ঢাকা, শনিবার, ৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

ইসলাম

কাগতিয়া দরবারের সালানা ওরসে ধর্মপ্রাণ মানুষের ঢল

নিউজ ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৪৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৫, ২০১৮
কাগতিয়া দরবারের সালানা ওরসে ধর্মপ্রাণ মানুষের ঢল কাগতিয়া দরবার শরিফের ৬৫তম মিরাজুন্নবী (সা.) ও সালানা ওরস অনুষ্ঠিত

শনিবার (১৪ এপ্রিল) চট্টগ্রাম রাউজান কাগতিয়া আলিয়া গাউছুল আজম দরবার শরিফে ৬৫তম পবিত্র মিরাজুন্নবী (সা.) মাহফিল ও সালানা ওরস অনুষ্ঠিত হয়েছে।

ওরসটি কাগতিয়া দরবারের প্রতিষ্ঠাতা হজরত শায়খ ছৈয়্যদ গাউছুল আজম (রহ.)-এর স্মরণে ঈসালে সওয়াব মাহফিল হিসেবে অনুষ্ঠিত হয়।  

শনিবার ফজরের নামাজের পর খতম, মোরাকাবা, ঈসালে সওয়াব, বিশেষ মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শুরু হয় ওরসের কর্মসূচি।

 

গত বছরের ন্যায় এবারও কাগতিয়া দরবার থেকে পূর্বেই ঘোষণা হয়েছিল, ওরসে কারও কাছ থেকে গরু, মহিষ, ছাগল, টাকা, নজর-নেওয়াজ ইত্যাদি নেওয়া হবে না। চলবে না শরিয়ত পরিপন্থী কোনো কার্যকলাপ। শুধুমাত্র কোরআন-সুন্নাহর পূর্ণ অনুসরণে পালিত হবে বার্ষিক ওরস। তাই কাগতিয়া দরবারের পক্ষ থেকে নেওয়া হয়েছিল কোরআন-সুন্নাহর আলোকে একটানা দিন-রাতব্যাপী ইবাদত-বন্দেগি, খতমে কোরআন, খতমে বোখারি, জিকির-আজকার ও নবীর শানে দরুদপাঠসহ নানা কর্মসূচি।  

বার্ষিক ওরস উপলক্ষে আলোকসজ্জিত করা হয় মসজিদসহ পুরো দরবার। সপ্তাহজুড়ে চট্টগ্রাম শহরের প্রবেশমুখসহ গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় বানানো হয় তোরণ। বিভিন্ন ভবন ও সড়কদ্বীপে শোভা পায় কোরআন-হাদিস ও গাউছুল আজমের বাণী সম্বলিত ফেস্টুন-ব্যানার।  
  
ওরসের দিন ভোর থেকে টুপি মাথায়, তসবিহ হাতে আসতে থাকে দেশ-বিদেশের লাখো ধর্মপরায়ণ মুসলমান।  

জোহরের পর শুরু হয় পবিত্র মিরাজুন্নবী (সা.) ও গাউছুল আজম (রহ.)-এর জীবনী শীর্ষক আলোচনা।  

অশ্রুসিক্ত চোখে বক্তারা মহান মনীষীর স্মৃতিচারণ করেন। আলোচনায় অংশ নেন বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের সহ-সভাপতি প্রফেসর ড. মুহাম্মদ আবুল মনছুর, মুনিরিয়া যুব তবলিগ কমিটি বাংলাদেশ ওলামা পরিষদের সভাপতি মুফতি মুহাম্মদ ইবাহিম হানফি, সচিব মুফতি কাজী মুহাম্মদ আনোয়ারুল আলম ছিদ্দিকি, সহ-এশায়াত সম্পাদক মুহাম্মদ এমদাদুল হক মুনিরি, কাগতিয়া এশাতুল উলুম কামিল এম. এ. মাদরাসার মুহাদ্দিস মুহাম্মদ আশেকুর রহমান, মুহাম্মদ সেকান্দর আলী, মাওলানা মুহাম্মদ আব্দুল হক প্রমুখ।  

এশার নামাজের পর এ মহানীষীর একমাত্র খলিফা আল্লামা অধ্যক্ষ শায়খ ছৈয়্যদ মুহাম্মদ মুনির উল্লাহ আহমদী বক্তব্য রাখেন।  

বক্তব্যে তিনি বলেন, প্রিয় নবী (সা.)-এর মোজেজা মেরাজের ঘটনা সমগ্র মানবজাতির জন্য অতি বরকতময় ও তাৎপর্যপূর্ণ। চৌদ্দশ’ বছর পর ১৪৩৭ হিজরির ২৬ রজব তারিখে আমাদের শোকসাগরে ভাসিয়ে আল্লাহর ডাকে সাড়া দেন মহান মনীষী হজরত গাউছুল আজম (রহ.)।  

তিনি ছিলেন হেদায়েতের এক উজ্জ্বল আলোকবর্তিকা। ইতিহাসে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবেন এই মনীষী। দূরদর্শী আধ্যাত্মিক সাধকের চেষ্টার অগণিত যুবক শান্তি ও কল্যাণের পথে আসে। তিনি চিরদিনের জন্য চলে গেলেও রেখে গেছেন, তার অনুপম আদর্শ। কাগতিয়া দরবার, মাদরাসা ও হিলফুল ফুজুলের আদলে গড়া সংগঠন মুনিরীয়া যুব তবলিগ কমিটি বাংলাদেশ। যা কিয়ামত পর্যন্ত মুসলিম মিল্লাতকে হেদায়েতের পথ দেখাবে, কোরআন-সুন্নাহ অনুযায়ী জীবন গড়তে প্রেরণা জোগাবে।  

রোববার ফজরের নামাজ শেষে আখেরি মোনাজাতের মাধ্যমে শেষ হয় সালানা ওরস। মোনাজাতে দেশ, জাতি ও মুসলিম উম্মাহর সমৃদ্ধি কামনা করা হয়।

বাংলাদেশ সময়: ২০৪২ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৫, ২০১৮
এমএইউ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।