ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

আন্তর্জাতিক

নিজের শহরেই আঘাত হানল উ.কোরীয় মিসাইল?

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৫৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৪, ২০১৮
নিজের শহরেই আঘাত হানল উ.কোরীয় মিসাইল? উত্তর কোরীয় নেতা কিম জং উন মাঝারি পাল্লার হুয়াসং-১২ মিসাইলের উৎক্ষেপণ দেখতে একটি সামরিক উৎক্ষেপণস্থলে হাজির হয়েছেন। ফাইল ছবি

ঢাকা: উত্তর কোরিয়ার মাঝারি পাল্লার একটি ক্ষেপণাস্ত্র লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়ে নিজেদের শহরেই আঘাত হেনেছে। উৎক্ষেপণের মিনিট কয়েকের মধ্যেই এটি আকাশে বিস্ফোরিত হয়ে রাজধানী পিয়ংইয়ংয়ের পাশের শহর তকচনের ঘনবসতিপূর্ণ একটি এলাকার ওপর গিয়ে পড়ে।

টোকিওভিত্তিক নিউজ ম্যাগাজিন ‘দ্য ডিপ্লোম্যাট’ উত্তর কোরিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি ও এর বিভিন্ন স্থাপনা সম্পর্কে সবিশেষ ওয়াকেবহাল যুক্তরাষ্ট্র সরকারের একটি সূত্রের বরাত দিয়ে এই দাবি করেছে।

দ্য ডিপ্লোম্যাট-এর প্রতিবেদনে বলা হয়, উত্তর কোরীয় কর্তৃপক্ষ ২০১৭ সালের ২৯ এপ্রিল তারিখে সংঘটিত এই দুর্ঘটনার খবরটি বহির্বিশ্বের কাছে এতোদিন আড়াল করে রেখেছিল।

এর আগেও তারা এমনটি করেছে। কিন্তু দেরিতে ২৯ এপ্রিলের দুর্ঘটনার খবরটি ফাঁস হয়ে পড়েছে।

দ্য ডিপ্লোম্যাটের মতে, লক্ষ্যভ্রষ্ট মিসাইলটি ২ লাখ ৪০ হাজার জনসংখ্যা অধ্যুষিত তকচন শহরের একটি কারখানা ভবনের ওপর গিয়ে পড়ে। এলাকাটি ঘনবসতিপূর্ণ হওয়ায় তাতে ব্যাপক প্রাণহানি ও ক্ষয়ক্ষতি হয়ে থাকতে পারে। তবে এ বিষয়ে সঠিক সংখ্যা বা পরিমাণ জানা সম্ভব হয়নি।

লক্ষ্যভ্রষ্ট মিসাইলটি তরল জ্বালানিতে পরিচালিত হুয়াসং-১২/কেএন১৭ মিসাইল। সঠিকভাবে লক্ষ্যবস্তুর দিকে উড়ে যাওয়ার জন্য উৎক্ষেপণের পর মিসাইলটির ৭০ কিলোমিটারের বেশি উঁচুতে ওঠার দরকার চিল। কিন্তু এই উচ্চতায় ওঠার আগেই এটি আকাশে বিস্ফোরিত হয়। মিসাইলটির প্রথম স্তরের ইঞ্জিনটি বন্ধ বা বিকল হয়ে যাওয়াতেই এমনটি ঘটেছে। এর কারণ মিসাইলটির যে পরিমাণ তরল জ্বালানি পোড়ানোর কথা, তা করতে ব্যর্থ হওয়ায় প্রথম স্তরের ইঞ্জিন আর কাজ করেনি।    

হুয়াসং-১২’র মতো তরল জ্বালানির মাঝারি পাল্লার মিসাইলের ধ্বংস ও বিস্ফোরণক্ষমতা ভযাবহ। এর কারণ এই মিসাইল হাইপারগোলিক প্রপেলান্ট ও অক্সিডাইজার ব্যবহার করা হয়ে থাকে।

ক্ষয়ক্ষতি ব্যাপক হলেও সে তুলনায় প্রাণহানি হয়েছে কিনা সে ব্যাপারে ভিন্নমতও আছে। বলা হচ্ছে, জায়গাটি ঘনবসতিপূর্ণ হলেও প্রাণহানি হয়তো খুব বেশি হয়নি। কেননা মিসাইলটি যখন বিশালকায় ভবনটির ওপর আছড়ে পড়ে, তার অনেক আগেই অফিস বা কারখানা ছুটি হয়ে গেছে।

দ্য ডিপ্লোম্যাটের দাবি, এরকম দুর্ঘটনা আরও ঘটে থাকতে পারে। কিন্তু কঠোর বিধিনিষেধের কারণে দেশটির ভেতরের অনেক খবরই বাইরের পৃথিবীতে যায় না।

এরকম দুর্ঘটনা সত্ত্বেও উত্তর কোরিয়ার মিসাইল কার্যক্রমের সফলতাও অনেক। সাম্প্রতিককালে দেশটি মাঝারি ও দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণে ঈর্ষা করার মতো সফলতা দেখিয়েছে। উত্তর কোরিয়ার দাবি, তাদের নতুন প্রজন্মের দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র সমুদ্র পেরিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দূরবর্তী শহরগুলোতেও আঘাত হানতে সক্ষম।

এছাড়া দেশটি এরই মধ্যে পারমাণবিক ওয়ারহেডযুক্ত দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র উদ্ভাবন ও উৎক্ষেপণে সফলতা দেখিয়েছে।

এ কারণে প্রতিবেশী দুই বৈরি দেশ দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপান বরাবরের মতোই উদ্বিগ্ন। এ নিয়ে উত্তর কোরীয় নেতা কিম জং উনের সঙ্গে স্বভাব-রাগী মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কথার লড়াই লড়ছে। তারা পরস্পরকে ‘আমার টেবিলে নিউক্লিয়ার বাটন আছে’, ‘আমরা হাতে আরও বড় বাটন’ আছে বলে হুমকি ও পাল্টা হুমকি দিয়ে যাচ্ছেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৪৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৪, ২০১৮
জেএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।