ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

আইন ও আদালত

বিনামূল্যে সরকারি আইন সেবা

সমঝোতায় আদায় সাড়ে ৯০ লাখ টাকা

ইলিয়াস সরকার, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০১৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৮, ২০১৬
সমঝোতায় আদায় সাড়ে ৯০ লাখ টাকা

ঢাকা: বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তির (এডিআর) মাধ্যমে আট  মাসে  ক্ষতিগ্রস্ত পক্ষে ৯০ লাখ ৫৩ হাজার ৩শ’ টাকা আদায় করা হয়েছে।

আইন বিচার ও সংসদ বিচারক  মন্ত্রণালয়ের অধীন ‘জাতীয় আইনগত প্রদান সহায়তা সংস্থা’ বিনামূল্যে দুই পক্ষের সমঝোতার মাধ্যমে এ টাকা আদায় করে দিয়েছে।

 

বৃহস্পতিবার (২৮ এপ্রিল) জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান দিবস। এ  উপলক্ষে সংস্থাটির পক্ষ  থেকে করা প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।

২০১৫ সালে আইনগত সহায়তা প্রদান (আইনি পরামর্শ ও বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি) বিধিমালা, ২০১৫ প্রণয়নের পর জুলাই থেকে এ কার্যক্রম শুরু করে ‘জাতীয় আইনগত প্রদান সহায়তা সংস্থা’। এর মধ্যে ৬৩৯টি ঘটনা ছিলো মামলা হওয়ার আগে এবং ৩১১টি ছিলো মামলা হওয়ার পর।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘২০১৫ সালে এডিআর বিধিমালা প্রণীত হওয়ার পর ২০১৫ সালের জুলাই থেকে ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ১৭টি জেলায় জেলা লিগ্যাল এইড অফিসারের মাধ্যমে মাত্র আট মাসে ৬৩৯টি প্রি-কেইস এবং ৩১১ টি পোস্ট-কেইসসহ সর্বমোট ৯৫০টি এডিআর নিষ্পত্তি করা হয়েছে। এর মাধ্যমে ৯০ লাখ ৫৩ হাজার ৩শ’ টাকা টাকা ক্ষতিগ্রস্ত পক্ষে আদায় করা হয়েছে। বর্তমানে জেলা লিগ্যাল এইড অফিসাররা সফলভাবে এডিআর পদ্ধতি প্রয়োগ করছেন’।

জাতীয় আইনগত প্রদান সহায়তা সংস্থার সহকারী পরিচালক  (সিনিয়র সহকারী জজ)  কাজী ইয়াসিন হাবিব বাংলানিউজকে  বলেন, মামলা করে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তির টাকা উদ্ধার করতে দীর্ঘদিন সময় লাগতো। এমনকি এজন্য  হাজার হাজার টাকা খরচও হতো। কিন্তু  উভয়পক্ষের সমঝোতার মাধ্যমে জাতীয় আইনগত প্রদান সহায়তা সংস্থা কোনো খরচ ছাড়াই ক্ষতিগ্রস্তকে টাকা আদায় করে দিচ্ছে।

তিনি বলেন, মামলা করা ছাড়া সমঝোতার মাধ্যমে টাকা আদায় করার কারণে এ আট মাসে  ৬৩৯টি  মামলা কম হলো। না হলে বিশাল মামলাজটে যোগ হতো এ ৬৩৯টি মামলা। আর হয়রানির শিকার থেকে বাঁচলেন ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিরা।

কাজী ইয়াসিন হাবিব বলেন, সারা দেশে আমাদের লিগ্যাল এইড অফিসার আছেন।   তার কাছে আবেদন করে উভয় পক্ষের সমঝোতার মাধ্যমে এ বিষয়ে প্রতিকার পাওয়া যাবে।

সরকারি আইন সহায়তা কার্যক্রম
জাতীয় আইনগত প্রদান সহায়তা সংস্থার পরিচালক (সিনিয়র জেলা জজ) মালিক আব্দুল্লাহ্ আল-আমিনের মতে, সংবিধানের ৩১ অনুচ্ছেদে  ‘আইনের আশ্রয় লাভের অধিকার’কে মৌলিক অধিকার হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। দরিদ্র ও অসহায় বিচারপ্রার্থী জনগণকে সরকারি খরচে আইনগত সহায়তা প্রদানের লক্ষ্যে সরকার ২০০০ সালে ‘আইনগত সহায়তা প্রদান আইন, ২০০০’ প্রণয়ন করে।

এ আইনের আওতায় সরকার ‘জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থা’ প্রতিষ্ঠা করে। দরিদ্র অসহায় মানুষের আইনের আশ্রয় ও প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করার উদ্দেশ্যে এ সংস্থার অধীনে প্রত্যেক জেলায় জেলা ও দায়রা জজকে চেয়ারম্যান করে একটি করে জেলা কমিটি গঠন করা হয়েছে। এছাড়া উপজেলা পর্যায়ে উপজেলা লিগ্যাল এইড কমিটি এবং ইউনিয়ন পর্যায়ে ইউনিয়ন লিগ্যাল এইড কমিটি গঠন করা হয়েছে।

সরকার জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন লিগ্যাল এইড অফিসের মাধ্যমে আর্থিকভাবে অসচ্ছল, সহায়-সম্বলহীন এবং নানাবিধ আর্থ-সামাজিক কারণে বিচার পেতে অসমর্র্থ্য বিচারপ্রার্থী জনগণকে সরকারি খরচে আইনগত সহায়তা প্রদান করছে। বর্তমানে সরকার দ্রুততম সময়ে বিচার প্রাপ্তি নিশ্চিত করার উদ্দেশ্যে এ সংস্থার আওতায় প্রতিষ্ঠিত জেলা লিগ্যাল এইড অফিসের মাধ্যমে বিকল্প বিরোধ পদ্ধতি প্রয়োগ করার কার্যক্রম গ্রহণ করেছে।

বাংলাদেশ সময়: ১০১০ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৮, ২০১৬
ইএস/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।