড়ানো যাচ্ছে অসংখ্য বন্যপ্রাণি ও কীটপতঙ্গের আবাসস্থল। পুড়ে মারা যাচ্ছে অসংখ্য প্রাণী ও কীট-পতঙ্গ।

এভাবেই নষ্ট করা হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অধিক গাছপালা ও তৎসংলগ্ন ঝোপঝাড় এসব বন্যপ্রাণির জন্য প্রাকৃতিক অভয়াশ্রমের কাজ করে। কিন্তু আগুন দিয়ে এভাবে এসব জায়গা পুড়িয়ে ফেলা হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের জীববৈচিত্র্য রক্ষা করা কঠিন হয়ে পড়বে। খাদ্য ও আবাসস্থলের সংকটে পড়বে প্রাণিকুল। ফলে তারা অন্যত্র চলে যাবে।
জাবিতে আগুন দিয়ে ধ্বংস করা হচ্ছে জীববৈচিত্র্য!/ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কমক্যাম্পাস ঘুরে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের জিমনেসিয়াম সংলগ্ন এলাকা, সুইমিং পুলের চারপাশ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের পাশ্ববর্তী এলাকা, ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের পাশের এলাকার বনজঙ্গল আগুন দিয়ে প‍ুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের জীববৈচিত্র্য ও প্রাকৃতিক পরিবেশ রক্ষায় প্রশাসনের অগ্রণী ভূমিকা নেই এমন অভিযোগ কয়েকজন শিক্ষককের। নাম প্রকাশ না করার শর্তে ক্ষোভ প্রকাশ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক অধ্যাপক বাংলানিউজকে বলেন, আমরা সবসময় বিশ্ববিদ্যালয়কে সবুজ ও সতেজ রাখার জন্য আন্দোলন করেছি। কিন্তু বর্তমান প্রশাসন সবুজ ক্যাম্পাসের ধারণা থেকে বেরিয়ে গেছে। তাই এখন আর প্রতিবাদ কিংবা অনুরোধ করেও কোনো কাজ হয় না।
জাবিতে আগুন দিয়ে ধ্বংস করা হচ্ছে জীববৈচিত্র্য!/ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কমবিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক মো. মনোয়ার হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, ‘ক্যাম্পাসের ঝোপঝাড় আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়ার ফলে বন্যপ্রাণি ও কীটপতঙ্গের আবাসস্থল ও প্রজনন ক্ষেত্রগুলো নষ্ট করা হচ্ছে। আগে যেসব বন্যপ্রাণি দেখা যেতো এখন আর দেখা যায় না। ক্যাম্পাসের জীববৈচিত্র্য ও প্রাকৃতিক পরিবেশ রক্ষার্থে আমাদের সবাইকে সচেতন হতে হবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের এস্টেট অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. নুরুল আমিন বলেন, আমাদের গার্ডদের দেওয়া তথ্য হলো বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররাই এই আগুন লাগাচ্ছে। তবে এ বিষয়ে সজাগ আছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তায় নিয়োজিত গার্ডরা সবসময় ক্যাম্পাসে টহল দেয়। কোথাও আগুন লাগলেই তাৎক্ষণিকভাবে আগুন নেভানোর চেষ্টা করা হয়।

বাংলাদেশ সময়: ০৫১৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২০, ২০১৭
আরআর/আইএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।