ঢাকা, শনিবার, ৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

প্রাকৃতিক দুর্যোগে গত ৯ মাসে বিশ্বব্যাপী মৃত্যু ২১ হাজার

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৩৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৮, ২০১০

ঢাকা: ‘জলবায়ু পরিবর্তনজনিত প্রাকৃতিক দুর্যোগে ২০১০ সালের প্রথম ৯ মাসেই বিশ্বব্যাপী ২১ হাজার মানুষ প্রাণ হারিয়েছে। এ সংখ্যা ২০০৯ সালে একই ধরনের দুর্যোগে প্রাণহানির দ্বিগুনেরও বেশি।

আর ২০১০ সাল বিশ্বের ইতিহাসের সবচেয়ে উষ্ণতম বছরগুলোর একটি হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। ’

আন্তর্জাতিক সংস্থা অক্সফাম প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়েছে। মেক্সিকোর কানকুন শহরে জাতিসংঘ জলবায়ু সম্মেলনকে সামনে রেখে এ প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।

‘অতীতের সব সীমা ছাড়িয়ে : যাদের প্রয়োজন তাদের জন্যই জলবায়ু আলোচনা চাই’ শীর্ষক প্রতিবেদনে বলা হয়, তাপমাত্রা বৃদ্ধি ও সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির কারণে সৃষ্ট প্রাকৃতিক দুর্যোগও গত দশকের তুলনায় আশংকাজনকভাবে বেড়েছে। ভবিষ্যতে এমন দুর্যোগের সংখ্যা কমাতে হলে কানকুন সম্মেলন থেকেই জলবায়ু পরিবর্তন রোধ এবং এর ক্ষয়ক্ষতি কাটিয়ে ওঠার বিষয়ে বিশ্ব নেতৃবৃন্দকে সুনির্দিষ্ট সিদ্ধান্তে আসতে হবে। ’

সোমবার কানকুন সম্মেলন শুরু হবে এবং আগামী ১০ ডিসেম্বর পর্যন্ত চলবে। জলবায়ু পরিবর্তনের য়তি সামাল দেওয়ার ল্েয কানকুন সম্মেলনের মাধ্যমে একটি ন্যায্য জলবায়ু তহবিল গঠনের দাবিও জানিয়েছে অক্সফাম।

প্রতিবেদনটির লেখক টিম গোর বলেন, ‘বিশ্বের তাপমাত্রা যেন ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি বাড়তে না পারে সে জন্য কানুকুন আলোচনায় সবগুলো দেশ যাতে তাদের গ্যাস নির্গমনের মাত্রা নিয়ন্ত্রণের প্রতিশ্র“তি দেয় সে বিষয়টিও নিশ্চিত করতে হবে। এছাড়া জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ে একটি সমন্বিত, নায্য ও আইনী বাধ্যবধকতাসম্পন্ন আন্তর্জাতিক চুক্তির পথ পরিষ্কার করতে হবে। ’

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১০ সালে সারা বিশ্বেই বন্যা, তাপমাত্রা বৃদ্ধি ও সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বাড়ার মত আবহাওয়াজনিত দুর্যোগ আঘাত হেনেছে। বিশ্বে গত ১০ বছর ধরে মারাত্মক প্রাকৃতিক দুর্যোগের গড় সংখ্যা ছিল ৭৭০, বর্তমান বছরে দুর্যোগের সংখ্যা এ গড়কে অতিক্রম করে গেছে। বিশ্বের ইতিহাসের সবচেয়ে উষ্ণতম বছরগুলোর একটি হিসেবেও চিহ্নিত হয়েছে ২০১০ সাল। পাকিস্তানে চলতি বছরে রেকর্ডকৃত তাপমাত্রা ৫৩ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা এ যাবতকালে রেকর্ডকৃত এশিয়ার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা।

অক্সফামের প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১০ সালের প্রথম নয় মাসেই প্রাণ হারিয়েছে ২১ হাজার মানুষ। এমন দুর্যোগে ২০০৯ সালে মৃতের সংখ্যা ছিল এর অর্ধেকেরও কম। পাকিস্তানের দুই কোটি মানুষ এ বছরের ভয়াবহ বন্যার কারণে তিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়া রাশিয়ায় এবারের তাপমাত্রা দেশটির দীর্ঘদিনের গড় তাপমাত্রা ৭.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসকে ছাড়িয়ে যায়। ফলে মস্কোর মৃত্যুহার দ্বিগুণ হয়ে যায়। তাপমাত্রা বৃদ্ধির ফলে সূত্রপাত হওয়া আগুনে দেশটির মোট গম উৎপাদনের ২৬ শতাংশ পুড়ে যায়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, এসবের মধ্যে কোনো নির্দিষ্ট দুর্যোগ বা দুর্ভোগের জন্য সরাসরি জলবায়ু পরিবর্তনকে হয়তো দায়ী করা যায় না। কিন্তু আবহাওয়াবিদরা নিশ্চিত, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে আগামী দিনগুলোতে এসব দুর্যোগের সংখ্যা ও তীব্রতা আরও বাড়বে। ফলে নতুন করে আরও অসংখ্য মানুষ ত্রিগ্রস্ত হবে।

তাদের দাবি, যেভাবেই হোক দ্রুত ন্যায্য জলবায়ু তহবিলের অর্থ সংগ্রহ করা অপরিহার্য। কারণ যত দ্রুত এই অর্থ ঝুঁকির মধ্যে থাকা দেশগুলোকে দেওয়া হবে, তত সাশ্রয়ে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হবে। এক হিসেবে দেখা গেছে, জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে খাপ খাওয়ার জন্য এক ডলার ব্যয় করলে তা ৬০ ডলারের য়তি ঠেকাতে পারে।

বাংলাদেশ সময় : ২০৩৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৮, ২০১০

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
welcome-ad