ঢাকা, শনিবার, ৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

আন্তর্জাতিক

বুথফেরত জরিপই সত্য হচ্ছে?

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৩০ ঘণ্টা, মে ২৩, ২০১৯
বুথফেরত জরিপই সত্য হচ্ছে?

বুথফেরত জরিপই (এক্সিট পোল) যেন সত্যি হতে চলেছে। ভারতের সপ্তদশ জাতীয় সংসদ (লোকসভা) নির্বাচনে জয়ের পথে হাঁটছে ক্ষমতাসীন বিজেপির নেতৃত্বাধীন ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স (এনডিএ)। ৫৪৩টি আসনের মধ্যে সরকার গঠনের জন্য ২৭২ আসন প্রয়োজন হলেও ভোট গণনার প্রথম পর্যায়ে এনডিএ জোটের ৩০০’র বেশি আসনে এগিয়ে থাকার খবর আসছে।

বৃহস্পতিবার (২৩ মে) স্থানীয় সময় সকাল ৮টা থেকে ৪ হাজার কেন্দ্রে একযোগে শুরু হয় এ গণনা। কিছু এলাকায় অবশ্য খানিকটা দেরিতেই ভোট গণনা শুরু হয়।

গণনা শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই জানিয়ে দেওয়া হচ্ছে ফলাফল।

স্থানীয় সময় পৌনে ১০টা পর্যন্ত এনডিটিভির খবরে বলা হয়, বিজেপি জোট ৩২৯ আসনে এগিয়ে রয়েছে। কংগ্রেসের নেতৃত্বাধীন ইউপিএ জোট এগিয়ে রয়েছে ১০৪ আসনে। এছাড়া অন্যান্য দলগুলো এগিয়ে ৯৪ আসনে। টাইমস অব ইন্ডিয়ার খবরে জানানো হয়, এনডিএ জোট ২৭৬টি আসনে এগিয়ে রয়েছে, আর ইউপিএ জোট এগিয়ে রয়েছে ৯৬টি আসনে।

তবে কয়েক দফায় ভোট গণনা হবে বলে চূড়ান্ত ফল পেতে আরও কিছু সময় অপেক্ষা করতে হবে বলে জানাচ্ছে সংবাদমাধ্যম।

গত ১১ এপ্রিল থেকে শুরু হয়ে ১৯ মে পর্যন্ত ৭ ধাপে অনুষ্ঠিত হয় নির্বাচন। ২৯টি রাজ্য ও ৭টি কেন্দ্রীয় অঞ্চলের ৫৪২টি আসনে এ ভোটের আয়োজনে ভারতজুড়ে বিরাজ করে উৎসবের আমেজ। ৫৪৩টি আসনে ভোট হওয়ার কথা থাকলেও ভেলোর আসনে নির্বাচন স্থগিত করা হয়।

প্রায় ১৩২ কোটি জনগোষ্ঠীর ভারতে এবার ভোটার ছিলেন প্রায় ৯০০ মিলিয়ন বা ৯০ কোটি। ভোটকেন্দ্র ছিল ১০ লাখেরও বেশি। ২০১৪ সালের নির্বাচনে ভোট দিয়েছিলেন ৮১ কোটি ৪৫ লাখ ভোটার। এবার নতুন অর্থাৎ ১৮ থেকে ১৯ বছর বয়সী ভোটার ছিলেন প্রায় দেড় কোটি। ২০১২ সাল থেকে ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ পেয়ে আসা তৃতীয় লিঙ্গের জনগোষ্ঠী থেকে এবার ভোটার ছিলেন ৩৮ হাজার ৩২৫ জন। নির্বাচন কমিশনের হিসাবে, সব মিলিয়ে এবার ভোট পড়েছে ৬৭ দশমিক ১১ শতাংশ।

ভারতের সংসদ দ্বিকক্ষ-বিশিষ্ট। এরমধ্যে একটি হলো লোকসভা, এটি নিম্নকক্ষ; আরেকটি রাজ্যসভা, সেটি উচ্চকক্ষ। লোকসভায় মোট আসন ৫৪৫। এর মধ্যে ৫৪৩ আসনে সরাসরি নির্বাচন হয়। বাকি দু’টি আসনে অ্যাংলো-ইন্ডিয়ান প্রতিনিধিকে মনোনীত করে আনা হয়। সরকার গঠনের জন্য লোকসভায় ২৭২ আসনের প্রয়োজন। রাজ্যসভার সদস্য সংখ্যা ২৫০। এরা রাজ্য বা অঞ্চলগুলোর বিধানসভার সদস্যদের ভোটে রাজ্যসভায় আসেন।

এবার নির্বাচনের সপ্তম ও শেষ দফা ভোটগ্রহণ শেষ হওয়ার পরপরই বিভিন্ন সংস্থা জানাতে থাকে বুথফেরত জরিপের (এক্সিট পোল) ফলাফল। বেশিরভাগ সংস্থার জরিপ মতে, এবারও নরেন্দ্র মোদীর দল বিজেপি প্রায় ৩০০ আসন পেয়ে সরকার গঠন করতে চলেছে। অর্থাৎ ফের প্রধানমন্ত্রী হচ্ছেন গুজরাটের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী।  

যদিও বুথফেরত জরিপের ফলাফল প্রত্যাখ্যান করে প্রধান বিরোধীদল কংগ্রেস এবং তৃণমূল কংগ্রেসের নেতৃত্বাধীন আঞ্চলিক দলগুলোর জোট ফেডারেল ফ্রন্ট। কংগ্রেসের সভাপতি রাহুল গান্ধী সরাসরিই জরিপগুলোকে ‘ভুয়া’ আখ্যা দিয়েছেন। কিন্তু এখন ভোট গণনার চিত্র বলছে, বুথফেরত জরিপই যেন সত্য হতে চলেছে।

২০১৪ সালে অনুষ্ঠিত ষোড়শ লোকসভা নির্বাচনে নজিরবিহীন জয় পেয়ে সরকার গড়ে নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বাধীন বিজেপির জোট ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স। ১৯৮৪ সালের পর প্রথমবারের মতো একক দল হিসেবে সরকার গঠনের মতো আসন পেয়ে যায় বিজেপিই। পদ্মফুল ফুটেছিল ২৮২ আসনে। বিজেপি জোটের অন্য দলগুলো পেয়েছিল ৫৫ আসন। অন্যদিকে আগের সরকার চালানো সোনিয়া গান্ধীর নেতৃত্বাধীন ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল কংগ্রেস পায় মাত্র ৪৪টি আসন। তাদের জোটের দলগুলো পায় ১৫ আসন। এছাড়া পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন তৃণমূল কংগ্রেস পায় ৩৪ আসন। তামিলনাড়ুর প্রয়াত মুখ্যমন্ত্রী জয়ললিতার দল এআইএডিএমকে পায় ৩৭ আসন।

বাংলাদেশ সময়: ১০২৩ ঘণ্টা, মে ২৩, ২০১৯
এইচএ/

** জয় উদযাপনে বিজেপির লাড্ডু কেক
** ভারতে চলছে নির্বাচনের ভোট গণনা
** আগামী ৫ বছর কারা চালাবে ভারত?
** ‘ভুয়া জরিপে’ নিরাশ হবেন না, সমর্থকদের বললেন রাহুল

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।