ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

সাংবিধানিকভাবে নিষিদ্ধ হবে জামায়াতের রাজনীতি: আইন প্রতিমন্ত্রী

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২৫৭ ঘণ্টা, জুলাই ১৭, ২০১০
সাংবিধানিকভাবে নিষিদ্ধ হবে জামায়াতের রাজনীতি: আইন প্রতিমন্ত্রী

ঢাকা: আইন প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম বলেছেন, ‘জামায়াতে ইসলামীর রাজনীতি সাংবিধানিকভাবে নিষিদ্ধ করা হবে। সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনী বাতিল সংক্রান্ত উচ্চ আদালতের রায় বাস্তবায়নের মাধ্যমেই নিষিদ্ধ হবে এ দলটির রাজনীতি।



শনিবার সকালে জাতীয় প্রেসকাবে শেখ রাসেল মেমোরিয়াল একাডেমি আয়োজিত ‘যুদ্ধাপরাধীদের বিচার দ্রুত বাস্তবায়ন’ শীর্ষক আলোচনাসভায় প্রতিমন্ত্রী এ কথা বলেন।

কামরুল ইসলাম বলেন, ‘জামায়াত দেশে জঙ্গিদের মদদ দিয়েছে। সংগঠিত করেছে। জামায়াত বাংলাদেশকে পাকিস্তান-আফগানিস্তান বানাতে চায়। আর কোনো অবস্থাতেই তাদের এদেশে রাজনীতি করতে দেওয়া হবে না। ’

প্রতিমন্ত্রী বলেন, উচ্চ আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী পঞ্চম সংশোধনী সংক্রান্ত রায় বাস্তবায়ন করে সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমেই জামায়াতে ইসলামীকে নিষিদ্ধ করা হবে।

আইন প্রতিমন্ত্রী জানান, সংবিধান সংশোধন বিল সংসদে উত্থাপনের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সর্বদলীয় কমিটি গঠনের ঘোষণা দিয়েছেন। শুক্রবার গণভবনে অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদে প্রধানমন্ত্রী ওই ঘোষণা দেন। এ সংশোধনীর মধ্য দিয়ে দেশ ১৯৭২ সালের সংবিধানে ফিরে যাবে।

গত ২ ফেব্রুয়ারি সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনী অবৈধ ঘোষণা করে দেওয়া হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের আবেদন খারিজ করেছে আপিল বিভাগ। এর আগে ২০০৫ সালের ২৯ আগস্ট দেওয়া হাইকোর্টের রায়ে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট থেকে ১৯৭৯ সাল পর্যন্ত খন্দকার মোশতাক আহমেদ, আবু সাদাত মোহাম্মদ সায়েম এবং জিয়াউর রহমানের শাসনকে বেআইনি ঘোষণা করা হয়।

জামায়াতের গ্রেপ্তারকৃত শীর্ষ পাঁচ নেতাকে যুদ্ধাপরাধের কাঠগড়ায় দ্রুত দাঁড় করানোর ইঙ্গিত দিয়ে অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম বলেন, ‘এরই মধ্যে কয়েকজন চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অচিরেই তাদের বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হবে। ইনশাআল্লাহ এ বছরের মধ্যেই ওই চিহ্নিত ঘাতকদের বিচার কার্যক্রম শেষ করা হবে। ’

যুদ্ধাপরাধের বিচার একটি চলমান প্রক্রিয়া উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘যারা চিহ্নিত তাদের বিচার আগে এবং দ্রুত করা হবে। সে যে দলের, যত বড় নেতাই হউক। কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। ’  তিনি বিএনপির প্রতি ইঙ্গিত করে বলেন, ‘তারা যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চায় না। যুদ্ধাপরাধীদের রক্ষার জন্য তারা নানা চেষ্টা করছে। ’  

প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘যুদ্ধাপরাধীদের বিচার আর্ন্তজাতিক মানের হবে। বিচার প্রশ্নবিদ্ধ হবে না। আমরা সে ভাবেই কাজ করছি। ’

যুদ্ধাপরাধের বিচার বাধাগ্রস্ত করার জন্য বিরোধী দল যে কর্মকান্ড চালাচ্ছে সে সর্ম্পকে তিনি জনগণকে সজাগ থাকার আহবান জানান।

শেখ রাসেল মেমোরিয়াল একাডেমির সভাপতি ও জনতা ব্যাংকের চেয়ারম্যান ডক্টর আবুল বারকাতের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক নজরুল ইসলাম, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আহম্মদ হোসেন, শেখ রাসেল  মেমোরিয়াল একাডেমির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি শেখ সিদ্দিকুর রহমান, বর্তমান সাধারণ সম্পাদক সৈয়দা রাজিয়া মোস্তাফা।

অধ্যাপক নজরুল ইসলাম বলেন, স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় জামায়াতে ইসলামী ও তাদের সহযোগীরা এদেশে যে গণহত্যা, ধর্ষণ, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট করেছে, তার বিচার হতেই হবে। এ জন্য সরকারের  নেওয়া উদ্যোগকে আমরা সমর্থন করি।

ডক্টর আবুল বারকাত বলেন, জামায়াত নেতা গোলাম আজম, মতিউর রহমান নিজামী, আলী আহসান  মোহাম্মাদ মুজাহিদ, দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী, মোহাম্মদ কামারুজ্জামান, আব্দুল কাদের মোল্লাসহ কিছু চিহ্নিত ঘাতকের বিচার শুরু করতে পারলেই বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা পুনঃপ্রষ্ঠিত হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৫৫ ঘণ্টা, জুলাই ১৭, ২০১০

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
welcome-ad