ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

আইন ও আদালত

ধর্ষণের শিকার নারীর ‘টু ফিঙ্গার’ পরীক্ষা নিষিদ্ধ 

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৩৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ১২, ২০১৮
ধর্ষণের শিকার নারীর ‘টু ফিঙ্গার’ পরীক্ষা নিষিদ্ধ 

ঢাকা: ধর্ষণের শিকার নারীর মেডিকেল পরীক্ষায় ‘টু ফিঙ্গার’ (‘দুই আঙ্গুলের’ মাধ্যমে পরীক্ষা) পদ্ধতি নিষিদ্ধ ঘোষণা করে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট।

বৃহস্পতিবার (১২ এপ্রিল) বিচারপতি গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুর ও বিচারপতি এ কে এম সাহিদুল হকের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন। বর্তমানে ধর্ষণের পরীক্ষার জন্য সরকারের করা হেলথ কেয়ার প্রটোকলে বর্ণিত পদ্ধতি অনুসরণ করতে বলা হয়েছে।

 

একই সঙ্গে পরীক্ষার সময় ভিকটিমের আত্মীয়, নারী চিকিৎসক, নারী পুলিশ, নারী নার্স রাখতে বলা হয়েছে।  এছাড়া ধর্ষণ মামলার বিচারকালে আইনজীবী কখনও ভিকটিমকে অমর্যাদাকর প্রশ্ন করতে পারবেন না বলেও রায়ে উল্লেখ করেছেন আদালত।  

আদালতে রিটের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার সারা হোসেন।  এর আগে ২০১৬ সালে এ পদ্ধতিকে ‘সেকেলে ও অনৈতিক’ বলে হাইকোর্টে মৌখিকভাবে মতামত উপস্থাপন করেছেন পাঁচ ফরেনসিক মেডিকেল বিশেষজ্ঞ।

বিশেষজ্ঞরা আদালতে বলেন, ‘এ পদ্ধতি সেকেলে। যৌন নির্যাতনের পরীক্ষার আধুনিক অনেক পদ্ধতি আবিষ্কৃত হয়েছে। ’

সে সময় হাইকোর্টে মৌখিক অভিমত দিয়েছিলেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের সাবেক প্রধান ডা. হাবিবুজ্জামান চৌধুরী, একই হাসপাতালের ন্যাশনাল ফরেনসিক ডিএনএ প্রোফাইল ল্যাবরেটরির প্রধান ডা. সাফিউর আখতারুজ্জামান, মিরপুরের ডেল্টা মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ডা. জাহিদুল করিম আহমেদ, বারডেম হাসপাতালের ফরেনসিক মেডিসিনের প্রফেসর ডা. গুলশান আরা এবং  ইন্দো-প্যাসিফিক অ্যাসোসিয়েশন অব ল’, মেডিসিন অ্যান্ড সায়েন্সের ভাইস প্রেসিডেন্ট মুজাহিরুল হক।

সনাতন পদ্ধতিতে (দুই আঙ্গুলের মাধ্যমে পরীক্ষা) ধর্ষিতার মেডিকেল পরীক্ষা করার কারণে অনেক ভিকটিম পরীক্ষা করাতে আসেন না। আর এ কারণে অনেকে ধর্ষিত হয়েও বিচার পান না। ভারতে এ পদ্ধতি বাতিল করা হয়েছে। সনাতন পদ্ধতিটি একজন নারীর জন্য চরম বিব্রতকর ও অবমাননাকর।

নতুন ও আধুনিক মানবিক পদ্ধতি প্রবর্তন করার জন্যই আবেদনটি করা হয়, যাতে করে নারী দ্বিতীয়বার অবমাননার শিকার না হন। যাতে করে ধর্ষিতা নারী সঠিক ও মানসম্পন্ন সর্বাধুনিক মানবিক পদ্ধতিতে মেডিক্যাল পরীক্ষার মধ্য দিয়ে সুবিচার পান।

এসব বিষয় নিয়ে ২০১৩ সালের ৮ অক্টোবর মানবাধিকার সংগঠন বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (ব্লাস্ট), আইন ও সালিশকেন্দ্র (আসক), বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ, ব্র্যাক, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন, নারীপক্ষ এবং ডা. রুচিরা তাবাচ্ছুম ও ডা. মোবারক হোসেন খান রিট আবেদনটি দায়ের করেন।  

ওই রিটের ওপর জারি করা রুলের ওপর চূড়ান্ত শুনানি শেষে আদালত রায় ঘোষণা করেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৩২ ঘণ্টা, এপ্রিল ১২, ২০১৮
ইএস/এমএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।