ঢাকা, শুক্রবার, ২০ বৈশাখ ১৪৩১, ০৩ মে ২০২৪, ২৩ শাওয়াল ১৪৪৫

আইন ও আদালত

পুঠিয়ার সেই হত্যা মামলা তদন্তে পিবিআইকে নির্দেশ

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২২৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২, ২০১৯
পুঠিয়ার সেই হত্যা মামলা তদন্তে পিবিআইকে নির্দেশ

ঢাকা: পুঠিয়ার শ্রমিক নেতা নূরুল ইসলাম হত্যা মামলায় তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনার জন্য পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

পুঠিয়া উপজেলার শ্রমিক নেতা নূরুল ইসলাম হত্যা মামলার এজাহার বদলে দেওয়ার অভিযোগের ঘটনায় রিটের রায়ে রোববার (০১ ডিসেম্বর) বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের বেঞ্চ এ নির্দেশ দেন।

আদালত প্রত্যাশা করেন যে, পিবিআই প্রধান ডিআইজি বনজ কুমার মজুমদার তদন্ত তদারকিতে বিশেষ ভূমিকা রাখবেন।

বর্তমান তদন্তকারী কর্মকর্তা/সংস্থাকে অবিলম্বে কেস ডকেট পিবিআই’র কাছে হস্তান্তরের নির্দেশ দেওয়া হলো।  

‘পিবিআইকে তদন্তকালে মূল এজাহারের বর্ণনা, রাজশাহীর চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের অনুসন্ধান রিপোর্ট ও অনুসন্ধান কার্যক্রমে সাক্ষীদের সাক্ষ্য বিবেচনায় গ্রহণের জন্য নির্দেশ দেওয়া হলো। ’  

এর আগে শুনানি শেষে ২৭ নভেম্বর হাইকোর্ট বেঞ্চ রায়ের জন্য এ দিন ঠিক করেন।  

আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া।     

রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিশ্বজিৎ দেবনাথ ও অমিত তালুকদার। দুদকের পক্ষে ছিলেন শাহীন আহমেদ।

আদালত বলেন, আমরা দৈনন্দিন বিচার কার্যক্রম পরিচালনা করতে গিয়ে ইদানিং প্রায়ই লক্ষ্য করছি যে, দেশের বিভিন্নস্থানে স্থানীয় পুলিশ কর্মকর্তাসহ পুলিশ ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের বিরুদ্ধে নানাবিধ অভিযোগ উত্থাপিত হচ্ছে এবং এসব বিষয়ে ভুক্তভোগীরা মহাপুলিশ পরিদর্শক বরাবর অভিযোগও দায়ের করেছেন। কিন্তু অভিযোগগুলো দ্রুত নিষ্পত্তি হচ্ছে না। বাংলাদেশ পুলিশ মহান মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা সংগ্রাম এবং পরবর্তী বিভিন্ন সময়ে দেশের সামগ্রিক আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি রক্ষা ও উন্নয়ন, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ দমন, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার, জাতিসংঘ শান্তি মিশনের কার্যক্রমে যে অনবদ্য অবিস্মরণীয় ভূমিকা রেখেছে এবং রেখে চলেছে তা শুধু পুলিশ বাহিনীর জন্য গৌরবের নয়, সমগ্র জাতির গৌরব। কিন্তু এই গৌরব গুটি কয়েক পুলিশ কর্মকর্তা বা সদস্যের অন্যায়, বেআইনি আচরণ ও অপরাধের কারণে ম্লান হতে দেওয়া যাবে না।

‘সে কারণে আদালত প্রত্যাশা করে যে, পুলিশসহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ উত্থাপিত হলে ওই অভিযোগ সম্পর্কে দ্রুততার সঙ্গে বিভাগীয় তদন্ত সম্পন্ন এবং দোষী প্রমাণিত হলে দ্রুত আইনানুগ পদক্ষেপ গ্রহণ করা প্রয়োজন। আদালতের এ প্রত্যাশা বিবেচনায় নিয়ে মহাপুলিশ পরিদর্শক এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ এবং ‘আইজিপি কমপ্লেইন্টস মনিটরিং সেল’র কার্যক্রমকে আরো কার্যকর ও গতিশীল করবেন মর্মে আদালতের দৃঢ় বিশ্বাস বলে উল্লেখ করেন হাইকোর্ট’।

গত ২২ জুলাই একটি জাতীয় দৈনিকে ‘এজাহার বদলে দিলেন ওসি’ শীর্ষক প্রতিবেদনসহ বিভিন্ন জাতীয় ও আঞ্চলিক দৈনিকের প্রতিবেদন যুক্ত করে এ রিট করা হয়।

নুরুল ইসলামের মেয়ে নিগার সুলতানার ওই রিটের পর ১৬ সেপ্টেম্বর ওসি সাকিল উদ্দিন আহমেদের এজাহার বদলে দেওয়ার ঘটনায় বিচারিক তদন্তের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে রুলও জারি করেন।

ওই আদেশের পর রাজশাহীর চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ঘটনা তদন্ত করে হাইকোর্টে প্রতিবেদন দেন। বুধবার ওই প্রতিবেদনের ওপর শুনানি হয়।

প্রতিবেদনে এজাহার বদলে দেওয়ার ঘটনায় ওসি সাকিল উদ্দিনসহ ৫ পুলিশ কর্মকর্তা দায় এড়াতে পারে না বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ২১২৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০১, ২০১৯
ইএস/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।