ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

বান্দরবানে বোমা তৈরির সরঞ্জামসহ ২ জঙ্গি আটক

জেলা প্রতিনিধি | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৪১ ঘণ্টা, মার্চ ২৯, ২০১১

বান্দরবান: পার্বত্য জেলা বান্দরবানের থানচি উপজেলায় জঙ্গি সন্দেহে সোমবার ২ ব্যক্তিকে আটক করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সদস্যরা। এ সময় তাদের কাছ থেকে বোমা তৈরির সরঞ্জামসহ বেশ কিছু জিহাদি বই ও ব্যবহৃত মালামাল উদ্ধার করা হয়।



থানচির বলিপাড়ার কলাইপাড়া এলাকা থেকে সোমবার দুপুর ও রাত ৮টার দিকে পৃথক অভিযানে ওই দুজনকে আটক করা হলেও মঙ্গলবার সকালে বিষয়টি সাংবাদিকদের নিশ্চিত করে পুলিশ।

আটককৃতরা হলেন গাইবান্ধা জেলার সাঘাটা থানার কচুয়া সর্দার পাড়ায় শামীম মাহফুজ (৪০) এবং চাঁদপুর জেলার বাহরপুর বাংলাবাজারসংলগ্ন এলাকার ইসমাইল (৩৬)।

পুলিশের ধারণা, আটক দুই ব্যক্তি নিষিদ্ধঘোষিত জঙ্গি সংগঠন জামাআতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশের (জেএমবি)র সক্রিয় সদস্য। কিন্তু তারা মঙ্গলবার বিকেল ৫টা পর্যন্ত জিজ্ঞাসাবাদে কোনো সংগঠনের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেননি।

পুলিশ সূত্র জানায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে কলাইপাড়া এলাকার একটি খামারবাড়ি থেকে সোমবার দুপুরে ইসমাইলকে এবং রাত ৮টার দিকে শামীমকে আটক করেন বিজিবির ১০ ব্যাটলিয়নের সদস্যরা। পরে তাদের পুলিশের হাতে সোপর্দ করা হয়। এ সময় পারভেজ নামে আরও একজনকে আটক করা হলেও জিজ্ঞাসাবাদের পরে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।

মঙ্গলবার সকালে আটককৃতদের জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সামনে হাজির করা হয়।

আটকৃতদের কাছ থেকে উদ্ধার করা জিহাদি বই, লিফলেট, আগ্নেয়াস্ত্র ও যুদ্ধে ব্যবহৃত বোমা বানানোর কৌশল সংক্রান্ত সচিত্র নথি, সফটওয়্যার, সিডি, ডাটা ক্যাবল, হেডফোন, ছোট কোরআন শরীফ, ইলেট্রনিক সুইচ, মোবাইলে অ্যান্টেনা, গান পাউডার, পাথর ভাঙার রড, পেরেক, ৮টি জ্যাকেট, ৮টি কম্বল, বোমা তৈরির কলাকৌশল ও ইসলাম ধর্মসংক্রান্ত বিভিন্ন পুস্তক সাংবাদিকদের সামনে উপস্থাপন করা হয়।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে পুলিশের একটি সূত্র বাংলানিউজকে জানায়, শামীম মাহফুজ ছাত্রজীবনে শিবিরের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তিনি জোট সরকারের সময়ে উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক হিসেবে নিয়োগ পেলেও পরে তাকে বহিষ্কার করা হয়।

থানচি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জহিরুল ইসলাম মঙ্গলবার বিকেল ৫টায় বাংলানিউজকে জানান, শামীম ২০০৭ সালে এ এলাকায় এসে ১০ বিঘা জমি লিজ নিয়ে খামার গড়ে তোলার কথা বলে আস্তানা গাড়েন। পরে তার সঙ্গে যুক্ত হন চাঁদপুরের ইসমাইল।

তিনি জানান, আটকৃতরা প্রথমে দুর্গম থানচির কলাইপাড়া এলাকায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও নলকূপ স্থাপন করে স্থানীয়দের আস্থা অর্জন করেন। পরে তাদের কর্মকা- এলাকার লোকজনের মধ্যে সন্দেহের সৃষ্টি করে।

ওসি জানান, শামীমের সঙ্গে মিয়ানমারের বেশ কয়েকটি বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনের যোগাযোগ রয়েছে বলে তিনি প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছেন।

ঘটনার পরপরই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ সোহেল আহম্মেদ, জেলা পুলিশ সুপার কামরুল আহসান, উপজেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক বাশু চিং চৌধুরী, বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মং শৈই ম্রাইসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

এ ব্যাপারে জেলা পুলিশ সুপার কামরুল আহসান বাংলানিউজকে বলেন, ‘আটকৃতরা থানচিতে জঙ্গি আস্তানা গড়ে তোলার পরিকল্পনা করছিল। ’

বাংলাদেশ সময়: ১৭১৬ ঘণ্টা, মার্চ ২৯, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।