ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

গুলিবিদ্ধ ৩ জন হাসপাতালে

কেরানিগঞ্জে বিএনপি অফিসে হামলা, আমানসহ আহত শতাধিক

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১১৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৮, ২০১০
কেরানিগঞ্জে বিএনপি অফিসে হামলা, আমানসহ আহত শতাধিক

ঢাকা: কেরানিগঞ্জের শাক্তা ইউনিয়নে বিএনপির কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে হামলা ও সংঘর্ষে দলটির য্গ্মু-মহাসচিব আমান উল্লাহ আমানসহ প্রায় শতাধিক নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে গুলিবিদ্ধ দু’জনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং অন্য একজনকে স্কয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।



বিএনপির দাবি, সম্মেলন চলাকালে যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও পুলিশ অতর্কিতে হামলা চালায়। তাদের বেধড়ক হামলা ও পিটুনিতে আমানউল্লাহ আমানসহ অসংখ্য নেতাকর্মী আহত হয়েছেন।

তবে পুলিশের ভাষ্য, কমিটি গঠন নিয়ে বিএনপির দুটি গ্রুপ নিজেদের মধ্যে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। সংঘর্ষ থামাতে গেলে দু’পক্ষের নেতাকর্মীরা পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এ সময় বেশ কয়েকজন আহত হন।    

শুক্রবার বিকেল সাড়ে পাঁচটায় এই হামলা ও সংঘর্ষ শুরু হয়।

সন্ধ্যায় কেরানিগঞ্জ সার্কেলের এএসপি মো. জাকারিয়া বাংলানিউজকে সংঘর্ষের খবরটির সত্যতা নিশ্চিত করেন।

বাংলানিউজের পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হলে ঘটনাস্থল থেকে আমান উল্লাহ আমান বাংলানিউজকে বলেন, ‘আমি নিজেও আহত। পার্টি অফিসে অবরুদ্ধ হয়ে আছি। যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও পুলিশ আমাদের মেরে ফেলছে। আমাদের রক্ষা করুন। ’

তবে রাত সাড়ে ৮টার দিকে সংঘর্ষ থেমে গেলে আহত আমান উল্লাহ আমান নেতাকর্মী ও অনুসারীদের নিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।

সন্ধ্যা ৭টায় মডেল থানার এএসআই ফারুক ‘সেখানে ত্রিপক্ষীয় সংঘর্ষ চলছে’- বলে বাংলানিউজকে জানিয়েছিলেন। তার ভাষ্য, শাক্তা ইউনিয়নে বিএনপির কমিটি গঠন নিয়ে তাদের নিজেদের মধ্যেই এ সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। পুলিশ সেখানে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা চালায়।

সংঘর্ষে কতজন আহত হয়েছেন জানতে চাইলে তিনি তখন বলেন, ‘বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। তবে সঠিক সংখ্যা এখনই বলা যাচ্ছে না। ’
বিএনপির বেশ ক’টি সূত্র দেড়শ জনের মতো আহত হয়েছেন বলে দাবি করেছে। তবে আহতদের প্রকৃত সংখ্যা সম্বন্ধে এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

স্থানীয় বিএনপি কর্মী মো. উজ্জ্বল ও আলী হোসেন বাংলানিউজকে জানান, শাক্তা ইউনিয়নের শিকারিতলায় কেরানিগঞ্জ মডেল থানা বিএনপি অফিসে সম্মেলন চলছিল। আমান উল্লাহ আমান সেখানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখছিলেন। তার বক্তব্য শেষ হওয়া মাত্র ঢাকা জেলা যুবলীগ সভাপতি শফিউল আযম খানের নেতৃত্বে যুবলীগ ও ছাত্রলীগ, কেরানিগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান শাহীন আহমেদ  ও তার সমর্থক এবং পুলিশ একযোগে বিএনপি অফিসে হামলা চালায়। এ সময় তারা অফিস ভাঙচুর করে ও নেতাকর্মীদের বেধড়ক লাঠিপেটা শুরু করে। পরে তা ত্রিপক্ষীয় সংঘর্ষে রূপ নেয়।

এদিকে রাত সোয়া আটটায় মাথায় এবং শরীরের বিভিন্ন স্থানে গুলিবিদ্ধ দুইজনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং অপর গুলিবিদ্ধি এক স্থানীয় নেতাকে রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এরা হলেন ঢাকা জেলা ছাত্রদলের কোষাধ্যক্ষ জুলহাস হোসেন রেজা (২৫) এবং কেরানীগঞ্জের বাসতা ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ডের যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফ শাহজাহান (৩৫) ও ঢাকা জেলা ছাত্রদলের সভাপতি রেজাউল করিম পল।

ফখরুলের নিন্দা : বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বিএনপি অফিসে হামলা ও বহু নেতাকর্মীর আহত হওয়ার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে এর তীব্র নিন্দা জানান। তিনি অবিলম্বে এই ন্যক্কারজনক ঘটনার বিচার ও দোষীদের শাস্তি দাবি করেন। পাশাপাশি তিনি পুলিশ ও ছাত্র-যুবলীগের হামলা বন্ধ করা ও আহত নেতাকর্মীদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা, আটক নেতাকর্মীদের মুক্তি ও হামলাকারীদের গ্রেপ্তারের দাবি জানান।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৩৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ৮, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

জাতীয় এর সর্বশেষ