গাজীপুর: দু’দিনের বর্ষণে গাজীপুর জেলায় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের বেশ কিছু অংশে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। এতে মহাসড়কের বিটুমিন নষ্ট হয়ে বড় বড় গর্ত তথা খানা-খন্দকের সৃষ্টি হয়েছে।
ফলে ওই মহাসড়কে সাবধানে ও ধীরে ধীরে গাড়ি চলতে গিয়ে দিনভরই চলছে দীর্ঘ যানজট। ট্রাফিক পুলিশও অনেকটা অসহায় হয়ে পড়েছে।
নাওজোর মহাসড়ক পুলিশ ফাঁড়ির সার্জেন্ট মো. হাবিবুর রহমান জানান, পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা অকেজো থাকায় কয়েক ঘণ্টা বৃষ্টি হলেই গাজীপুর সদরের উল্কা সিনেমা হলের সামনে ও ভোগড়া এলাকায় (বাইপাস সংলগ্ন উত্তর ও দক্ষিণের অংশে) ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে এবং চান্দনা-চৌরাস্তা ঈদগাহ মার্কেটের সামনে ঢাকা-গাজীপুর সড়কের ওপর প্রায় হাঁটু পানি জমে যায়। এতে মহাসড়কে খানা-খন্দকের সৃষ্টি হয়েছে। ওইসব রাস্তায় দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। পাঁচ মিনিটের রাস্তা পেরুতে লাগছে ৪০মিনিট থেকে প্রায় ১ ঘণ্টা।
যানজটের কারণে জয়দেবপুর থেকে অনেকে তিনসড়কের দক্ষিণে বিকল্প রাস্তায় চলতে গিয়ে সেখানেও যানজটের কবলে পড়ছেন। অনেক গাড়ি চালক তাদের বাস ঢাকা রুটে না চালিয়ে জেলা শহর থেকে চান্দনা-চৌরাস্তা পর্যন্ত ট্রিপ দিচ্ছেন।
গাজীপুর-ঢাকা রুটের বলাকা সার্ভিসের বাসচালক আবুল কালাম জানান, বাইপাস এলাকায় যানজটের কারণে তিনি ঢাকায় বাস না চালিয়ে বৃহস্পতিবার দুপুর থেকেই গাজীপুর বাস টার্মিনাল থেকে চান্দনা-চৌরাস্তা পর্যন্ত খেপ দিচ্ছেন।
ময়মনসিংহ থেকে ঢাকাগামী শ্যামলী পরিবহনের যাত্রী পারভিন আক্তার জানান, বৃহস্পতিবার বিকেলে ময়মনসিংহ থেকে রওনা দিয়ে সন্ধ্যে পৌনে ৭টার দিকে গাজীপুর সদরের নগরপাড়া এলাকায় পৌঁছেন। এরপর প্রায় পৌণে ১ঘন্টায়ও তিনি ভোগড়া বাইপাস এলাকা অতিক্রম করতে পারেননি। অথচ ওই রাস্তা অতিক্রম করতে স্বাভাবিকভাবে ৫ মিনিট সময়ও লাগে না।
বাসন ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য (ভোগড়া এলাকা) মো. আব্দুস সালাম জানান, ভোগড়াসহ আশে-পাশের এলাকায় পানি নির্গমনের পথ সরু এমনকি বন্ধ করে অপরিকল্পিতভাবে শিল্প-কারখানা ও ঘর-বাড়ি গড়ে ওঠায় ওইসব এলাকায় জলবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। এতে পানি গড়াতে না পেরে শেষে অপেক্ষাকৃত নিচু ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক ও গাজীপুর-ঢাকা সড়কের বেশ কিছু অংশে পানি উঠে তলিয়ে গেছে। এতে যান চলাচলে বিঘœ হচ্ছে। সৃষ্টি হচ্ছে অসহনীয় যানজট।
গাজীপুর সড়ক ও জনপদের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ ফজলে রাব্বি সাংবাদিকদের জানান, টঙ্গী থেকে জয়দেবপুর চৌরাস্তা পর্যন্ত ড্রেনেজ সিস্টেম ভালো না থাকার কারণে রাস্তায় পানি জমে গর্তের সৃষ্টি হয়। এছাড়া ওভার লোডেড ট্রাক এবং গাড়ি চলার কারণে রাস্তা নষ্ট হচ্ছে। ফলে মহাসড়ক ব্যবহার উপযোগী রাখা সম্ভব হচ্ছে না। এ ব্যাপারে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেছি। এরইমধ্যে টঙ্গী থেকে জয়দেবপুর চৌরাস্তা পর্যন্ত ৭০ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি ড্রেনেজ সিস্টেমের জন্য প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে।
সড়কে পানি জমার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘অধিকাংশ ক্ষেত্রে দেখা গেছে মহাসড়কের পাশের ভবন ও স্থাপনাগুলো সড়কের চেয়ে উঁচু। ফলে বৃষ্টির পানি রাস্তায় এসে জমা হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৩৫ ঘণ্টা, জুলাই ০১, ২০১১