ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৭ রমজান ১৪৪৫

আন্তর্জাতিক

মুগাবে ‘গৃহবন্দি’, দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন স্ত্রী গ্রেস!

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৫২ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৫, ২০১৭
মুগাবে ‘গৃহবন্দি’, দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন স্ত্রী গ্রেস! রবার্ট মুগাবের সঙ্গে তার স্ত্রী গ্রেস (ফাইল ফটো)

সেনাবাহিনীর ‘ক্ষমতা’ দখলের মুখে জিম্বাবুয়ের প্রেসিডেন্ট রবার্ট মুগাবেকে ‘গৃহবন্দি দশায়’ রেখে দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন তার স্ত্রী গ্রেস মুগাবে। তবে কীভাবে তিনি পালিয়েছেন সে বিষয়টি এখনও স্পষ্ট জানা যায়নি।

বুধবার (১৫ নভেম্বর) স্থানীয় সময় সকালে সেনাবাহিনী রাষ্ট্রের ক্ষমতা দখলের পর রাজধানী হারারেতে প্রেসিডেন্টের বাসভবনে মুগাবেকে রেখে প্রতিবেশী দেশ নামিবিয়ায় পালিয়ে যান গ্রেস।

এ বিষয়ে সেনাবাহিনী কিংবা নামিবিয়ার সরকার কিছু বলেনি।

তবে দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট জ্যাকব জুমা বলেছেন, তিনি মুগাবের সঙ্গে কথা বলেছেন। নিজের বাসভবনে আটকা পড়েছেন মুগাবে, তবে ভালো আছেন তিনি।

সরকারের মধ্যে অস্থিরতায় সোমবার (১৩ নভেম্বর) সেনাপ্রধান জেনারেল কনস্ট্যান্টিনো চুইঙ্গা বলেন, সংকট সমাধানে সেনাবাহিনী হস্তক্ষেপ করতে প্রস্তুত। তার বক্তব্যের পর মঙ্গলবার (১৪ নভেম্বর) রাস্তায় নামে সেনাবাহিনীর চারটি ট্যাংক।  

এরপর বুধবার (১৫ নভেম্বর) সকাল থেকেই রাস্তায় রাস্তায় দেখা যায় সেনাটহল। সেনাবাহিনী ঘোষণা দেয়, তারা রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারমাধ্যমসহ বিভিন্ন কার্যালয় দখলে নিয়েছে। তবে এটা কোনো অভ্যুত্থান (ক্যু) নয়।  

এর মধ্যেই সেনাবাহিনীর একজন মুখপাত্র টেলিভিশন সম্প্রচারিত ভাষণে বলেন, সেনাবাহিনী অভ্যুত্থান করেনি, কেবল প্রেসিডেন্ট মুগাবের চারপাশের অপরাধীদের সরিয়ে দিচ্ছে। অভিযান শেষ হলেই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যাবে। হারারে’র রাস্তায় সেনাবাহিনীর ট্যাংক টহলকিন্তু কয়েকঘণ্টা পরই জানু-পিএফ’র টুইটার অ্যাকাউন্টে বলা হয়, সেনাবাহিনী প্রেসিডেন্ট ‍মুগাবে ও তার স্ত্রী গ্রেসকে আটক অবস্থায় রেখেছে। একইসঙ্গে বহিষ্কৃত ভাইস প্রেসিডেন্ট নানগাগবাকে অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম জানায়, এসব নানামুখী খবরের মধ্যে রাজধানী হারারের রাস্তায় দেখা যাচ্ছে সেনাবাহিনীর সাঁজোয়া যানের টহল। গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলোতে সেনাবাহিনী ট্রাফিক নির্দেশনায়ও নেমে গেছে। কার্যত ক্ষমতাই দখলে নিয়েছে সশস্ত্র বাহিনী।

জিম্বাবুয়ের রাজনীতিতে এই টানাপোড়েন শুরু হয় গত সপ্তাহে ভাইস প্রেসিডেন্ট নানগাগবাকে বহিষ্কার করা হলে। সেনাবাহিনীর ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত ৭৫ বছর বয়সী নানগাগবাকে ৯৩ বছর বয়সী মুগাবের উত্তরসূরী ধরা হচ্ছিল। কিন্তু প্রেসিডেন্টের ৫২ বছর বয়সী স্ত্রী গ্রেসও রাজনীতির ময়দানে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে নানগাগবাকে বহিষ্কারের আহ্বান জানালে তা বাস্তবায়ন করে ফেলেন মুগাবে। আগামী বছর দেশটিতে ভোট হওয়ার কথা বিধায় এই সিদ্ধান্তকে ভালোভাবে নেয়নি নানগাগবার সমর্থক সেনাবাহিনী।

এক রক্ষক্ষয়ী গৃহযুদ্ধের পর ১৯৮০ সালে শ্বেতাঙ্গদের শাসন শেষ হলে মুগাবে জিম্বাবুয়ের ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হন। ক’বছর প্রধানমন্ত্রী থাকলেও ১৯৮৭ থেকে তিনি আফ্রিকার দেশটির প্রেসিডেন্ট পদে দায়িত্ব পালন করছিলেন।  

বাংলাদেশ সময়: ১৮৩৯ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৫, ২০১৭
এইচএ/

আরও পড়ুন
** জিম্বাবুয়ের নিয়ন্ত্রণে সেনাবাহিনী, ক্যু’র অভিযোগ নাকচ
** মুগাবে-সেনাপ্রধান পাল্টা বক্তব্য, রাস্তায় জলপাই ট্যাংক
** ‘অবাধ্য’ ভাইস প্রেসিডেন্টকে বহিষ্কার করলেন মুগাবে
** মুগাবে আটক, নানগাগবাকে প্রেসিডেন্ট ঘোষণা সেনাবাহিনীর!

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।