ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫

ইসলাম

উত্তম ও সুন্দর নামাজ হবে ক্ষমার কারণ

মাওলানা আবদুল জাব্বার, অতিথি লেখক, ইসলাম | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪১৫ ঘণ্টা, মে ২, ২০১৭
উত্তম ও সুন্দর নামাজ হবে ক্ষমার কারণ পূর্ণ পবিত্রতা, সঠিক নিয়ম-শৃঙ্খলা ও শুদ্ধ উচ্চারণের চেষ্টা ছাড়া নামাজের কল্যাণ পাওয়া যায় না

কোরআনে কারিমে ইরশাদ হচ্ছে, ‘জমিন ও আসমানের সকল প্রশংসা একমাত্র তারই। অতএব তোমরা আল্লাহর তাসবিহ করো (নামাজ পড়) সন্ধ্যায় (মাগরিব ও এশা) ও প্রত্যুষে (ফজর) এবং বিকেলে (আসর) ও দ্বিপ্রহরে (জোহর)।’ -সূরা রূম: ১৭-১৮

তবে নির্দিষ্ট সময়ে নামাজ আদায় করতে হবে। এ প্রসঙ্গে আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘নিশ্চয়ই নামাজ মুমিনদের ওপর সময়ের ভিত্তিতে ফরজ করা হয়েছে।

’ -সূরা নিসা: ১০৩

আর আল্লাহর নির্দেশিত পন্থায় নামাজের মাধ্যমে মিলবে হেদায়েত। কোরআনে কারিমে এটা বলা হয়েছে এভাবে, ‘কোরআন সেই মুত্তাকিদেরকে মুক্তির পথ দেখাবে যারা জীবনে নামাজ কায়েম করে। ’ -সূরা বাকারা: ২-৩

কোরআনে কারিমে আরও ইরশাদ হয়েছে, ‘এটা হেদায়েত ও সুসংবাদ ওই মুমিনদের জন্য যারা নামাজ কায়েম করে, জাকাত দেয় এবং আখেরাতের ওপর দৃঢ় বিশ্বাস রাখে। ’ -সূরা নামল: ২-৩

নামাজ না পড়ার পরিণতি অত্যন্ত করুণ। বেনামাজির চেহারা মলিন হবে বলে কোরআনে বলা হয়েছে, ‘কিয়ামতের দিন তার চেহারা উদাস ও অন্ধকারাচ্ছন্ন হবে, যে কোরআনকে মেনে নেয়নি এবং নামাজ আদায় করেনি। ’ –সূরা কিয়ামাহ: ৩১

আখেরাতে নামাজের হিসাবই প্রথমে হবে। হজরত আবু হুরায়রা (রা.)-এর বর্ণনায় হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, কিয়ামতে বান্দার আমলের মধ্যে নামাজের হিসাব সর্বপ্রথম নেওয়া হবে। যদি তা সঠিক হয় তাহলে সে সফল হবে, নাজাত পাবে। আর তা যদি খারাপ হয় তাহলে সে ব্যর্থ ও ক্ষতিগ্রস্ত হবে। -তিরমিজি

নামাজ ইসলাম ও কুফরের মধ্যে পার্থক্যকারী। হজরত জাবির (রা.)-এর বর্ণনায় হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘আনুগত্য ও কুফরের মধ্যে পার্থক্য হচ্ছে নামাজ। ’ –সহিহ মুসলিম

উল্লিখিত আয়াত ও হাদিস থেকে আমরা বুঝতে পারি যে, মানবজীবনে নামাজের গুরুত্ব অপরিসীম। কোরআনে কারিমের অন্তত ৮২ জায়গায় নামাজের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে নামাজ পড়ার কথা না বলে সর্বত্রই নামাজ কায়েম করার কথা বলা হয়েছে। এ জন্য নামাজ কায়েমের তাৎপর্যটি বুঝে নেওয়া সবার জন্য একান্ত জরুরি।

কোরআন ও হাদিস ভালোভাবে অধ্যয়ন করলে বুঝা যায় যে, আল্লাহতায়ালা ও তার রাসূল (সা.) নামাজ প্রসঙ্গে যেসব নির্দেশনা দিয়েছেন তার পূর্ণ বাস্তবায়নকেই বলা হয়- নামাজ কায়েম। নির্দেশনাগুলো বিবেচনায় নিলে আমরা বুঝতে পারব যে, অন্তত নিম্নোক্ত ছয়টি কাজ করলে নামাজের উদ্দেশ্য সফল হয় তথা নামাজ কায়েম হয়-

১. জামাতের সঙ্গে নামাজ আদায়।
২. সহি-শুদ্ধভাবে নামাজ আদায়।
৩. ধীরে ধীরে নামাজ আদায়।
৪. বিনীত ও বিনম্রভাবে নামাজ আদায়।
৫. বুঝে বুঝে নামাজ আদায়।
৬. নামাজের শিক্ষার আলোকে জীবন গড়া।

এভাবে আদায়কৃত সুন্দর নামাজ হয়ে উঠতে পারে ক্ষমার কারণ। হাদিসে এ বিষয়ে বলা হয়েছে, হজরত উবায়দা বিন সামেত (রা.)-এর বর্ণনায় হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, আল্লাহ পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ফরজ করেছেন। যে ব্যক্তি সময় অনুযায়ী উত্তমরূপে অজু করে, রুকু-সিজদা পূর্ণ করে, মনোনিবেশসহকারে নামাজ আদায় করবে, তার জন্য আল্লাহর ওয়াদা- তিনি তাকে ক্ষমা করে দেবেন। যে তা করবে না, তার প্রতি আল্লাহর কোনো দায়িত্ব নেই। ইচ্ছা করলে তাকে ক্ষমা করতে পারেন আবার না-ও পারেন। -সুনানে আবু দাউদ

এই হাদিসের আলোকে আলেমরা বলেছেন, পূর্ণ পবিত্রতা, সঠিক নিয়ম-শৃঙ্খলা ও শুদ্ধ উচ্চারণের চেষ্টা ছাড়া নামাজের কল্যাণ পাওয়া যায় না।

ইসলাম বিভাগে লেখা পাঠাতে মেইল করুন: [email protected]

বাংলাদেশ সময়: ২০১৭ ঘণ্টা, মে ০২, ২০১৭
এমএইউ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।