ঢাকা, শনিবার, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

আন্তর্জাতিক

গোটা বিশ্বের চোখ ট্রাম্প-কিম সিঙ্গাপুর বৈঠকে

টিটু আহমেদ, নিউজরুম এডিটর | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩১৫ ঘণ্টা, জুন ১১, ২০১৮
গোটা বিশ্বের চোখ ট্রাম্প-কিম সিঙ্গাপুর বৈঠকে চাঙ্গি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ট্রাম্প ও কিম। ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা: মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও উত্তর কোরিয়া নেতা কিম জং-উনের বহুল প্রত্যাশিত বৈঠক হতে যাচ্ছে মঙ্গলবার (১২ জুন)। দুই দেশের নানা নাটকীয়তার পর ঐতিহাসিক এ বৈঠকটি তাদের মধ্যে নতুন সম্পর্ক সৃষ্টি করবে, না কি কয়েক দশক ধরে চলমান বিরোধ-বৈরিতা রয়েই যাবে এ নিয়ে উদ্বিগ্ন গোটা বিশ্ব। সারাবিশ্বের মানুষের আগ্রহের কেন্দ্র এখন সিঙ্গাপুর।

এরই মধ্যে বৈঠকে অংশ নিতে সিঙ্গাপুরে পৌঁছে গেছেন ট্রাম্প ও কিম। স্থানীয় সময় রোববার (১০ জুন) রাত সাড়ে ৮টার দিকে সফরসঙ্গীদের নিয়ে কানাডা থেকে সিঙ্গাপুরের চাঙ্গি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছেন ট্রাম্প।

সিঙ্গাপুরের সাংগ্রি লা হোটেলে উঠেছেন বিশ্বের সবচে ক্ষমতাশালী রাষ্ট্রের কর্ণধার। ট্রাম্পের আগেই সিঙ্গাপুরে উড়ে গেছেন কিম। ব্যক্তিগত কার্গো প্লেনে চেপে ওইদিনই সিঙ্গাপুর সিটিতে পৌঁছান তিনি।

সিঙ্গাপুরের দক্ষিণাংশে বিখ্যাত বিনোদন স্পট সামুদ্রিক দ্বীপ সেন্তোসাতে বৈঠকে মুখোমুখি হবেন এ-দুই নেতা। এটাই হবে যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষমতাসীন কোনো প্রেসিডেন্টের সঙ্গে উত্তর কোরিয়ার ক্ষমতাসীন কোনো নেতার প্রথম ঐতিহাসিক বৈঠক। এ থেকে দীর্ঘদিনের বিরোধিতার অবসানও হতে পারে।  

এদিকে, প্রায় দেড় বছর ধরে ট্রাম্প-কিমের মধ্যে বেশ উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় চলছিল। দুই দেশের মধ্যে চলছিল হুমকি-ধমকি। দুই তরফেই চলছিল সশস্ত্র ক্ষমতা প্রদর্শনের আস্ফালন। ফলে গোটা বিশ্ব অখণ্ড মনোযোগ আর উদ্বেগ নিয়ে  লক্ষ্য করছিল দুই মহাবলীর গতিবিধি। অবশেষে আস্ফালনের বারুদ মিইয়ে এসেছে, বহুযুগের জগদ্দল বরফ গলা শুরু হয়েছে। হিংসার বিপরীতে উঁকি দিয়েছে শান্তির আশাবাদ।  

এই আশাবাদকে একটা ইতিবাচক সফলতা দিতেই গুরুত্বপূর্ণ এ বৈঠক। বৈঠকটি ইতিবাচক, নাকি হবে নেতিবাচক সেটা নির্ভর করবে দু’পক্ষের সদিচ্ছার ওপর, কূটনৈতিক সক্ষমতা ও নমনীয়তার ওপর।  

 উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম বলছে, ট্রাম্প-কিমের এ বৈঠকের মধ্য দিয়ে চিরবৈরী দেশ যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একটি নতুন সম্পর্ক স্থাপনের সম্ভাবনা দেখতে পেয়েছে তারা। ট্রাম্প ও কিম।  ছবি: সংগৃহীত বৈঠক নিয়ে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেন, এ নিয়ে আমার অনুভূতি চমৎকার।  

তার আশা, এ বৈঠক কিমকে তার পরমাণু অস্ত্র পরীক্ষা ও ব্যবহার থেকে সরিয়ে আনবে।

সোমবার সকালে ট্রাম্প তার এক টুইটে বলেছেন, বৈঠক ঘিরে এশিয়ার দেশ সিঙ্গাপুরে উত্তেজনা বিরাজ করছে। এটা খুব ভালো।

তবে এর আগেও এ বৈঠক নিয়ে নিজের আশাবাদিতার কথা জানিয়েছিলেন ট্রাম্প।  

কিমও এ বৈঠক থেকে অনেক ইতিবাচক ফল আশা করছেন বলে জানিয়েছিল বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম।

এ বৈঠকে কোরীয় উপদ্বীপকে পারমাণবিক অস্ত্রমুক্ত করা, চিরবৈরী দেশ যুক্তরাষ্ট্র ও প্রতিবেশী দেশ দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে উত্তর কোরিয়ার বিরোধ নিষ্পত্তি ও শান্তি স্থাপন---এসবই আলোচনায় স্থান পাবে।  

এর আগে জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের সঙ্গে আলোচনা শেষে ট্রাম্প জানিয়েছিলেন, বৈঠকটি যদি ইতিবাচক হয়, তবে কিমকে যুক্তরাষ্ট্র সফরে দাওয়াত দিতে পারেন তিনি।

ট্রাম্প এও জানিয়েছিলেন, উত্তর কোরিয়ার উদ্দেশ্য বা লক্ষ্য বুঝতে এ বৈঠকটি অল্প সময়। এসব বুঝতে হলে আরও বেশি সময় দরকার। তাই নির্দিষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছাতে এ বৈঠকে সব সিদ্ধান্ত নাও আসতে পারে। শুধু ইতিবাচক হলেই ভালো। আর বৈঠক যদি ঠিকমত না হয়, সেক্ষেত্রে উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে অনেক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে পারেন বলে উল্লেখ করেছিলেন ট্রাম্প। এজন্য তিনি প্রস্তুতও আছেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৯০৮ ঘণ্টা, জুন ১১, ২০১৮
টিএ/জেএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।