ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

আইন ও আদালত

টাঙ্গাইলে রূপা হত্যা: ভাইসহ ৩ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০১৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৯, ২০১৮
টাঙ্গাইলে রূপা হত্যা: ভাইসহ ৩ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ

টাঙ্গাইল: টাঙ্গাইলের মধুপুরে চলন্ত বাসে ঢাকার আইডিয়াল ল’ কলেজের শিক্ষার্থী রূপা খাতুনকে গণধর্ষণ ও হত্যা মামলায় রূপার ভাইসহ তিনজনের সাক্ষ্যগ্রহণ করেছেন আদালত।

মঙ্গলবার (৯ জানুয়ারি) বিকেলে আদালতে তাদের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়। সাক্ষীরা হলেন- রূপার ভাই হাফিজুল ইসলাম প্রামাণিক, রূপার সহপাঠী আব্দুল বারিক ও রূপার আত্মীয় মমতাজ উদ্দিন।

টাঙ্গাইলের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিশেষ সরকারি কৌসুলি (পিপি) একে এম নাসিমুল আক্তার জানান, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের ভারপ্রাপ্ত দায়িত্বে থাকা প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আবুল মনসুর মিয়ার আদালতে দুপুর ২টা থেকে বিকেল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত তিনজনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়।

হাফিজুল ইসলাম আদালতকে জানান, রূপা বগুড়া থেকে বাসে ওঠার পর তার সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা হয়। তখন রূপা তাকে জানায় ছোঁয়া পরিবহনে ময়মনসিংহের উদ্দেশে রওনা হয়েছে। পরে রাত সাড়ে ১০টার দিকে রূপাকে ফোন দিলে তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

রূপার সহপাঠী আব্দুল বারিক আদালতকে জানান, ঘটনার দিন বগুড়ায় শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষা দিয়ে রূপা ও তিনি ছোঁয়া পরিবহনের বাসে ওঠেন। এলেঙ্গা আসার পর তিনি ওই বাস থেকে নেমে ঢাকার দিকে অন্য একটি বাসে ওঠে রওনা হন। রূপা তখন গাড়িতে একাই ছিলেন। এসময় চালক ও সুপারভাইজারসহ গাড়ির কর্মীদের অনুরোধ করে আসেন যাতে রূপাকে নিরাপাদে পৌঁছে দেয়।

আদালতের কাঠগড়ায় থাকা ছোঁয়া পরিবহনের চালক, সুপারভাইজারসহ পাঁচকর্মীকে শনাক্ত করে বারিক জানান, এরাই সেদিন ওই গাড়িতে ছিলেন।

পরে আসামিদের আইনজীবী দেলোয়ার হোসেন ও শামীম চৌধুরী সাক্ষীদের জেরা করেন।

রোববার (১৪ জানুয়ারি) রূপা হত্যা মামলার আসামিদের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি লিপিবদ্ধকারী চার বিচারিক হাকিমের সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ধার্য করা হয়েছে।

বুধবার (৩ জানুয়ারি) মামলার বাদী মধুপুরের অরণখোলা ফাঁড়ির উপ পরিদর্শক (এসআই) আমিনুল ইসলামের সাক্ষ্যগ্রহণের মধ্য দিয়ে চাঞ্চল্যকর এ মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। মামলায় ১৩ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে।
 
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট বগুড়া থেকে ময়মনসিংহ যাওয়ার পথে রূপা খাতুনকে চলন্ত বাসে ধর্ষণ করে পরিবহন শ্রমিকরা। পরে তাকে হত্যা করে টাঙ্গাইলের মধুপুর বন এলাকায় ফেলে রেখে যায়। পুলিশ ওই রাতেই তার মরদেহ উদ্ধার করে। ময়নাতদন্ত শেষে পরদিন বেওয়ারিশ মরদেহ হিসেবে টাঙ্গাইল কেন্দ্রীয় গোরস্থানে দাফন করা হয়। এ ঘটনায় অরণখোলা পুলিশ ফাঁড়ির উপ পরিদর্শক (এসআই) আমিনুল ইসলাম বাদী হয়ে মধুপুর থানায় মামলা দায়ের করেন।

২৮ আগস্ট রূপার ভাই মধুপুর থানায় এসে মরদেহের ছবি দেখে রূপাকে শনাক্ত করেন। পরে পুলিশ ছোঁয়া পরিবহনের চালক হাবিবুর (৪৫), সুপারভাইজার সফর আলী (৫৫) এবং সহকারী শামীম (২৬), আকরাম (৩৫) ও জাহাঙ্গীরকে (১৯) গ্রেফতার করে। পুলিশের কাছে তারা রূপাকে ধর্ষণ ও হত্যার কথা স্বীকার করে।

২৯ আগস্ট বাসের তিন সহকারী শামীম, আকরাম, জাহাঙ্গীর এবং ৩০ আগস্ট চালক হাবিবুর এবং সুপারভাইজার সফর আলী আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। তারা সবাই এখন টাঙ্গাইল কারাগারে আছে। ৩১ আগস্ট রূপার মরদেহ উত্তোলন করে তার ভাইয়ের কাছে হস্তান্তর করা হয়। পরে তাকে সিরাজগঞ্জের তারাশ উপজেলার নিজ গ্রাম আসানবাড়িতে দাফন করা হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৬১৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৯, ২০১৮
আরবি/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।