ঢাকা, বুধবার, ৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ শাওয়াল ১৪৪৫

আন্তর্জাতিক

লাখ লাখ মানুষের বিক্ষোভ-ধর্মঘটে অচল ফ্রান্স

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯২৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৬, ২০১৯
লাখ লাখ মানুষের বিক্ষোভ-ধর্মঘটে অচল ফ্রান্স প্যারিসের রাস্তায় বিক্ষোভ করছেন লাখো মানুষ। ছবি: সংগৃহীত

লাখো মানুষের বিক্ষোভ-ধর্মঘটের কারণে অচল হয়ে গেছে ফ্রান্স। দেশজুড়ে এধরনের ধর্মঘটের ঘটনা ফ্রান্সের গত কয়েক যুগের ইতিহাসে এই প্রথম।

আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম জানায়, দেশটির পেনশন ব্যবস্থা সংস্কারের প্রতিবাদে শুক্রবার (৬ ডিসেম্বর) ধর্মঘটের দ্বিতীয় দিন চলছে।

বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ পরিকল্পিত পেনশন ব্যবস্থা সংস্কার ও চাকরির বয়সসীমা বাড়ানোর প্রতিবাদে ধর্মঘটের প্রথম দিনে রাস্তায় নেমেছিলেন আট লাখেরও বেশি মানুষ।

বিক্ষোভের কারণে দেশটির যোগাযোগ ব্যবস্থা প্রায় অচল হয়ে গেছে।

রাজধানী প্যারিসের বাস ও মেট্রো অপারেটরা জানান, ধর্মঘট চলতে পারে অন্তত সোমবার (৯ ডিসেম্বর) পর্যন্ত।

বৃহস্পতিবার রাজধানী প্যারিসে বিভিন্ন শ্রমিক ইউনিয়নের হাজার হাজার সদস্য রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করেন। ইউনিয়ন নেতাদের দাবি এদিন দেশব্যাপী বিক্ষোভে অংশ নিয়েছেন প্রায় ১৫ লাখ মানুষ।

এসময় পুলিশের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ হয়। প্যারিস ও নঁত শহরে বিক্ষোভকারীদের লক্ষ্য করে দাঙ্গা পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে। পুলিশ জানায়, প্যারিসে ৭১ বিক্ষোভকারীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

নিরাপত্তা ঝুঁকিতে থাকায় ঐতিহ্যবাহী আইফেল টাওয়ারসহ ফ্রান্সের জনপ্রিয় পর্যটন স্থানগুলো দর্শনার্থীদের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়। এছাড়া, শুধু রাজধানী প্যারিসেই ছয় হাজার পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

রেল অপারেটর এসএনসিএফ জানায়, বৃহস্পতিবার ৯০ শতাংশ আঞ্চলিক ট্রেন চলাচল বন্ধ ছিল। প্যারিস মেট্রোতে রোজ ৪০ লাখেরও বেশি মানুষ যাতায়াত করেন। কিন্তু এদিন ১৬টি লাইনের ১১টিই বন্ধ ছিল।

এছাড়া, বৃহস্পতিবার দেশটির অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক কয়েকশ’ ফ্লাইট বাতিল করা হয়। পরবর্তী দিনগুলোতেও আরও ফ্লাইট বাতিলের সম্ভাবনা রয়েছে।

ফ্রান্সের সরকারি প্লেন ব্যবস্থা এয়ার ফ্রান্স জানায়, ধর্মঘটের কারণে অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক রুটের ৩০ শতাংশ ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে। প্লেন ব্যবস্থা ইজিজেট জানায়, ধর্মঘটের কারণে তাদের ২২৩টি অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট বাতিল হয়েছে।

যানবাহন শ্রমিক থেকে শুরু করে শিক্ষক, আইনজীবী, হাসপাতাল ও বিমানবন্দর কর্মীসহ সব ধরনের পেশাজীবী মানুষ বৃহস্পতিবারের ধর্মঘটে অংশ নেন। অনির্দিষ্টকালের এ ধর্মঘট কতোদিন অব্যাহত থাকবে এ ব্যাপারে কিছু বলা হয়নি। ম্যাক্রোঁ পেনশন ব্যবস্থা ও অবসরের সময়সীমা সংস্কার পরিকল্পনা বাতিল না করা পর্যন্ত এ ধর্মঘট চলবে বলে জানান ট্রেড ইউনিয়ন নেতারা।

প্যারিসের এক পরিবহনকর্মী প্যাত্রিক দোস সান্তোস বলেন, আমরা অন্তত এক সপ্তাহ বিক্ষোভ করতে যাচ্ছি। এক সপ্তাহ পর সরকার পিছু হটতে বাধ্য হবে।

১৯৯৫ সালে ফ্রান্সের তৎকালীন সরকার পেনশন ব্যবস্থা সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়ায় দেশজুড়ে তিন সপ্তাহব্যাপী বিক্ষোভ-ধর্মঘট হয়েছিল।

বর্তমানে, ৪০টি ভিন্ন ধরনের অবসরের বয়সসীমা ও পেনশন ব্যবস্থা রয়েছে। ম্যাক্রোঁর মতে, এটি অন্যায্য ও ব্যয়বহুল। তিনি একটিই ব্যবস্থা নেওয়ার পরিকল্পনা করছেন যেখানে পেনশন প্রাপ্ত সবাই সমান সুবিধা পাবেন।  

বাংলাদেশ সময়: ১৪২৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৬, ২০১৯
এফএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।