ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

আইন ও আদালত

জামিন পেলেও মুক্তি পাচ্ছেন না খালেদা

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৩৫৩ ঘণ্টা, মে ১৬, ২০১৮
জামিন পেলেও মুক্তি পাচ্ছেন না খালেদা খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা, ছবি: শাকিল আহমেদ

ঢাকা: জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় পাঁচ বছরের কারাদণ্ডপ্রাপ্ত বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে হাইকোর্টের দেওয়া জামিন বহাল থাকলেও এখনি মুক্তি পাচ্ছেন না তিনি।

তার আইনজীবীরা বলেছেন, কুমিল্লা, নড়াইল ও ঢাকায় থাকা মামলায় জামিন নেওয়ার পরই কেবল তিনি জামিনে মুক্তি পাবেন।

অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় জামিন বাতিলে রাষ্ট্রপক্ষ ও দুদকের করা আপিল খারিজ করে দিয়ে প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে চার বিচারপতির আপিল বেঞ্চ বুধবার রায় দেন।

একইসঙ্গে নিম্ন আদালতের সাজার বিরুদ্ধে খালেদা জিয়ার যে আপিল করেছেন সে আপিল বিচারপতি ইনায়েতুর রহিমের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চে ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

এ রায়ের পর খালেদা জিয়ার মুক্তিতে বাধা আছে কিনা এমন প্রশ্নে খালেদা জিয়ার আইনজীবী জয়নুল আবেদীন বলেন, সরকার তো সব সময় বাধা দেয়। এখন তার বিরুদ্ধে অন্য যেসব মামলা আছে সেগুলোতে দ্রুত হাইকোর্ট থেকে জামিন নেওয়ার চেষ্টা করবো। আইনি প্রক্রিয়ায় সব বাধা দূর করা হবে।

খালেদার মুক্তির ব্যাপারে ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেন, কিছুটা বাধা আছে। যে মামলাগুলো আছে। সেগুলোতে জামিন নিতে হবে। এখন দ্রুত চেষ্টা করবো আইনি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করবো। তার পর তিনি আমাদের মাঝে মুক্ত হয়ে আসবেন।

দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান বলেন, আমরা হাইকোর্ট বিভাগে এ মামলার আপিল শুনানিতে প্রস্তুত আছি।

এর আগে সবপক্ষের শুনানি শেষে আপিল বিভাগ রায়ের জন্য ১৫ মে দিন নির্ধারণ করেন। কিন্তু মঙ্গলবার (১৫ মে) অ্যাটর্নি জেনারেল আরও শুনানি করেন। তাই জামিন প্রশ্নে অ্যাটর্নি জেনারেলের শুনানি শেষে বুধবার (১৬ মে) রায় ঘোষণার দিন ধার‌্য করেন আপিল বিভাগ।

আপিল নিষ্পত্তি এবং খালেদার জামিন বাতিল চেয়ে দুদকের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী খুরশীদ আলম খান এবং রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। তবে খালেদা জিয়াকে হাইকোর্টের দেওয়া জামিন বহাল রাখার আর্জি জানিয়ে শুনানি করেন তার আইনজীবী ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, খন্দকার মাহবুব হোসেন, এ জে মোহম্মদ আলী ও জয়নুল আবেদীন। ৮ মে সকালে খালেদার জামিন প্রশ্নে প্রথমে শুনানি করেন দুদকের পক্ষে খুরশিদ আলম খান। পরে রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলমও শুনানি করেন। এরপর খালেদার পক্ষে এজে মোহাম্মদ আলী শুনানি শুরু করলেও অসমাপ্ত থেকে যায়। সেখান থেকেই ০৯ মে সকালে শুনানি শুরু করেন তিনি।

গত ০৮ ফেব্রুয়ারি মামলাটিতে খালেদা জিয়ার ৫ বছর কারাদণ্ড হয়। একইসঙ্গে খালেদাপুত্র ও বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ অপর পাঁচ আসামিকে ১০ বছর করে দণ্ড দেওয়া হয়।

রায় ঘোষণার ১১ দিন পর ১৯ ফেব্রুয়ারি বিকেলে রায়ের সার্টিফায়েড কপি বা অনুলিপি হাতে পান খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা। এরপর হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় ২০ ফেব্রুয়ারি এ আবেদন দায়ের করেন।
 
১২ মার্চ খালেদা জিয়াকে চার মাসের জামিন দেন হাইকোর্ট। হাইকোর্টের দেওয়া ওই জামিন স্থগিত চেয়ে পরদিন ১৩ মার্চ আপিল বিভাগে আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ ও দুদক।

পরে আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত এ দুই আবেদনের শুনানির জন্য ১৪ মার্চ দিন ধার্য করেন। এরপর ১৪মার্চ আপিল বিভাগ রাষ্ট্রপক্ষ ও দুদককে জামিনের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে) দায়ের করতে বলে চার মাসের জামিন ১৮ মার্চ পর্যন্ত স্থগিত করেন। এ আদেশ অনুসারে পরের দিন ১৫ মার্চ রাষ্ট্রপক্ষ ও দুদক লিভ টু আপিল দায়ের করেন।
 
এ লিভ টু আপিলের ওপর শুনানি হয় ১৮ মার্চ। শুনানি শেষে আবেদনের ওপর আদেশের জন্য ১৯ মার্চ দিন ধার্য করেন আপিল বিভাগ। পরে ১৯ মার্চ আদালত লিভ টু আপিল মঞ্জুর করেন। একইসঙ্গে আপিল শুনানির জন্য ৮ মে দিন ধার্য করেন।

বাংলাদেশ সময়: ০৯৪৭ ঘণ্টা, মে ১৬, ২০১৮
ইএস/ওএইচ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।