ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

ইসলাম

শান্তিময় সমাজ গঠনে দরকার মিরাজের শিক্ষা বাস্তবায়ন

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৫২ ঘণ্টা, এপ্রিল ২০, ২০১৭
শান্তিময় সমাজ গঠনে দরকার মিরাজের শিক্ষা বাস্তবায়ন নবী মুহাম্মদ (সা.)-এর জীবনের শ্রেষ্ঠ মুজিজা হলো মিরাজ

নবী মুহাম্মদ (সা.)-এর জীবনের শ্রেষ্ঠ মুজিজা বা অলৌকিক ঘটনাগুলোর মধ্যে মিরাজ অন্যতম। মদিনায় হিজরতের এক বছর পূর্বে ৬২২ খ্রিস্টাব্দের রজব মাসের কোনো এক রাতে সশরীরে মিরাজের মাধ্যমে মহান আল্লাহর একান্ত সান্নিধ্য লাভে ধন্য হয়েছিলেন।

পবিত্র কোরআনে মিরাজকে ‘ইসরা’ বলা হয়েছে। মিরাজ থেকে ফিরে আসার পরপরই কল্যাণময় সমাজের রূপরেখা মূলনীতিসহ সূরা বনি ইসরাঈলের ২২ থেকে ৩৮ আয়াতে অবতীর্ণ করা হয়েছে।

সেগুলোকে মিরাজের শিক্ষা বলা হয়। সেখানে বলা হয়েছে- 

১. আল্লাহর সঙ্গে কাউকে শরিক করো না। করলে নিন্দিত ও লাঞ্ছিত হয়ে পড়বে।  

২. পিতা-মাতার সঙ্গে সুন্দর ব্যবহার করো। তাদের একজন অথবা উভয়েই তোমার জীবদ্দশায় বার্ধক্যে উপনীত হলে তাদেরকে ‘উহ’ বলো না এবং তাদেরকে ধমক দিয়ো না; তাদের সঙ্গে সম্মানসূচক কথা বলো।

৩. তোমরা যদি সৎ হয়ে থাকো তবে তিনি (আল্লাহ) তওবাকারীদের জন্য ক্ষমাশীল।

৪. আত্মীয়স্বজন এবং অভাবগ্রস্ত ও মুসাফিরদেরকে তাদের প্রাপ্য প্রদান করবে।  

৫. আল্লাহর অনুগ্রহ লাভের প্রত্যাশায় অভাবীদের সঙ্গে সহজ ও কোমলভাবে কথা বলবে।

৬. ব্যয়ের ক্ষেত্রে বেহিসাবি হয়ো না, আবার কৃপণতাও প্রদর্শন করো না। আল্লাহ যাকে চান রিজিক বাড়িয়ে দেন, যাকে চান কমিয়ে দেন।  

৭. অভাবের ভয়ে তোমাদের সন্তানদের হত্যা করো না। নিশ্চয় এটি মহাপাপ।  

৮. ব্যভিচারের কাছেও যেয়ো না, নিশ্চয়ই এটি নিকৃষ্ট ও গর্হিত কাজ।  

৯. আল্লাহ যার হত্যা নিষিদ্ধ করেছেন তাকে হত্যা করো না। কাউকে অন্যায়ভাবে হত্যা করা হলে তার উত্তরাধিকারীকে আমি এই অধিকার দিয়েছি (চাইলে রক্তের বিনিময় চাইতে পারে), তবে হত্যার ব্যাপারে সে যেন বাড়াবাড়ি না করে।  

১০. এতিম বয়োপ্রাপ্ত না হওয়া পর্যন্ত সদুপায় ছাড়া তার সম্পত্তির নিকটবর্তী হয়ো না এবং প্রতিশ্রুতি পালন করো, নিশ্চয়ই প্রতিশ্রুতি সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হবে।  

১১. মেপে দেওয়ার সময় পূর্ণ মাপে দিবে এবং ওজন করবে সঠিক পাল্লায়। এটিই উত্তম পন্থা।  

১২. যে বিষয়ে তোমার জ্ঞান নেই তার অনুসরণ করো না। নিশ্চয় কান, চোখ, অন্তরের প্রত্যেকটি সম্পর্কেই কৈফিয়ত তলব করা হবে।  

১৩. ভূপৃষ্ঠে দম্ভভরে বিচরণ করো না। এগুলোর মন্দ দিকগুলো তোমার প্রভুর কাছে খুবই ঘৃণ্য।  

মিরাজের শিক্ষা ও বাস্তবতা
উল্লেখিত শিক্ষাগুলো প্রত্যেক মুসলমানের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পরিতাপের বিষয় হলো- বিশ্ব মুসলিম বিশ্ব এসব শিক্ষা থেকে অনেক দূরে।  

মিরাজের মাধ্যমে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ফরজ হয়েছে। মহানবী (সা.) তাই নামাজকে মিরাজের সঙ্গে তুলনা করেছেন। দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য যে, মুসলমানদের অনেকেই আজ বিনা কারণে নামাজ ছেড়ে দিচ্ছে। যা কোনোভাবেই কাম্য নয়।  

মহানবী (সা.) মিরাজের রাতে শুধুমাত্র দ্বীনের জ্ঞান অর্জন করার শিক্ষা পাননি, বরং পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতিও শিক্ষা লাভ করেছিলেন। যা বাস্তবায়নে তিনি একটি আদর্শ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে পেরেছিলেন।  

বর্তমান প্রেক্ষাপট বিবেচনা করলে দেখা যায়, মুসলিম সম্প্রদায়ের অনেকেই আজ অবৈধভাবে গুম, হত্যা, ধর্ষণ-ব্যভিচার, এতিমদের সম্পদ আত্মসাৎ, মাপে কারচুপি ইত্যাদি নানা অপকর্মে লিপ্ত। এসবও কাম্য নয়। আমাদের উচিত, মিরাজের শিক্ষার আলোকে নিজেদের গড়ে তোলা।

ইসলাম বিভাগে লেখা পাঠাতে মেইল করুন: [email protected]

বাংলাদেশ সময়: ২১৫৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ২০, ২০১৭
এমএইউ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।