ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৭ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

গোলাহাটে বধ্যভূমির স্মৃতিস্তম্ভের নির্মাণ কাজের উদ্বোধন

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১২৫ ঘণ্টা, জুন ১৩, ২০১৪
গোলাহাটে বধ্যভূমির স্মৃতিস্তম্ভের নির্মাণ কাজের উদ্বোধন

নীলফামারী: স্বাধীনতার ৪৩ বছর পর গোলাহাটের বধ্যভূমির স্মৃতিস্তম্ভের নির্মাণ কাজের ফলক উন্মোচন করা হবে।

শুক্রবার সকাল সাড়ে ১১টায় ফলক উন্মোচন করবেন নীলফামারী-৪(সৈয়দপুর-কিশোরগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য ও বিরোধী দলীয় হুইপ শওকত চৌধুরী।



গোলাহাট বধ্যভূমিতে স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ বাস্তবায়ন কমিটির সদস্য সচিব ও শহীদ পরিবারের সদস্য নিজু কুমার আগরওয়ালা বলেন, ১৩ জুন আমাদের জীবনে শোকাবহ একটি দিন। স্মৃতিস্তম্ভের নির্মাণ কাজ শুরু হওয়ায় শহীদ পরিবারের সদস্যরা আনন্দিত।
 
জানা যায়, ১৩ জুন নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলার গোলাহাট গণহত্যা দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে পাক হানাদার বাহিনীর দোসররা শহরের গোলাহাটে স্বাধীনতাকামী হিন্দু সম্প্রদায়ের নারী-পুরুষ ও শিশুদের নৃশংসভাবে হত্যা করেছিল।

বর্বর হত্যাযজ্ঞের স্থানটি গোলাহাট বধ্যভূমি হিসেবে পরিচিত। মুক্তিযুদ্ধের নয় মাসে সৈয়দপুরের চিত্র ছিল সম্পূর্ণ ভিন্ন।

১৯৪৭ সালে পাক-ভারত বিভক্তির পর বিপুল সংখ্যক অবাঙ্গালি (উর্দুভাষী) সৈয়দপুর শহরে আশ্রয় নেয়। স্বাধীনতা যুদ্ধ চলাকালে মুক্তিকামী বাঙ্গালিদের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয় তারা। এরা ছিল পাক হানাদার বাহিনীর বিশ্বস্ত দোসর। এদের প্রত্যক্ষ মদদে পাক হানাদার বাহিনীর শক্ত ঘাঁটিতে পরিণত হয় সৈয়দপুর।

যুদ্ধের নয় মাসে তাদের হত্যাযজ্ঞের শিকার হয় অগণিত বাঙ্গালি। এর মধ্যে ১৩ জুন সংঘটিত হয় লোমহর্ষক সেই গণহত্যা। এ দিন শহরের সংখ্যালঘু হিন্দু ও মাড়োয়ারি সম্প্রদায়ের লোকজনকে ভারতে পৌঁছে দেওয়ার কথা বলে সৈয়দপুর রেলওয়ে স্টেশনে আনা হয়। এর পর সবাইকে একটি বিশেষ ট্রেনে তুলে দেওয়া হয়। ট্রেনটি স্টেশন থেকে চিলাহাটি অভিমুখে ছেড়ে যাওয়ার প্রায় দুই কিলোমিটার দূরে গোলাহাট এলাকায় থামিয়ে দেওয়া হয়। সেখানে পাক হানাদার বাহিনী ট্রেন থেকে নামিয়ে একে একে ৩৩৮ জন নারী, পুরুষ ও শিশুকে গলাকেটে নির্মমভাবে হত্যা করে। সেই দিনের নৃশংস হত্যাযজ্ঞ থেকে ভাগ্যক্রমে মাত্র ক’জন পালিয়ে বাঁচলেও সেদিনের স্মৃতি মনে করে আজও আঁতকে উঠেন তারা। কেউবা নীরবে ফেলেন চোখের জল।

এই বধ্যভূমির স্মৃতিস্তম্ভ রক্ষার দাবি ছিল গণহত্যার শিকার ব্যক্তিদের আত্মীয়-স্বজনদের। স্বাধীনতার ৪৩ বছর পরে হলেও তাদের এই দাবি আজ পূরণ হতে চলেছে।

বাংলাদেশ সময়: ১১২২ ঘণ্টা, জুন ১৩, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।