ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ঠেকাতেই ড্যাপ: আ.ক.ম মোজাম্মেল এমপি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২০৮ ঘণ্টা, জুলাই ১৭, ২০১০
যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ঠেকাতেই ড্যাপ: আ.ক.ম মোজাম্মেল এমপি

ঢাকা: যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রক্রিয়া ঠেকাতেই ড্যাপের নামে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করা হচ্ছে বলে দাবি করেছেন ভূমিন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি সাংসদ আ.ক.ম মোজাম্মেল হক।

শনিবার সকালে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সম্মেলন কক্ষে ‘বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনা ও আধুনিক ঢাকা’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনায় তিনি এ কথা বলেন।



সেন্টার ফর ডেমোক্রেসি রিসার্চ আয়োজিত গোলটেবিল বৈঠকে সাংসদ আরো বলেন, ‘বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য পরশু দিনও আমি প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ করেছি। ’

সাংসদ বলেন, ‘ড্যাপ এলাকার ৪০টি আসনই ক্ষমতাসীন মহাজোটের। অথচ ওই সাংসদদের সঙ্গে আলোচনা না করেই ড্যাপ প্রণয়ন করা হয়েছে। এটা গভীর ষড়যন্ত্র ছাড়া আর কিছুই নয়’

মোজাম্মেল হক বলেন, ‘মনের মাধুরী মিশিয়ে একটি পরিকল্পনা করা হয়েছে যা মোটেই বাস্তবভিত্তিক নয়। এ নিয়ে রাজউক চেয়ারম্যানের বক্তব্যও অযৌক্তিক ও দুঃখজনক। ’

তিনি বলেন, ‘যারা এ প্রক্রিয়ার সঙ্গে জড়িত তারা যুদ্ধাপরাধের বিচার চায় না। ড্যাপের নামে জনরোষ সৃষ্টিতে এরা উস্কানি দিচ্ছে।

তিনি আরো বলেন, ‘এখন থেকে সরকারি প্রতিষ্ঠানের ভবন তৈরি ও দরিদ্রদের পুনর্বাসনেই কেবল জমি অধিগ্রহণ করা যাবে। ’

এই লক্ষ্যে দরিদ্রদের পুনর্বাসনে জমি খোঁজা হচ্ছে এবং ভাষানটেক পুনর্বাসন কেন্দ্র উদ্ধারের কাজ চলছে বলেও জানান ভূমিন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি।

আলোচনায় জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য এবং সাবেক মন্ত্রী অ্যাডভোকেট কাজী ফিরোজ রশীদ বলেন, ‘রাজউক একটি ধনীদের প্রতিষ্ঠান। এটি তৈরি হয়েছে গরীবদের জমি কেড়ে নিয়ে ধনীদের কাছে বিতরণ করার জন্য। ’

তিনি আরো বলেন, ‘এই প্লট ব্যবসার নামে নামে এবং বেনামে এখানকার কর্মকর্তা কর্মচারীরা এক বা একাধিক প্লটের মালিক হয়েছেন। ’
উদাহরণ হিসেবে তিনি রাজউকের সাবেক একজন চেয়ারম্যানের ১৮টি প্লট আছে বলে উল্লেখ করেন ।

ফিরোজ রশীদ বলেন, ‘বর্তমান গণতান্ত্রিক সরকার আমলাদের তৈরি করা গরীব-মারা ড্যাপ নিশ্চয়ই বাস্তবায়ন করবে না। কারণ, এ ড্যাপ তৈরিতে বাস্তবতা মানা হয়নি। ’

প্রকৌশলী ইদ্রিস আলী বলেন, ‘গত ২৯ জুন দেওয়া  রাজউকের নোটিশ এবং ড্যাপে ঢাকাকে ১৭ ভাগে ভাগ করা স্ববিরোধী এবং হাস্যকর। ’

তিনি আরো বলেন, ‘ড্যাপে ১৭টি আবাসন প্রকল্পকে সরিয়ে নিতে বলা হয়েছে।   এসবের ৬টিই সরকারি। এসব প্রতিষ্ঠান একদিনে গড়ে ওঠেনি যে শীততাপ নিয়ন্ত্রিত ঘরে বসে কলমের এক খোঁচায় মুছে ফেলা যাবে। ’

গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলা চেয়ারম্যান ইকবাল হাসান সবুজ বলেন, ‘এদেশে এমন একজন লোকও নেই যিনি আধুনিক ঢাকা-শহর চান না। তবে ২০০৮ এর তথাকথিত সরকারের জনমত জরিপের ওপর ভিত্তিতে করা ড্যাপ বাস্তবায়ন কেউই চায় না। ’

ব্যারিস্টার মোহাম্মদ আলী ঢাকা শহরের অপরিকল্পিতভাবে গড়ে ওঠার জন্য রাজউকই দায়ী বলে উল্লেখ করে বলেন, ‘রাজউক কখনোই তার কাগুজে পরিচয়ের বাইরে বের হয়ে কার্যকর ও গণমুখি প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে উঠতে পারেনি। ’

জনগণের অনুভূতিতে আঘাত করে কখনো ড্যাপ বাস্তবায়ন করা যাবে না বলেও তিনি মন্তব্য করেন।

গোলটেবিল আলোচনায় আরও অংশ নেন সাবেক ওয়ার্ড কমিশনার অ্যাডভোকেট নাজমা নওশাদ, প্রফেসর আব্দুল কুদ্দুস, সাবেক সচিব রেজাউল হায়াত, ওয়ালিউর রহমান ও শিক্ষক নেতা সেলিম ভুইয়া।

অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব ও সঞ্চালন করেন ড. নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহ্।

বাংলাদেশ সময় ১৬৫৭ ঘণ্টা, জুলাই ১৭, ২০১০

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।