ঢাকা: বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনার আগে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া সেনানিবাসের বাসা ছেড়ে তিন দিন কোথায় ছিলেন- এর তদন্ত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব-উল-আলম হানিফ।
তিনি বলেন, তদন্তে বেরিয়ে আসা তথ্য জাতির সামনে প্রকাশ করা হবে।
বুধবার বিকেলে দলের সভাপতি শেখ হাসিনার ধানমণ্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলন তিনি একথা জানান।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ‘এটি আজও রহস্যময় বিডিআর বিদ্রোহের আগে নিজের সেনানিবাসের বাসা ছেড়ে কালো গ্লাসের গাড়িতে চেপে খালেদা জিয়া তিন দিনের জন্য অজ্ঞাতবাসে গিয়েছিলেন কেন?’
এ ঘটনার কোনো তদন্ত হবে কিনা জানতে চাওয়া হলে হানিফ বলেন, ‘এই সময় তিনি কোথায় ছিলেন এটি জাতি জানতে চায়। অনুসন্ধান চলছে, তথ্য পেলে আমরা জাতিকে জানাবো। ’
এ পর্যায়ে তার কাছে জানতে চাওয়া হয়- তদন্ত কোন পর্যায়ে রয়েছে?
জবাবে আওয়ামী লীগের এই যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘বিষয়টি তদন্তনাধীন। তাই এ বিষয়ে কিছু বলতে চাই না। ’
২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি পিলখানায় বিদ্রোহের ঘটনায় বিডিআরের তৎকালীন মহাপরিচালক মেজর জেনারেল শাকিল আহমেদ ও ৫৬ সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৩ জন নিহত হন।
ওই ঘটনার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের অনেকেই খালেদা জিয়া ওই ঘটনার দিন খুব সকাল থেকে তিন দিন সেনানিবাসের বাড়িতে ছিলেন না বলে অভিযোগ করেছিলেন।
বিদ্রোহের তদন্ত প্রতিবেদনের ব্যাপারে বিএনপি মহাসচিব খোন্দকার দেলোয়ার হোসেনের বক্তব্যের সমালোচনা করে
মাহাবুব-উল-আলম হানিফ বলেন, ‘বিডিআর বিদ্রোহ ব্যর্থ করে দেওয়ায় এবং শান্তিপূর্ণভাবে পরিস্থিতি মোকাবেলায় সক্ষম হওয়ার কারণেই কী বিএনপি নেতারা ুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছিলেন? ‘মাছের মার পুত্র শোকের’ মতোই সে সময় তারা সেনাবাহিনীর জন্য মায়া কান্না জুড়ে নানা উস্কানিমূলক বক্তব্য দিয়ে ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করতে চেয়েছিলেন। ’
তিনি বলেন, ‘ওই ঘটনায় নিহত ৫৭ সামরিক কর্মকর্তার ৩৩ জনই আওয়ামী লীগ সমর্থক পরিবারের সদস্য। তবুও বিষয়টিকে আমরা দলীয়ভাবে নেইনি। সরকারের যদি রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করার উদ্দেশ্যই থাকতো তাহলে তদন্তকারী কর্তৃপক্ষকে প্রভাবিত করে বিএনপি বা অন্য দলকে এই মামলায় জড়ানোর চেষ্টা করা হতো। অথচ চিহ্নিত সন্ত্রাসী গডফাদার নাসিরউদ্দিন পিন্টুর জন্য বিএনপির দরদের শেষ নেই। কেননা পিন্টু ছিল খালেদা জিয়ার দুষ্টু ছেলে। ’
হানিফ উল্টো প্রশ্ন তুলেন, ‘পিন্টু যদি এত পবিত্র হয়ে থাকে তাহলে আপনাদের সরকারের সময় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিলো কেন। ’
খোন্দকার দেলোয়ার দায়িত্বজ্ঞানহীন বক্তব্য দিয়েছেন বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
এদিকে সুনির্দিষ্ট ও সুস্পষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে জামায়াত নেতাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে মন্তব্য করে হানিফ বলেন, ‘কোনো রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে তারা গ্রেপ্তার হননি। দেশবাসী জানে রাজশাহীতে শিবির ক্যাডাররা হত্যাকাণ্ড ঘটানোর আগে জামায়াত নেতারা মিটিং করে এসেছিলো। মোবাইলের কললিস্ট পরিক্ষা করে দেখা গেছে মুজাহিদের সঙ্গে শিবির নেতাদের ঘণ্টায় ঘণ্টায় কথা হয়েছে। ’
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, নুহ-উল-আলম লেনিন, আফম বাহাউদ্দিন নাছিম, অ্যাডভোকেট আফজাল হোসেন ফরিদুন্নাহার লাইলী, মৃণাল কান্তি দাশ, সুজিৎ রায় নন্দী প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ১৮১৫ ঘণ্টা, জুলাই ১৪, ২০১০