ঢাকা, বুধবার, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

আইন ও আদালত

‘মানুষ মরতে থাকবেই, মরুক!’

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭৫০ ঘণ্টা, এপ্রিল ৩০, ২০১৮
‘মানুষ মরতে থাকবেই, মরুক!’ সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছেন এ বি এম খায়রুল হক

ঢাকা: ট্রাফিক আইনের পরিবর্তন প্রয়োজন উল্লেখ করে আইন কমিশনের চেয়ারম্যান ও সাবেক প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হক বলেছেন, ট্রাফিক ল’ চেঞ্জ হওয়া প্রয়োজন বলে আমি মনে করি। দেশের লোক যদি মনে করে ট্রাফিক ল’ চেঞ্জ হওয়া দরকার, চেঞ্জ হবে। যদি মনে করে চেঞ্জ হওয়ার প্রয়োজন নেই, তাহলে হবে না। মানুষ মরতে থাকবেই, মরুক!

সোমবার (৩০ এপ্রিল) প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের কাছে এমন মন্তব্য করেন তিনি। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন কমিশনের সদস্য বিচারপতি এ টি এম ফজলে কবির।

প্রধান বিচারপতির সঙ্গে বৈঠক শেষে সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হক বলেন, কমার্শিয়াল কোর্ট, কমার্শিয়াল ডিসপিউট ও আর্বিট্রেশন নিয়ে আলোচনা হয়েছে। বাংলাদেশের অনেক আর্বিট্রেশন সিঙ্গাপুরে চলে যায়। আমাদের দেশের আর্বিট্রেশন কোর্টগুলো আরো ইফিশিয়েন্ট করা জরুরি। বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট অথরিটির আইন চেঞ্জ করার জন্য অলরেডি ফিল্ড ওয়ার্ক শুরু করে দিয়েছি। আর্বিট্রেশন অ্যাক্ট কিভাবে আরো কার্যকরী করা সম্ভব যাতে অল্প সময়ের মধ্যে কম খরচে আর্বিট্রেশন হতে পারে।

তিনি বলেন, দেশে যত ইনভেস্টমেন্ট বাড়বে তত কমার্শিয়াল ডিসপিউট বাড়বে। ডিসপিউট বাড়লে হয় কোর্টে যাবে নয় আর্বিট্রেশনে যাবে। আমাদের দেশের কোর্টগুলো সিআরপিসির আন্ডারে। এখানে কমার্শিয়াল ডিসপিউট রিজলভ করতে গেলে অনেক সময় লাগে। তার কারণে ইনভেস্টমেন্ট শাইআউট হচ্ছে না।

কমার্শিয়াল কোর্ট কিভাবে যুগপোযোগী করা যায়, নতুন কোর্ট করার প্রয়োজন আছে কিনা, এ ব্যাপারে আলাপ-আলোচনা করেছি। কারণ চিফ জাস্টিসের মতামত গুরুত্ববহন করে বলে জানান বিচারপতি খায়রুল হক।

তিনি বলেন, ট্রাফিক ল’ নিয়ে আলোচনা করেছি। ট্রাফিক ল’ চেঞ্জ প্রয়োজন বলে আমি মনে করি। দেশের লোক যদি মনে ট্রাফিক ল চেঞ্জ হওয়া দরকার, চেঞ্জ হবে। আর যদি দেশের লোক মনে করে চেঞ্জ হওয়ার প্রয়োজন নেই তাহলে হবে না। মানুষ মরতে থাকবেই, মরুক।

কেন পরিবর্তন দরকার এমন প্রশ্নে বিচারপতি খায়রুল হক বলেন, আজকেই কালের কণ্ঠে আমার একটি ইন্টারভিউ বেরিয়েছে। তাতে অনেক কিছু এক্সপ্লেইন করেছি। যেখানে ড্রাইভিং লাইসেন্স ছাড়া যদি কেউ গাড়ি চালায় তার সর্বোচ্চ শাস্তি হচ্ছে চার মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড এবং ৫০০ টাকা। কার‌্যক্ষেত্রে অনেক সময় দেখছি তিন দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড বা ৪০০ টাকা জরিমানা। লাইসেন্স ছাড়া চালিয়ে যদি এইটুকু পেনাল্টি হয় তাহলে ড্রাইভিং লাইসেন্স নেওয়ার গরজ তেমন কেউ বোধ করবে না।

বিচারপতি খায়রুল হক বলেন, ইদানিং তো আরো একটা নতুন দেখছি, এক গাড়ি আরেক গাড়ির উপর উঠাই দিচ্ছে। যেটা আজকাল আসা যাওয়ার সময় দেখি। সড়ক দুর্ঘটনা কিভাবে বাড়ছে; মানুষের পা চলে যাচ্ছে, হাত চলে যাচ্ছে, মাথা চলে যাচ্ছে। এভাবে তো কোনো সভ্য দেশ চলতে পারে না। এজন্যই দরকার আইনের পরিবর্তন।

তবে শাস্তি বাড়িয়ে কেবল হবে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, এটার (আইনের) এনফোর্সমেন্টও প্রয়োজন। আমাদের মনোবৃত্তি-মনোভাব এটাও চেঞ্জ করা প্রয়োজন। গাড়ির যে মালিক তার ছেলেও কাল মারা যেতে পারে। যে বিচারক ৪০০ টাকা জরিমানা করে ছেড়ে দিচ্ছেন তার ছেলেও কাল মারা যেতে পারে। আইনের পরিবর্তন বড় প্রয়োজন বলে আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি।

বাংলাদেশ সময়: ১৩৪৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ৩০, ২০১৮/আপডেট: ১৪০৭ ঘণ্টা
ইএস/এমজেএফ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।