ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫

লাইফস্টাইল

জানা নেই কোনো দিবস, জীবন যুদ্ধ প্রতিদিনের

শফিকুল ইসলাম খোকন, উপজেলা করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭৩৭ ঘণ্টা, মার্চ ৮, ২০১৮
 জানা নেই কোনো দিবস, জীবন যুদ্ধ প্রতিদিনের যারা সংগ্রাম করছেন শুধু একমুঠো ভাতের জন্য

উপকূলের প্রান্তিক জনপদ ঘুরে: নারী দিবস মানেই আমরা বুঝি এক রঙের শাড়ি পরে শহুরে কিছু সফল নারী ফুলের মঞ্চে বসে নারী মুক্তির কথা বলছেন। কিন্তু তাদের কথা কি জানি, যারা সংগ্রাম করছেন শুধু একমুঠো ভাতের জন্য। 

আসুন তাদের গল্পও জানি...

সংসারের অভাব নুরজাহানের সংসারের শুরু থেকেই। স্বামী হাশেম খান সেই কবে মারা গেছে।

৩ ছেলে ও ২ মেয়ে নিয়ে ৩০ বছর ধরেই মাছ ধরে সংসার জীবন কাটছে তার। কান্নাজড়িত কন্ঠে বলছেন ‘ দুনিয়াতে  আইছি হবদে সুখ দেহি নাই’।

পাথরঘাটা উপজেলার বলেশ্বর ও বিষখালী কোল ঘেষা চরলাঠিমারা গ্রাম। যেখানের মানুষ মাছের ওপরই নির্ভরশীল। চরলাঠিমারা গ্রামের নুরজাহানের মতো অসংখ্য নারী জীবিকার তাগিদে মাছ ধরে সংসার চালাচ্ছেন। পিতৃহারা সন্তানদের নিয়ে কোনো মতে দুমুঠো খেয়ে দিনাতিপাত করছেন তারা। একদিন মাছ না ধরলে পরদিন জোটেনা খাবার। অনেকেই সংসারের অভাব-অনটনের কারণে সন্তান আত্মীয় বাড়িতে অথবা যারা সংগ্রাম করছেন শুধু একমুঠো ভাতের জন্যকারো বাড়িতে কাজে দিচ্ছে।  

আজ আন্তর্জাতিক নারী দিবস। নারী দিবস কি তা এখানকার নারীরা জানেননা বা বোঝেন না।  তারা বুঝেন কাজ না করলে খাওন জুটবে না। নুরজাহান, আকলিমা বেগম, রওশন আরা, হালিমা ও  বিউটি বেগমের মতো অসংখ্য নারী দিন রাত খেয়ে না খেয়ে মাছ শিকার করছে। সকাল থেকে দুপুর হয়ে সন্ধ্যা পর্যন্ত চরলাঠিমারা সংরক্ষিত বনের ছোট ছোট খালে তারা মাছ শিকার করছেন।  

প্রতিদিন ২ থেকে ৩শ টাকায় মাছ বিক্রি করে সংসার চালাচেছন তারা। আর যেদিন মাছ ধরতে পারছে না সেদিন চুলোতে আগুন জ্বলছে না।  


কথা হয় রওশন আরার সঙ্গে। তার স্বামী মারা গেছেন ৮ বছর আগে। ২ ছেলে ১ মেয়ে নিয়ে অতি কষ্টে দিন যাপন করছেন। ‘রওশন আরা বলেন, মোগো ধানের জমি নাই। মাছ ধইরাই সংসার চালাইতে অয়।  

পাথরঘাটা কলেজের ইসলামিক স্টাডিজের সহকারি অধ্যাপক মো. আহসান হাবীব বাংলানিউজকে বলেন, ‘নিজের কাজ নিজে করাটা খারাপ নয়। এখানকার নারীরা যেভাবে শ্রম দিয়ে কাজ করে সংসারের হাল ধরছেন সেটি অবশ্যই প্রশংসনীয়। তবে এসব নারীদের সরকারি সহায়তার মাধ্যমে এসব কাজে আরও উদ্যোগি করা প্রয়োজন। কারণ এরাই অর্থনৈতিক চাঙ্গা করার মুল হাতিয়ার। ’ বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের পাথরঘাটা শাখার সাধারণ সম্পাদক নারী নেত্রী মুনিরা ইয়াসমিন খুশি বলেন, নারীরা যে সব কাজে এগিয়ে তা দেখতে হলে এখানে আসতে হবে। নারী উন্নয়নের ক্ষেত্রে এসব নারীরা যেমন অংশিদার, সেকারণে সরকারের পক্ষ থেকে এসব নারীদের বিনা সুদে ঋণ সহায়তা দেয়া উচিত।  

বাংলাদেশ সময়: ১৩৩৭ ঘণ্টা, মার্চ ০৮, ২০১৮
এসআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।