ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

সেপ্টেম্বরে শুরু হচ্ছে ‘সোনার বাংলা সাংস্কৃতিক বলয়’ নির্মাণের কাজ

উবায়দুল্লাহ বাদল | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮০৪ ঘণ্টা, জুলাই ১৪, ২০১০

ঢাকা: বদলে যাচ্ছে ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও এর পার্শ্ববর্তী এলাকার চিত্র। গড়ে তোলা হবে ‘সোনার বাংলা সাংস্কৃতিক বলয়’।

আগামী সেপ্টেম্বর থেকেই শুরু হচ্ছে এ প্রকল্পের নির্মাণ কাজ।

তবে এ প্রকল্পের কেন্দ্র হবে ‘স্বাধীনতা স্তম্ভ’। নির্মাণ কাজ শুরু হলে অপসারণ করা হবে শাহবাগের পুলিশ কন্ট্রোল রুম ও ফুলের বাজার। উচ্ছেদ করা হবে মাস্টার প্ল্যানের বাইরে থাকা স্থাপনাগুলো।

এসব তথ্য জানিয়েছেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব হেদায়েতুল্লাহ আল মামুন।

বুধবাব সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আন্তঃমন্ত্রণালয়ের এক বৈঠক শেষে তিনি বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম.বিডিকে বলেন, ‘হাইকোর্টের নির্দেশ মেনে ঐতিহাসিক স্বাধীনতা স্তম্ভের ঐতিহ্য রার পাশাপাশি পর্যটকদের আকৃষ্ট করার সুযোগ রেখেই সোনার বাংলা সাংস্কৃতিক বলয় গড়ে তোলা হবে। ’

তবে হাইকোর্টে নির্দেশ থাকায় বুধবারের বৈঠকে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া যায়নি। আইন মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে পরামর্শ করে দুয়েক মাসের মধ্যেই প্রকল্পের মাস্টার প্ল্যান চূড়ান্ত করা হবে বলে তিনি জানান।

তিনি জানান, প্রকল্পের রাস্তা-ঘাট নির্মাণ করবে ঢাকা সিটি কর্পোরেশন (ডিসিসি)। বিভিন্ন দৃষ্টিনন্দন স্মৃতি জাগানিয়া স্থাপনা নির্মাণ করবে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়। স্বাধীনতা ও ভাষা আন্দোলন নিয়ে স্থাপনা নির্মাণ করবে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়। বিনোদন স্পট, ফোয়ারা ও শিল্প-সাহিত্য সংশ্লিষ্ট স্থাপনা নির্মাণ করবে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়।

তিনি বলেন, ‘এছাড়া আমাদের সঙ্গে কাজ করবে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগ। প্রকল্পের পুরো কাজ তদারকি করবে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়। ’

ভাষা আন্দোলন, স্বাধীনতা ও গ্রাম বাংলার সংস্কৃতি ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে পৌঁছে দিতে ‘সোনার বাংলা সাংস্কৃতিক বলয়’ স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।

এজন্য স্থাপত্য অধিদপ্তরের প্রধান স্থপতি এএসএম ইসমাইল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক এমদাদুল হক মো. মতলুব আলী,  ডিসিসির প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ মো. সিরাজুল ইসলাম ও ‘ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে স্বাধীনতা স্তম্ভ নির্মাণ (২য় পর্যায়)’ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক মিজান-উল-আলমের সমন্বয়ে কমিটি গঠন করে সরকার।

কমিটি এরই মধ্যে একটি নির্দিষ্ট সীমানা নির্ধারণ ও মাস্টার প্ল্যান চূড়ান্ত করে প্রতিবেদন জমা দিয়েছে।
প্রতিবেদনে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান এলাকা থেকে কয়েকটি স্থাপনা স্থানান্তরের পাশাপাশি মাস্টার প্লান অনুযায়ী শাহবাগের পুলিশ কন্ট্রোল রুম ও ফুলের মার্কেট স্থানান্তরের সুপারিশ করা হয়েছে।

সাংস্কৃতিক বলয়ের সীমানায় প্রস্তাবিত স্থাপনার মধ্যে রয়েছে- উত্তর পাশে রমনা পার্ক, শেরাটন হোটেল, ঢাকা কাব, জাতীয় সম্প্রচার কর্তৃপ ভবন, শিশুপার্ক। উত্তর-পূর্ব পাশে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইন্সটিটিউট, অফিসার্স কাব, বেইলি রোডের নাটক সরণি।
 
দণি পাশে আছে জাতীয় তিন নেতার মাজার, ঐতিহাসিক ঢাকা গেইট, শিশু একাডেমি, কার্জন হল, এশিয়াটিক সোসাইটি, ৫২’র ভাষা আন্দোলনের স্মৃতি বিজড়িত তৎকালীন কলাভবন ও ঐতিহাসিক আমতলা। দণি-পূর্ব পাশে রয়েছে প্রেসকাব ও দণি-পশ্চিম পাশে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার।

পূর্ব পাশে শিল্পকলা একাডেমি, ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউট মিলনায়তন এবং পশ্চিম পাশে জাতীয় জাদুঘর, পাবলিক লাইব্রেরি, চারুকলা অনুষদ, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের সমাধি সৌধ, শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদীন ও অন্যান্য জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির সমাধিস্থল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মসজিদ ও লাইব্রেরি, টিএসসি, অপরাজয়ে বাংলা ও বাংলা একাডেমী।  

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ১ ফেব্র“য়ারি বাংলা একাডেমীর একুশে বইমেলা উদ্বোধনকালে ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের স্বাধীনতা স্তম্ভকে কেন্দ্র করে একটি সাংস্কৃতিক বলয় তৈরির নির্দেশ দেন।

প্রধানমন্ত্রীর এ নির্দেশ অনুযায়ীই সাংস্কৃতিক বলয় স্থাপনের উদ্যোগ নেয় সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৩৮ ঘণ্টা, ১৪ জুলাই, ২০১০

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
welcome-ad