ঢাকা, শনিবার, ৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

আন্তর্জাতিক

‘পড়শীসুলভ আচরণের’ ওপর জোর দিলেন মিয়ানমারের মন্ত্রী

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭৩২ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৯, ২০১৭
‘পড়শীসুলভ আচরণের’ ওপর জোর দিলেন মিয়ানমারের মন্ত্রী মিয়ানমার সেনাবাহিনীর জ্বালিয়ে দেওয়া একটি রোহিঙ্গা জনপদ। ছবি: সংগৃহীত

রোহিঙ্গা সংকটের সমাধানে ঢাকা বারবার নেপিদোর সহযোগিতা চাইলেও এখন উল্টো বাংলাদেশকে উদ্দেশ্য করে মিয়ানমারের এক মন্ত্রী বলেছেন, পড়শী দেশগুলোর মধ্যে ভালো সম্পর্ক থাকা উচিত।

সংকটের জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়েরই অভিযুক্ত মিয়ানমার সরকারের মুখপাত্র এর আগে অত্যন্ত হাস্যকরভাবে বলেছিলেন, নেপিদো সংকটের শিগগির সমাধান চাইলেও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের তহবিল আসছে বলে ঢাকা-ই এ ব্যাপারে গড়িমসি করছে।

শনিবার (১৮ নভেম্বর) একটি সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে কথা বলছিলেন মিয়ানমারের তথ্যমন্ত্রী ড. পে মিন্ত।

রাজধানী নেপিদোতে আগামী ২০-২১ নভেম্বর এশিয়া-ইউরোপ বৈঠক বা আসেম সম্মেলনের আগে তিনি এ সাক্ষাৎকার দিলেন।

বাংলাদেশকে সব ক্ষেত্রেই মিয়ানমার সহযোগিতা করতে ইচ্ছুক জানিয়ে দেশটির তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এটাই দরকার...এটাই অপরিহার্য...কারণ আমরা প্রতিবেশী। আমাদের মধ্যে ভালো সম্পর্ক থাকতে হবে। ’

এক প্রশ্নের জবাবে লেখক থেকে মন্ত্রী হওয়া ড. মিন্ত বলেন, দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক জোরদারে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে সব পর্যায়ে ঘন ঘন বৈঠক হওয়া দরকার।

জনগণের মধ্যে যোগাযোগ ও সাংস্কৃতিক মেলবন্ধন তৈরির ওপর জোর দিয়ে মিয়ানমারের তথ্যমন্ত্রী বলেন, আমাদের আরও কার্যকরভাবে পরস্পরকে পরস্পরের জন্য প্রাসঙ্গিক করা দরকার।

বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, এই আসেম বৈঠকের সদ্ব্যবহার করতে চায় ঢাকা। রোহিঙ্গা সংকটের শিগগির সমাধানের জন্য এখানে চীন-জাপানসহ সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর সহায়তায় মিয়ানমারের ওপর চাপ সৃষ্টি করা হবে। রোহিঙ্গাদের জন্য তাদের স্বদেশে ফেরত নেওয়া হয়, সেজন্য মিয়ানমারকে সংলাপে বসতে বিশ্ব সম্প্রদায়ের মাধ্যমে আহ্বান করা হবে।

গত ৩১ অক্টোবর নেপিদোতে মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সেলর (কার্যত সরকারপ্রধান) অং সান সু চি’র মুখপাত্র জও হতাই সাংবাদিকদের কাছে দাবি করেন,  ১৯৯২ সালে বাংলাদেশের সঙ্গে স্বাক্ষরিত চুক্তি অনুযায়ীই রোহিঙ্গাদের স্বদেশে ফেরানোর প্রক্রিয়া যেকোনো সময় শুরু করতে প্রস্তুত মিয়ানমার। কিন্তু অন্যপক্ষ (বাংলাদেশ) তা এখনও গ্রহণ করছে না। সেজন্য প্রক্রিয়াটা বিলম্বিত হচ্ছে। রোহিঙ্গা ফেরানোর প্রক্রিয়া বিলম্বিত হওয়ার পেছনে এটাও একটা কারণ। তারা ৪০ কোটি ডলার পেয়েছে। তাদের এই বিপুল অংকের অর্থপ্রাপ্তিতে শরণার্থী প্রত্যাবাসন কার্যক্রমের বিলম্ব হয় কি-না, তা নিয়ে শঙ্কিত আমরা।

গত ২৫ আগস্ট মিয়ানমার সেনাবাহিনী রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে উচ্ছেদে রাখাইনে নিধনযজ্ঞ শুরু করে। এতে এখন পর্যন্ত সোয়া ৬ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। জাতিসংঘ মিয়ানমার সেনাবাহিনীর এই অভিযানকে ‘জাতিগত নিধনযজ্ঞ’ বলে অভিহিত করেছে। রোহিঙ্গাদের স্বদেশে ফিরিয়ে সংকটের শিগগির সমাধানে যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ বিশ্ব সম্প্রদায় মিয়ানমারের ওপর চাপ সৃষ্টি করে আসছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৩২৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৯, ২০১৭
এইচএ/

** কক্সবাজার গেলেন বিদেশি পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।